আজ গোটা দুনিয়ায় যখন করোনাভাইরাস দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তখন আমরা পৃথিবীর এই প্রান্তে বসে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছি। হ্যাঁ, আর আজ আমি সেই দেশটার গল্পই বলব যারা করোনা নিয়ন্ত্রনে নজরকাড়া সাফল্য অর্জন করেছে। চিনের মুল ভূখণ্ড থেকে মাত্র ১৫০ কিমি দূরে অবস্থিত এই দ্বীপরাষ্ট্রকে অনেকে ভালবেসে "হার্ট অফ এশিয়া" বলে। দুই কোটির সামান্য কিছু বেশি জনসংখ্যা আর আমাদের পশ্চিমবঙ্গের অর্ধেকেরও কম আয়তনের এই দেশটির নাম তাইওয়ান।
প্রায় দু বছর হয়ে গেল আমি তাইওয়ান-এর রাজধানী তাইপেই-তে বসবাস করছি। আমি এখানে ন্যাশনাল তাইওয়ান ইউনিভার্সিটি-র পদার্থবিদ্যা বিভাগে গবেষণা করি। সাজানো-গোছানো ছোট্ট এই দেশ আজ সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে, তাদের নিখুঁত পরিকল্পনা এবং তার সদর্থক বাস্তবায়ণ এর মধ্য দিয়ে কী ভাবে আজও লকডাউন ছাড়া করোনাভাইরাসকে বাগে আনতে হয়।
গত দুই বছরে আমি যখনই ছুটি পেয়েছি তাইওয়ান-এর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি। পাহাড়-পর্বত আর সমুদ্রে ঘেরা ছোট্ট এই দ্বীপের অতুলনীয় নৈসর্গিক সৌন্দর্য আমাকে বারবার মুগ্ধ করেছে। একদিকে যেমন আছে বরফাবৃত পর্বতশৃঙ্গ, অন্য দিকে তেমনই আছে ধবল বালুকারাশির সমুদ্র সৈকত। তাইওয়ানের এই সব পাহাড়, চা বাগান আর মেঘের মধ্যে হারিয়ে যেতে আমার বেশ ভাল লাগে। আবার ইচ্ছে হলেই ছুটে চলে যাই সমুদ্রের নীল জলরাশির বুকে। অস্কারখ্যাত চলচিত্র "লাইফ অফ পাই"-র শুটিং এই দেশেরই বিভিন্ন প্রান্তে হয়েছে। তাইওয়ানের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত যানবাহন বা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা খুবই উন্নতমানের এবং সাধারণ মানুষের আয়ত্তের মধ্যে, যার ফলস্বরূপ তাইওয়ানের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছতে সময় লাগে মাত্র এক ঘণ্টা তিরিশ মিনিট। আর যা সম্ভব হয়েছে ৩০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় ছুটে চলা তাইওয়ান হাই স্পিড রেলের দৌলতে।