Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪
Editorial News

কাশ্মীর পরে হবে, আগে নিজেকে বাঁচান ইমরান

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এ বার পদক্ষেপ করেছে ‘ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’-এর (এফএটিএফ) এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপ। পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাস যে আশ্রয় পাচ্ছে এবং লালিত-পালিত হচ্ছে, এই আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে তা প্রতিষ্ঠিত সত্য।

ইমরান খান।—ছবি রয়টার্স।

ইমরান খান।—ছবি রয়টার্স।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৯ ০০:০৪
Share: Save:

টনক আর নড়বে কবে? দেশে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের জন্য সুবন্দোবস্ত করার সামর্থ্য নেই পাকিস্তানের, দেশের মাটিতে সুশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা কায়েম রাখার সক্ষমতা নেই পাক সরকারের, কিন্তু কাশ্মীরের ‘ভালো-মন্দ’ নিয়ে অশ্রু বিস্তর। সবই কুম্ভীরাশ্রু, আসলে সন্ত্রাসবাদের আশ্রয়দাতা রাষ্ট্র পাকিস্তান— এই তত্ত্ব আরও বেশি করে প্রতিষ্ঠিত হল। আরও একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করল।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এ বার পদক্ষেপ করেছে ‘ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’-এর (এফএটিএফ) এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপ। পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাস যে আশ্রয় পাচ্ছে এবং লালিত-পালিত হচ্ছে, এই আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে তা প্রতিষ্ঠিত সত্য। এ হেন কোনও রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক স্তরের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা বা ঋণ পেতে দেওয়া যাবে না— সংস্থার নীতি এমনই। তাই বছরের গোড়াতেই হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল পাকিস্তানকে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ পদক্ষেপই পাকিস্তান করেনি। তাই এ বার কালো তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হল ইমরান খানের দেশকে। আগামী এক মাসের মধ্যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ না করতে পারলে বড়সড় অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পাকিস্তানকে পড়তে হবে।

নিষেধাজ্ঞা এমনিতেই বিস্তর রয়েছে পাকিস্তানকে ঘিরে। পরিস্থিতি এমনই যে, দেশে একটা সুষ্ঠু অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে দাঁড় করিয়ে রাখাই দুষ্কর হয়ে পড়েছে পাক সরকারের পক্ষে। এর উপরে যদি এফএটিএফ নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তা হলে বিশ্ব ব্যঙ্ক বা আইএমএফ বা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যঙ্ক থেকে ঋণ পাওয়ার রাস্তাও বন্ধ হয়ে যাবে। শমন যে শিয়রে দাড়িয়ে রয়েছে, ইমরান খান তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করতে না পারলে নিষেধাজ্ঞা অবধারিত।

ম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

অর্থাৎ আগামী এক মাস সব ভুলে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ময়দানে নামতে হবে পাকিস্তানের সরকার তথা সেনাবাহিনী কে। মনে রাখা দরকার, হাতে সময় মাত্র এক মাস। দশকের পর দশক ধরে সন্ত্রাসের কারখানা হিসেবে যে কালি নিজের গায়ে পাকিস্তান মেখেছে, তার অনেকখানি মুছে ফেলার জন্য মাত্র এক মাস সময় রয়েছে আর হাতে। না হলে আরও অনেকগুলো বড় বড় অর্থনৈতিক দরজা মুখের উপর বন্ধ হয়ে যাবে। নিজেদের নাগরিকদের স্বার্থেই অতএব আগামী এক মাসে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মৌলিক পদক্ষেপ পাক রাষ্ট্রকে করতে হবে। জম্মু-কাশ্মীরের নাগরিকদের নিয়ে ভাবার অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে কি না, সে বিতর্কে পরে অংশ নেওয়া যাবে। যে নাগরিকদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখার দায় পাকিস্তানের উপরে এই মূহুর্তে রয়েছে, ইমরান খান আগে তাঁদের কথা ভাবুন।

আরও পড়ুন: ফের বিপাকে ইমরান, সন্ত্রাস দমনে ব্যর্থ পাকিস্তান কালো তালিকাভুক্ত আন্তর্জাতিক স্তরে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE