Advertisement
০৫ মে ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

অসংখ্য ভিক্ষাজীবী মানুষ, যাঁরা রাস্তার ধারে বা ফুটপাতে শুয়ে থাকেন, তাঁদেরও এই সময় ঝরে যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

একটুখানি উষ্ণতা

শীত আসছে। তার ধাক্কায় হলুদ হতে শুরু করছে অনেক সবুজ পাতা। এর পর, টুপটাপ ঝরে পড়ার পালা। ঠিক তেমনই, অসংখ্য ভিক্ষাজীবী মানুষ, যাঁরা রাস্তার ধারে বা ফুটপাতে শুয়ে থাকেন, তাঁদেরও এই সময় ঝরে যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। অথচ একটু উষ্ণতা পেলে, ওই সব অসহায় মানুষেরা আরও একটা বসন্ত, আরও একটা শরৎ দেখার সুযোগ পেত। এ ব্যাপারে পুরসভা বা পঞ্চায়েত কোনও উদ্যোগ নিলে, কয়েকটা কম্বল, কিছুটা আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে পারলে, ভাল হয়। অসংখ্য সরকারি জায়গা রয়েছে, যেখানে অন্তত মাথার উপর ছাদটা আছে। সেখানে যদি ওঁদের একটা করে কম্বল দেওয়া যায়, তা হলে অনেকগুলো প্রাণ আমরা বাঁচাতে পারি।

সজলকুমার টিকাদার বামনগাছি, উত্তর ২৪ পরগনা

রাইবেশে

কলকাতা কড়চায় লেখা হয়েছে, ‘শোনা যায়, বীরভূমে এই রায়বেঁশের প্রথম উদ্ভব’ (‘রায়বেঁশে’, কলকাতার কড়চা, ৯-১০)। কথাটা ঠিক নয়। এর উদ্ভব হয়েছে, সংলগ্ন বড়ঞা থানাঞ্চলে (মুর্শিদাবাদ)। তবে চর্চা, বিকাশ ও প্রকাশ ক্ষেত্র হিসেবে আমরা বীরভূমের নাম করতেই পারি। রায়বেঁশে বা রাইবেশে উদ্ভাবনের একটা আঞ্চলিক ইতিহাস আছে। অনেক আগে থেকে শারীরিক কসরতমূলক কিছু নৃত্যভঙ্গি বঙ্গের নানা প্রান্তে প্রচলিত ছিল এবং তা ছিল রায়বেঁশের আগে থেকেই।

দিল্লির মসনদে তখন আকবর বাদশাহ। সে সময় অধুনা মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা থানাঞ্চলে ফতেসিং পরগনায় ফতে হাড়ি নামক এক স্বাধীনচেতা সামন্তরাজা রাজত্ব করতেন। তাঁর সৈন্যসামন্ত, দুর্গ, গড় সবই ছিল, আর ছিল তাঁর হস্তীবাহিনী। তিনি দিল্লির শাসন মানতেন না। ওই সময়ে ফতেসিং পরগনা সংলগ্ন অধুনা খড়গ্রাম থানার শেরপুর নামক দুর্গে দুর্গরক্ষক ছিলেন ওসমান খান। তিনি ছিলেন সুলতানি শাসকদের প্রতিনিধি। এঁরাও দিল্লির শাসন মানতেন না। ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে সেনাপতি মান সিংহকে আকবর এই অঞ্চলে পাঠান এঁদের দমন করে মুঘল শাসন কায়েম করার জন্য। মান সিংহের সঙ্গে আসেন তাঁর সহকারী সেনাধ্যক্ষ সবিতা রায় দীক্ষিত। তাঁর সঙ্গে ছিল দুধর্ষ ভীল সৈন্যদল, অর্থাৎ ভল্ল বা বল্লমধারী যোদ্ধা।

মান সিংহ ওসমান খাঁকে পরাভূত করে এই অঞ্চলে মুঘল শাসন কায়েম করেন। সবিতা রায় দীক্ষিত মান সিংহের নির্দেশে ময়ূরাক্ষী নদীর তীরবর্তী মুণ্ডমালা নামক স্থানে হাড়ি রাজাকে যুদ্ধে পরাস্ত ও নিহত করেন। পুরস্কারস্বরূপ দিল্লির বাদশাহের অনুমতি নিয়ে তাঁকে ফতেসিং পরগনার শাসক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। গড় নির্মাণ করে তিনি এখানে থেকে যান। জেমো-বাঘডাঙার রাজপরিবার সবিতা রায়ের উত্তরাধিকারী। রাজস্থান থেকে আগত ভল্লধারী যোদ্ধাবৃন্দও বাধ্য হয়ে এখানে থেকে যান। তাঁরা যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী হলেও চাষ-আবাদের কাজ জানতেন না। শেষ পর্যন্ত তাঁরা লেঠেল, পাইক-বরকন্দাজের জীবিকা গ্রহণ করেন। অনেকে আবার লুঠতরাজও করতেন।

এই যোদ্ধারা জমিদারদের লেঠেল হিসেবে বাৎসরিক খাজনা আদায়ের সময় থাকতেন। ঘাঘরা পরে নৃত্যছন্দে বাদ্যভাণ্ডের তালে তালে তাঁরা যেতেন। দস্যুদলের আক্রমণ হলে তাঁরা বীরদর্পে ঢাল-তরোয়াল-বল্লম-লাঠি নিয়ে প্রতিহত করতেন। গ্রাম্য বিয়ের ক্ষেত্রেও তাঁদের ভূমিকা একই ছিল।

এঁরাই পাশাপাশি বসবাসকারী হাড়ি, বাগদি, ডোম, বায়েনদের নিয়ে রায়বেঁশে দল গঠন করেন। রায়বাঁশ থেকে রায়বেঁশে নামের উদ্ভব বলে অনেকে মনে করেন। আমি বিশ্বাস করি, রাই বেশ (নারী বেশ) থেকে রাইবেশের উদ্ভব। সেই কারণে আমি ‘রাইবেশে’ বানান ব্যবহার করি।

ভল্লা জনগোষ্ঠীর বসতিকেন্দ্র সংলগ্ন মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বর্ধমানের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় রাইবেশে দলগুলির সৃষ্টি হয়েছে এবং এগুলিই তাদের বিকাশকেন্দ্র। এঁরা প্রধানত গ্রাম্য বিয়েতে অংশ নিয়ে জীবিকা চালান। ইদানীং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এঁরা বহু অনুদান পাচ্ছেন ও দেশের নানা স্থানে রাইবেশে প্রদর্শন করছেন।

গত শতাব্দীর তিরিশের দশকে গুরুসদয় দত্ত মশাই বীরভূমের জেলা শাসক হিসেবে এসে রাইবেশের সঙ্গে পরিচিত হন। সে সময় ব্রিটিশ সরকার ভল্লাদের অপরাধপ্রবণ গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। এই অভিশাপ থেকে তিনি তাঁদের মুক্তি দেন ও জীবনের মূল স্রোতে নিয়ে আসেন। রাইবেশে নৃত্যকেও পুনরুজ্জীবিত করেন। এই নৃত্যশৈলীর সহায়তায় স্বদেশ হিতৈষণা ও সমাজসেবাকে একীভূত করে তিনি একটি অসাধারণ নৃত্যশৈলী উদ্ভাবন করেন, যা আজও ব্রতচারী হিসেবে সগর্বে প্রচারিত। রাইবেশে লোকনৃত্য নানা উত্থানপতনের মধ্যে টিকে আছে আজও। সত্তরের দশকে মুর্শিদাবাদে এই নৃত্য প্রায় বিলুপ্তির পথে গেলেও লোকায়ত শিল্পী সংসদ তাকে পুনরুজ্জীবিত করে।

পুলকেন্দু সিংহ পাঁচথুপি, মুর্শিদাবাদ

দরজা, না দাম?

গ্যাস বুক করা হয়েছিল আগে, মেসেজও এসেছিল ডেলিভারির। কিন্তু ফের মেসেজ এল, বুকিং বাতিল। কারণ, দরজা নাকি বন্ধ ছিল। খবর পেলাম, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে। দু’দিন পর সিলিন্ডার পেলাম একশো টাকা বেশি দিয়ে। আগের বুকিং-এ ৬৬৫ টাকা বিল করা হয়েছিল, পরের বিল এল ৭৬০ টাকার। দাম বৃদ্ধির জন্য ডেলিভারি বাতিল না বলে, দরজা বন্ধ ছিল তাই বাতিল বলার দরকার ছিল কি?

অরূপ দে ই-মেল মারফত

জমা জল

‘মধ্যমগ্রামে জমা জলে ডেঙ্গির ত্রাস’ (৪-১১) শীর্ষক সত্যনিষ্ঠ ও যথাযথ খবরটির জন্য ধন্যবাদ। অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। বিশেষ করে পাটুলি, মিলনপল্লি, ক্ষুদিরাম পল্লি-সহ বিশাল অঞ্চলে প্রায় ছ’মাস জল দাঁড়িয়ে থাকে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। কেন না, জলের গভীরতা হাঁটু থেকে বুক অবধি! পানীয় জল আনা থেকে যাবতীয় যাতায়াত চলে ওই জল ভেঙেই। শত শত ঘরবাড়ি যেন মাঝসমুদ্রে ছোট্ট দ্বীপ। বহু পরিবার জলমগ্ন বাড়ি ছেড়ে চলে যায় ভাড়া বা়ড়িতে।

চারিদিকের বৃষ্টি ও নর্দমার জলের গন্তব্য বিস্তীর্ণ মাঠ, যার বেশির ভাগটাই আগে ছিল ডোবা অথবা খেত। অথচ, পুরসভার অধীনেই এই সব অঞ্চল এখন বসত-এলাকা। বহু জায়গায় রাস্তা হয়নি, যায়নি বিদ্যুৎও। কিছু জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি বসানো হয়েছিল সাত-আট মাস আগে। তারহীন খুঁটি। এ বছর পাটুলির পঞ্জাবি মাঠ, খেলার মাঠ, শিক্ষামাঠে দু’তিনটি নৌকো নামানো হয় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত খরচে ও কাজে। এত জল বাণীকণ্ঠ খালে ফেলার কথা হয়েছিল দশ-বারো বছর আগে। বিরোধী পক্ষের পোস্টারে লেখা হয়েছিল, তার জন্য নাকি অর্থবরাদ্দও হয়েছিল। এই অভিযোগ কতটা সত্য, জানার উপায় নেই।

মাননীয় পুরপ্রধান রথীন ঘোষ বলেছেন, খাল কাটার ক্ষেত্রে যে প্রতিবন্ধকতা ছিল, সেটা দূর করা গেছে। তা হলে তো এর চেয়ে ভাল খবর হয় না।

বিভাত্রিব মলয় ধর কলকাতা-১৩২

ভ্রম সংশোধন

‘পাশে মার্কিন তরুণী, গ্রন্থাগার দাসপুরের স্কুলে’ শীর্ষক প্রতিবেদনে (১৩-১১) তরু‌ণীর স্কুলটির নাম ‘নোত্র দাম সান জোস হাইস্কুল’ লেখা হয়েছে। নামটি হবে ‘নোত্র দাম সান হোসে হাইস্কুল’।

‘প্রসঙ্গ জ্যোতিষ’ (কলকাতার কড়চা, ১৩-১১)-এ শেষ লাইনে লেখা হয়েছে, ‘অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করবেন শঙ্খ ঘোষ’। তথ্যটি ঠিক নয়।

অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটিগুলির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE