রামনবমীর নব্য রাজনৈতিক দাপটে বাংলার জনগণের অবস্থা উলুখাগড়ার মতো। অথচ বাংলার সুদীর্ঘ ধর্মীয় ইতিহাসে রামের গুরুত্ব অপরিসীম। রাজনীতির কালিমায় বাংলার ‘রাম’-সংস্কৃতির ইতিহাস মুছতে বসেছে। সেই প্রাচীন সংস্কৃতির অঙ্গস্বরূপ এক পুরাকীর্তির কথা তুলে ধরি।
বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়া ব্লকের গোবিন্দপুর গ্রাম। আচার্য রামানন্দ-পন্থী রামায়েৎ সম্প্রদায় ১৬৭১ খ্রিস্টাব্দে এই গ্রামেই গড়ে তুলেছিলেন রামের মন্দির। যদিও বহুকাল আগেই সেই রাম মন্দির কালের গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে তৈরি হয় রামের নতুন মন্দির। মন্দির চত্বরে সংরক্ষিত আছে প্রাচীন মন্দিরের প্রতিষ্ঠালিপিটি।
এই মন্দির চত্বরের সর্বাপেক্ষা দর্শনীয় পুরাকীর্তি হল ল্যাটেরাইট পাথরে নির্মিত একরত্নবিশিষ্ট হনুমান মন্দির। প্রাচীন লিপি অনুযায়ী ১৭৪৬ খ্রিস্টাব্দের কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে মহান্ত ধর্মদাস এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ল্যাটেরাইট পাথরের উপর পঙ্খের প্রলেপে নিবদ্ধ আছে হনুমানের গন্ধমাদন পর্বত আনয়নসহ একাধিক ভাস্কর্যের সমাহার। বাংলার প্রাচীন রাম মন্দির অনেক আছে, কিন্তু গোবিন্দপুরের এই মন্দিরটিই সম্ভবত বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন হনুমান মন্দির।
দুঃখের বিষয়, এমন একটি মন্দির এখন ধ্বংস হতে বসেছে। ল্যাটেরাইট পাথরের শক্ত বাঁধুনিতে গাছের দৌরাত্ম্যে সৃষ্টি হয়েছে ফাটল। যে কোন মুহূর্তেই ভূমিতে লুটিয়ে পড়তে পারে মন্দিরটি। অথচ গ্রামবাসীরা একান্ত ভাবেই চান মন্দিরটি রক্ষা পাক, রক্ষা পাক এই গ্রামের প্রাচীন রাম-সংস্কৃতি।
রাম বা হনুমান নিয়ে এ দেশে রাজনৈতিক মিছিল হয়। প্রাচীন পুরাকীর্তি রক্ষায় একটি রাজনৈতিক দলও এগিয়ে আসে না। তাতে যে ‘হুঙ্কার’ ছাড়া যায় না!
শুভম মুখোপাধ্যায় বড়জোড়া, বাঁকুড়া
পড়ুয়ার মন
‘পড়ুয়ার মনের হদিশ শিক্ষকের কাছে’ (২৪-২) শীর্ষক সংবাদটি পড়ে একটি কথা সকলের উদ্দেশে জানানোর প্রয়োজন উপলব্ধি করে এই চিঠি। দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুল, গত বছর জুলাই মাস থেকে স্কুলের পড়ুয়াদের (২ বছর থেকে ১২ ক্লাস পর্যন্ত) ১০-১২ জনের এক-একটি গ্রুপে ভাগ করে প্রত্যেক শিক্ষিকার দায়িত্বে অন্তর্ভুক্ত করেছে। স্কুল চলাকালীন ক্লাস টিচারের পাশাপাশি এঁদের দায়িত্ব: ছাত্রদের উপর নজর রাখা ও তাদের মনের গভীরে পৌঁছনো। এঁরা সকলেই নিজস্ব রেজিস্টারে এদের পড়াশোনার অগ্রগতি, তথা মানসিক, শারীরিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট নথিভুক্ত করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও স্কুলের কাউন্সিলর এই সমগ্র ব্যাপারটি পরিচালনা করেন। পড়ুয়াদের মনের হদিশ রাখার এই অভিনব পদ্ধতিটি অভিভাবকদের মনে গভীর সাড়া জাগিয়েছে। তাঁরাও তাদের সাহায্যের হাত যথাসম্ভব বাড়িয়ে দেবেন, আশ্বাস দিয়েছেন।
শাশ্বতী দত্ত কলকাতা-২০
তার পাশেও
অক্ষয়কুমারের ‘প্যাডম্যান’ ছবির সূত্রে বলি, একটি কিশোরী যে দিন প্রথম ঋতুমতী হয়, সে দিন তার মা-কাকিমা-পিসি-দিদি কেউ না কেউ তার পাশে থাকেন। তার ঋতুমতী হওয়া যে কোনও অস্বাভাবিক কিছু নয়, তাকে বোঝান, তার ভয় ভাঙিয়ে দেন। পাশাপাশি একটি কিশোর যে দিন প্রাপ্তবয়স্ক হয়, যে দিন তার প্রথম বীর্যপাত বা ‘স্বপ্নদোষ’ হয়, সে কিন্তু ওই কিশোরীটির মতোই ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু সে দিন তার সহায় বলতে কেবল বন্ধুবান্ধব। তাকে গাইড করার জন্য কোনও অভিভাবক থাকেন না।
নিরঞ্জন পাল কৃষ্ণনগর, নদিয়া
ছবিও আঁকতেন
2 গিরিজা শঙ্কর চক্রবর্তীকে নিয়ে লেখা ‘ছাত্র-ছাত্রীদের গড়ে তুলতে...’ (৩-৩) পড়লাম। সংগীতসাধক রূপে তিনি ছিলেন সকলের সুপরিচিত। তাঁর শৈশবেই শিল্পী-জীবন কিন্তু শুরু হয়েছিল চিত্রশিল্প চর্চার মধ্য দিয়ে। ১৮৯১ সালে মাত্র ছ’বছর বয়সে বহরমপুর থেকে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যান তাঁর পিসেমশাই তারকচন্দ্র চক্রবর্তী। ওই বছরই কলকাতার এক আর্ট স্কুলে ভর্তি করে দেন। ১৯০১ সালে কলকাতার সরকারি আর্ট কলেজে ভর্তি হন গিরিজা। তখন ওই কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন শিল্পাচার্য অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। প্রায় আট বছর আর্ট কলেজে শিক্ষা গ্রহণ করেন ও চিত্রশিল্পের জগতে যথেষ্ট নাম করেন তিনি। জল-রং ও তেল-রঙে তিনি ছিলেন সমান দক্ষ। তাঁর অঙ্কিত চিত্র এক সময় ছড়িয়ে ছিল নানান জায়গায়। বহরমপুরে তাঁর পৈতৃক বাড়িতে ও কাশিমবাজার বড় রাজবাড়িতে তাঁর অঙ্কিত চিত্রকলা ছিল। কলকাতায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে তাঁর আঁকা ছবি রয়েছে। মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারি প্যালেস মিউজিয়ামের গ্যালারিতে কাটরা মসজিদের পেন্টিংটি গিরিজা শঙ্কর চক্রবর্তী অঙ্কিত।
শান্তনু বিশ্বাস মুর্শিদাবাদ শহর
প্রেমের বন্ধন
এক দেশের সঙ্গে আর এক দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তার লক্ষ্য সংকীর্ণ। তাই অচিরেই সে সম্পর্ক ভেঙে যায়। তখন দুই দেশ আবার যুদ্ধং দেহি হয়ে ওঠে। কিন্তু ব্যক্তিগত স্নেহ-প্রেমের বন্ধন তৈরি করে স্থায়ী সম্পর্ক। সাম্প্রতিক এক অভিজ্ঞতার কথা বলি। প্যারিস থেকে তিরিশ মাইল দূরে মেইডনে থাকে ক্রিস্টেল কুকিনি নামে একটি মেয়ে। সে কলকাতায় বেড়াতে এসেছিল। সন্দীপন, দুলাল, মিষ্টু প্রভৃতি আমাদের কয়েক জনের সঙ্গে তার আলাপ হয়। তার পর সে প্রায় প্রতি বছর কলকাতায় আসে। বাংলা শিখতে চেষ্টা করে। তার মনে হয় বাংলা খুব মিষ্টি ভাষা। এ বার এসে সে আমাদের বাড়িতে ছিল। বাঙালি পরিবার দেখে, বাঙালি পরিবারের সঙ্গে থেকে সে অভিভূত। বাঙালি পরিবারের রীতি-নিয়ম আয়ত্ত করতে চেষ্টা করে। বিয়েবাড়িতে যাওয়ার জন্য শাড়ি পরিয়ে দেওয়ার বায়না করে। হাত দিয়ে ভাত খাওয়ার জন্য আমার মায়ের সাহায্য চায়। প্যারিসে তার বন্ধুকে ফোন করে বলে সে এখন তার ইন্ডিয়ার ফ্যামিলিতে আছে। আমার মাকে মা, বাবাকে পাপা, ভাইকে ভাই বলে ডাকে। ফিরে যাওয়ার দিন কী কান্না তার! ভেবেছিলাম ভুলে যাবে। দিন কয়েক পরে তার মেল। এ বছরের শেষ দিকে সে তার এক বন্ধুকে নিয়ে আসছে আমাদের বাড়ি। তার ভারতের পরিবার দেখাবে। যাওয়ার সময় নিয়ে যাবে আমাদের। মেলাবে ভারতের পরিবারের
সঙ্গে প্যারিসের পরিবারকে। এ রকম ব্যক্তিগত, পারিবারিক, আবেগময় মিলন একটা স্থায়ী ফল দেয়। নৈর্ব্যক্তিক রাজনৈতিক মিলন বা বন্ধন বড় কৃত্রিম, বড় ক্ষণস্থায়ী।
কেকা মজুমদার চক্রবর্তী কলকাতা-৮২
ভ্রম সংশোধন
• ‘প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার দুই শিক্ষক-সহ ৬’ শীর্ষক প্রতিবেদনে (২৮-৩, পৃ ১২) ধৃত দুই শিক্ষক দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর হাই স্কুলে কর্মরত বলে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। তথ্যটি ভুল। ধৃত শিক্ষক অভিজিৎ রাউত লক্ষীনারায়ণপুর হাই স্কুলের এবং সুরেশ জানা যাদবপুর হাই স্কুলের শিক্ষক।
• রবিবারের পাতায় রবীন্দ্রনাথের ‘বিশ্বপরিচয়’-কে স্কুলপাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে পদার্থবিজ্ঞানী সব্যসাচী ভট্টাচার্য মনে করেন বলে প্রকাশিত হয়েছে। ওই বক্তব্যটি বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহের।
অনিচ্ছাকৃত এই ভুলগুলির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy