Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

সম্পাদক সমীপেষু: চিনেও তিনি

জাপানের এনএইচকে ওয়ার্ল্ডের বাংলা সম্প্রচারে বেশির ভাগই পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপস্থাপক-উপস্থাপিকাই থাকতেন

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২০ ০০:৩৬
Share: Save:

‘চিনে ওষুধের প্রতিষেধক রবি ঠাকুরের মুক্তধারা’ (৯-৫) শীর্ষক সংবাদটির পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি।

চিনের রবীন্দ্রানুরাগ বহু দিনের। চিন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা বিভাগের সম্প্রচার ১৯৭০ সাল থেকে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে শুনেছি। দৈনন্দিন ৩০ মিনিটের বাংলা অনুষ্ঠানে সংবাদ ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে প্রায়ই রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্প্রচারিত হত। আর এই রবীন্দ্রসঙ্গীতগুলি গাইতেন চিনা শিল্পীরাই। ‘আজ জ্যোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে...’ প্রায়ই এক চিনা মহিলা শিল্পীর কণ্ঠে শুনতে পেতাম। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন ভ্রমণ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে রবীন্দ্রসাহিত্যের পড়াশোনা, গবেষণা ইত্যাদি নিয়েও কথিকা থাকত। চিনের বাংলা সম্প্রচারের সঙ্গে জড়িত সকলেই ছিলেন চিনা, কিন্তু অন্য কোনও বৈদেশিক বাংলা সম্প্রচারের ক্ষেত্রে সেই বিদেশিদের এমন ব্যাপক অংশগ্রহণ লক্ষিত হত না।

জাপানের এনএইচকে ওয়ার্ল্ডের বাংলা সম্প্রচারে বেশির ভাগই পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপস্থাপক-উপস্থাপিকাই থাকতেন; এমনকি রেকর্ডেড সব রকম বাংলা গানই ছিল উভয় বাংলার শিল্পীদেরই গাওয়া। বিবিসি ওয়ার্ল্ড ও ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা সম্প্রচারের অনুষ্ঠানেরও শিল্পী ছিলেন বাঙালিরাই। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সমসাময়িক কালেই শুরু হয় ডয়েচে ভেলি জার্মান (পশ্চিম) বেতার তরঙ্গের বাংলা অনুষ্ঠানের (৫০ মিনিট) সম্প্রচার, তাতেও পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের শিল্পীরাই থাকতেন।

বর্তমান আলোচ্য প্রতিবেদনেও দেখুন রবীন্দ্রজয়ন্তীর উদ্‌যাপনে জড়িত সকলেই বলতে গেলে চিনা। এটাই চিনের বিশেষত্ব।

শ্যামল সাহা

কলকাতা-৩৫

জ্বরের কথা

‘মহামারি ও বাংলা শিল্প’ (১০-৫) চিঠিতে যথার্থই লেখা হয়েছে, ‘‘অসুখ বা চিকিৎসাবিজ্ঞান কোনও দিনই বাংলা সাহিত্যিকদের কাছে অগ্রাধিকার পায়নি।’’ তবে বিশেষ উল্লেখ করব বছর দুই আগে প্রকাশিত অশোককুমার মুখোপাধ্যায় লিখিত ‘অবিরাম জ্বরের রূপকথা’ বইটির। এই উপন্যাস ১৮৬৭-১৯৬৭ সময়কালে মহামারি এবং চিকিৎসাবিজ্ঞান ও জনস্বাস্থ্যের অগ্রগতির আধারেই নির্মিত চার প্রজন্মের তিন ডাক্তারের কাহিনি।

লিপিকা গঙ্গোপাধ্যায়

কলকাতা-১১

ওষুধ কিনতে

‘প্রেসক্রিপশন ছাড়া মিলছে না জ্বরের ওষুধও, ভোগান্তি হাওড়ায়’ (১০-৫) প্রকাশিত সংবাদ পড়লাম। এ যেন কাউকে ধরে আনতে বললে বেঁধে আনার মতো অবস্থা। যেখানে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক করোনার ওপর নজরদারি রাখার জন্য নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর লিখে নিয়ে (প্রেসক্রিপশন বিনা) ওষুধ বিক্রির অনুমতি আদেশনামা জারি রেখেছেন, সেখানে এমন কড়াকড়ি কেন? স্বাভাবিক অবস্থাতেও কিছু বিশেষ ওষুধ প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্তু ওভার দ্য কাউন্টার কিছু নিরীহ ওষুধ বিক্রি হয়েই থাকে। এখন তো ডাক্তারদের চেম্বারগুলো খাঁ-খাঁ করছে। মুশকিল হল, সাধারণ জ্বর-জ্বালা লকডাউন পালন করছে না। যানবাহনহীন শুনশান রাস্তা ধরে নিকট-দূরের ওষুধের দোকানে দোকানে ঘোরার দিনও শেষ। অনেকে ক্রনিক রোগীর ক্ষেত্রে পুরনো প্রেসক্রিপশনের বৈধতার প্রশ্ন তুলছে! অনলাইনেও সেই একই সমস্যা।

অঞ্জন কুমার শেঠ

কলকাতা-১৩৬

সেই কর্মীরা

‘কৃপণ নীতি’ (৭-৫) শীর্ষক সম্পাদকীয়টি যুক্তিপূর্ণ ও সময়োপযোগী। এখানে যে মিড-ডে মিল কর্মী সহ সরকারি প্রকল্পে কর্মরত (আশা, আইসিডিএস) স্বেচ্ছাসেবকদের ‘কর্মী’র মর্যাদা দিয়ে ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে, সেই প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল, সারা বাংলা মিড-ডে মিল কর্মী ইউনিয়ন সহ অন্যান্য প্রকল্পের ইউনিয়নের উত্থাপিত দাবিগুলোর কথা। সাধারণ মানুষ কি জানেন, মিড-ডে মিল কর্মীরা মাত্র দেড় হাজার টাকার বিনিময়ে সারা মাস ধরে এক-দেড়শো শিশুর রান্না করেন? জানেন, এঁদের বেতন দেওয়া হয় বছরে ১২ মাসের নয়, ১০ মাসের? তাঁরা কি জানেন, ৪-৫ ঘণ্টা ধরে রাঁধার পর, সেই রান্না করা খাবার খাওয়ার আইনসঙ্গত অধিকার এঁদের নেই? হয়তো বা জানা আছে, পিপিই সহ অন্যান্য মেডিক্যাল সরঞ্জাম ছাড়া, বিপজ্জনক পরিবেশে, বিনা পারিশ্রমিকে ‘আশা কর্মী’রা আমাদের জন্য দিনরাত সংগ্রাম করছেন।

নিখিল বেরা

পশ্চিম বেড়াবেড়িয়া, হাওড়া

গঙ্গাজল

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে আমাদের রাজ্যে এক বিজেপি নেতা গোমূত্র সেবনের কথা বলেছিলেন। এ বার, খবরের কাগজে পড়লাম, গঙ্গা সাফাইয়ের সঙ্গে যুক্ত এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, গঙ্গাজল সেবনে করোনা সংক্রমণ সেরে যাবে। সবচেয়ে আশ্চর্য, তাদের লিখিত সেই চিঠি প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় হয়ে জলশক্তি মন্ত্রকের ঘর ঘুরে আইসিএমআর-এর কাছে যায়। আইসিএমআর পত্রপাঠ তাদের এই দাবি নস্যাৎ করে দেয়। যে গঙ্গার দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ হয়, তার দূষিত জলে কি করোনার অ্যান্টিবডি লুকিয়ে থাকবে? আসলে, আমাদের দেশে গঙ্গাজল মানেই পবিত্র, শুদ্ধ জল। এই রকম অবৈজ্ঞানিক, যুক্তিহীন ধ্যান-ধারণা, অন্ধ বিশ্বাস থেকে আমরা আর কবে বেরিয়ে আসতে পারব? সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাপার, গঙ্গাজল সেবনের খবর, বহু ভুয়ো খবরের মতো, সোশ্যাল মিডিয়াতে এক বার ছড়িয়ে পড়লে, তখন করোনায় নয়, গঙ্গাজল খেয়েই অনেকে অসুস্থ হবেন, অনেকের ‘গঙ্গাপ্রাপ্তি’ও ঘটতে পারে।

অরুণ মালাকার

কলকাতা-১০৩

নালিশ কিসের

রেললাইন ধরে হাঁটা। অনন্ত পথ। ওঁরা প্রথমটা ভেবেছিলেন, গরিবদের জন্য যিনি এত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি নিশ্চয় বাড়ি ফেরার সুন্দর পরিকল্পনা করবেন। তার পর শুনলেন, টাকা দিতে হবে টিকিটের। তা, যেখানে দেশের ‘বিকাশ’ হবে, সেখানে টাকা তো দিতেই হবে। অত বড় মূর্তি নির্মাণ হল, তার খরচ নেই!

সরকারেরও কি লোককে বাড়ি ফেরানো ছাড়া আর কাজ নেই? মানলাম, বেশ ক’লক্ষ টাকা এখনও অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি। পড়বে এক দিন। অত অধৈর্য হলে চলে? বাসন বাজাও, মোমবাতি জ্বালাও, ‘মন কি বাত’ শোনো। শুধুই টাকা টাকা করলে সরকার কী ভাববে? রামমন্দির হবে। ওই ট্রাস্টে দান করলে আবার ট্যাক্স লাগবে না। এটাই তো দেশবাসী হিসাবে আমাদের পাওনা।

বাইরের শ্রমিকরা কখন ট্রেনের পাস চাইল, না পেয়ে হাঁটতে শুরু করে দিল, তা-ও সরকার দেখবে? কত দিক দেখবে? কম কাজ? কিছু দিন আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এলেন, ইয়া বড় প্রাচীর নির্মাণ করতে হল।

হয়তো এত কথা ভাবতে ভাবতেই রেললাইনের উপর দিয়ে বাড়ি ফেরা হচ্ছিল। যাঁদের জন্য ট্রেন বাস নেই তাঁদের তো পা দিয়েছেন ঈশ্বর। তাই কোলে সন্তান, পেটে সন্তান, কাঁধে সন্তান নিয়ে মিছিলের মতো ফেরা।

ওঁরা হয়তো আরও ভাবছিলেন, শোনা যাচ্ছে, কিছু দিন পরে বুলেট ট্রেন চলবে। তাতেও তো প্রচুর খরচ। তা হলে আমরা যে এত নালিশ করছি, ‘ফেরার ট্রেন দিন, ফেরার ট্রেন দিন’ বলে? নাহয় ভোট দিয়ে জিতিয়ে এনেছি। তাই বলে কি মাথা কিনে নিয়েছি? আর পথ চলা যাচ্ছে না, পেটে কিছু তো নেই। তবে বাসি রুটিগুলি আছে। এখন এই ট্রেনলাইনে একটু বিশ্রাম করা যাক। কালকের সকালটা নিশ্চয় ভাল হবে।

আনিসুল হক

হুগলি

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,

কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE