প্রতি বছর ‘ঐক্যশ্রী’ প্রকল্পের মাধ্যমে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি দেওয়া হয়ে থাকে। পড়ুয়ারা যে কোনও কাফে থেকে এই ফর্ম পূরণ করে অ্যাপ্লিকেশন নম্বরটি স্কুলে জমা দেয়। স্কুল সেটি যাচাই করে উপযুক্ত স্থানে পাঠিয়ে দেয়। যথাসময়ে তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যায়। পুরো পদ্ধতিতে কোনও সমস্যা হলে স্কুল ও বিডিও অফিস দায়িত্ব নিয়ে তার সমাধান করে। কিন্তু এ বছর ‘দুয়ারে সরকার’-এর ক্যাম্পে গিয়েই বৃত্তি প্রকল্পটি রিনিউ করাতে হবে। কাজটা অতি সহজেই তারা তাদের পাড়ার কাফে থেকে দিনের যে কোনও সময়ে সামান্য টাকার বিনিময়ে করে নিতে পারত। গ্রামাঞ্চলে অনেক পড়ুয়ারই মা-বাবা উভয়ই কাজে চলে যান। ফলে তাঁদের পক্ষে কাজ ফেলে সারা দিন লাইনে দাঁড়িয়ে কাজটা করানো দুরূহ হয়ে পড়ে। তাই বাধ্য হয়েই তাঁদের ছেলেমেয়েদের উপস্থিত হতে হবে ক্যাম্পে। এমন একটা প্রকল্প, যেটা স্কুল ও বিডিও-র মাধ্যমে সহজেই হয়ে যাচ্ছিল, সেটা জনসমুদ্রে নিয়ে ফেলা হল কেন? প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় না আছে হাই স্পিড ইন্টারনেট, না যথেষ্ট সংখ্যক কম্পিউটার। বিদ্যুৎ এই আছে, এই নেই। যিনি বা যাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনি বা তাঁরা কি বাস্তবের সঙ্গে পরিচিত নন? না কি এটা শুধু প্রচারের উদ্দেশ্যে অসংখ্য পড়ুয়া ও শিক্ষককে ক্যাম্পে টেনে নিয়ে গিয়ে জীবনসংশয়ের মুখে ফেলে রাজনৈতিক ফয়দা তোলার চেষ্টা?
সুদেবিকা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা-৪২
অলস শহর
অন্ডাল থেকে বিকেলের ইন্ডিগো ফ্লাইট যখন হায়দরাবাদের মাটি ছুঁল, তখন ঘড়িতে কাঁটায় কাঁটায় সন্ধে সাড়ে সাতটা। এর পর লাগেজ সংগ্রহ করে রাজীব গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে বেরোবার মুখে দেখি ব্যাটারিচালিত সরকারি এসি বাসের কাউন্টার। দূষণহীন, শব্দহীন সেই বাসে চেপে মাত্র চল্লিশ মিনিটেই পৌঁছে গেলাম শহরের মূল গন্তব্যস্থলে। এরই বিপরীত অভিজ্ঞতা হল ফেরার পথে। রাত্রি আটটার সময় দমদম বিমানবন্দর থেকে শিয়ালদহ স্টেশনে যাব। এগারোটার ট্রেন ধরব। দেখি, একটাও এসি বাস কেন, সাধারণ বাসও নেই। নন-এসি ট্যাক্সিগুলো ভাড়া হাঁকছে ছ’শো থেকে সাতশো টাকা। অ্যাপ ক্যাবের ভাড়া আরও বেশি— ন’শো থেকে হাজার! তাও শেয়ারে যেতে হবে। অগত্যা প্রিপেড ট্যাক্সির লাইনে দাঁড়ালাম। তত ক্ষণে প্রায় পঞ্চাশ-ষাট জন লাইনে। অর্থাৎ, আমার মতো অনেকেই দুর্ভোগের শিকার। প্রায় দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে যখন ট্যাক্সি পেলাম, তখন ঘড়ির কাঁটা প্রায় দশটা ছুঁইছুঁই। স্টেশনে যখন পৌঁছলাম, তত ক্ষণে ট্রেন ছাড়তে কিছু ক্ষণ
মাত্র বাকি।
এই শহর গতিহীন, এই শহর অলস। তাই, এই শহর তথা রাজ্যে কর্পোরেট সেক্টর আসে না, শিল্পায়ন হয় না, আইটি সেক্টর হয় না। আমাদের রাজ্যে যে মেধার অভাব নেই, তা বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, দিল্লি, মুম্বই গেলেই বোঝা যায়। হাজার হাজার বাঙালি ছেলেমেয়ে ওই সব শহরের আইটি সেক্টরে, শিল্প-কারখানায়, অফিস-মলে কাজ করছে। কিন্তু আমাদের রাজ্যে সে সব গড়ে ওঠে না। শিল্পপতিরা এখানে শিল্প, কারখানা গড়তে উৎসাহী নন। তার কারণ, পশ্চিমবঙ্গে শিল্প স্থাপনের জন্য শিল্পপতিরা রাজ্য সরকারের কাছে যে ন্যূনতম সুবিধাগুলো চান, তাও সরকার দিতে অপারগ। আগে আমাদের রাজ্যে পরিবহণ ব্যবস্থা, জল, আলো, রাস্তার মতো পরিষেবাগুলো গড়ে তুলতে হবে। তবেই বৃহৎ শিল্পের সম্ভাবনার দরজা খুলবে, নতুবা নয়।
কৌশিক সরকার
রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া
অসহযোগিতা
গত ১৬ অগস্ট এসবিএসটিসি-র বাসে ব্যারাকপুর থেকে হলদিয়া যাচ্ছিলাম। নিমতৌড়িতে এসে বাসের সামনের চাকার অ্যাক্সেল ভেঙে যায়। চালক ও কন্ডাক্টর জানিয়ে দেন, বাস আর যাবে না। টিকিটের মূল্য থেকে নিমতৌড়ি পর্যন্ত ভাড়া নিয়ে বাকি টাকা ফেরতের দাবি করি যাত্রীরা। কিন্তু কন্ডাক্টর টাকা ফেরত দিতে সম্মত হননি। আমরা তাঁকে পিছনে আসা হাবড়া-হলদিয়া বাসের সঙ্গে কথা বলতে বলি, যাতে আমরা আমাদের টিকিট দিয়েই ওই বাসে উঠতে পারি। তিনি সেটাও করলেন না। শেষ পর্যন্ত পরের বাসে আমাদের টিকিট কেটে হলদিয়া আসতে হল। এ ভাবে যাত্রীদের সঙ্গে অসহযোগিতা কেন?
অভিজিৎ ঘোষ
শ্যামনগর, উত্তর ২৪ পরগনা
লকার সমস্যা
বলীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘লকার নিয়ে হয়রানি’ শীর্ষক চিঠিটি (১৭-৮) পড়লাম। একই ভাবে হয়রানির শিকার আমিও হয়েছি। ২০ বছর ধরে এসবিআই গোলপার্ক শাখায় আমার লকার রয়েছে। হাঁটুর সমস্যার জন্য লকারের অবস্থান নীচ থেকে একটু উপরের দিকে বদল করতে চেয়েছিলাম। আমার সমস্যার সমাধানের বদলে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার নানা ভাবে আমাকে বোঝাতে লাগলেন, কোনও একটি পেনশন প্রকল্প করার জন্য। যখন কোনও মতেই রাজি হলাম না, তখন তিনি আমাকে এক মাস পরে দেখা করতে বললেন। আমার সব সঞ্চয় এই ব্যাঙ্কেই আছে। তা সত্ত্বেও আমাকে এই ভাবে ঘোরানো হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে পেনশন প্রকল্প নেওয়ার জন্য চাপ না দিয়ে আমার লকারের অবস্থান পরিবর্তন করা হয়।
মলয় মুখোপাধ্যায়
কলকাতা-২৯
পুনরাবৃত্তি কেন
আমি এক জন রাজ্য সরকারি কর্মী। অধুনা সংশ্লিষ্ট বিভাগের সক্রিয়তার ফলে পাসপোর্ট পাওয়ার প্রক্রিয়া অনেকটাই সহজ হয়েছে। কিন্তু পাসপোর্টে সাম্প্রতিক ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য আবার নতুন পাসপোর্টের মতোই দরখাস্তের প্রয়োজনীয়তা ঠিক বোধগম্য হয় না। এ ক্ষেত্রে নতুন ঠিকানার উপযুক্ত প্রমাণপত্র পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষের সামনে পেশ করা বা প্রয়োজনমতো ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’ করাই কি যথেষ্ট নয়? বিশেষত, সরকারি ক্ষেত্রে কর্মরতদের জন্য প্রক্রিয়াটি আরও জটিল। এক বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ বা নিয়োগকর্তার সই সম্বলিত দরখাস্তের ‘প্রায়র ইন্টিমেশন’ চিঠি জমা দিয়ে পাসপোর্ট পাওয়ার পর শুধুমাত্র ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য সমস্ত প্রক্রিয়াটির পুনরাবৃত্তি অর্থহীন ও অযথা হয়রানি মনে হয়।
বিকাশ বিশ্বাস
রহড়া, উত্তর ২৪ পরগনা
দরজা ভেঙে!
‘ভাঙল দরজা, নেতা গ্ৰেফতারে বিতর্কে পুলিশ’ (১৪-৮) শীর্ষক সংবাদে ডিসি পর্যায়ের এক জন উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য জেনে বিস্মিত হতে হয়। এফআইআরে নাম থাকলেই অভিযুক্তকে যদি দরজা ভেঙে গ্ৰেফতার করার প্রয়োজন হয়, তা হলে থানার লকআপ তো বটেই, সম্ভবত সংশোধনাগারেও জায়গার টান পড়বে।
রাজনৈতিক প্রভুদের মর্জি বুঝে পুলিশের তৎপরতার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটা নতুন নয়। শাসকের অঙ্গুলিহেলনে এফআইআর-এ গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্তকে নিয়ে পুলিশের ইঁদুর ধরার খেলা চলে বললে ভুল হবে না। গ্ৰেফতারি এড়াতে দীর্ঘ দিন আত্মগোপন করে থাকা পাহাড়ের এক নেতা পুলিশের নাকের ডগায় বসে সাংবাদিক সম্মেলন করলেও, পুলিশ তাঁকে দেখতে পায় না। দরজা ভেঙে গ্ৰেফতার তো দূরস্থান, সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সঙ্কেত না মেলায় আদালতের গ্ৰেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো জনৈক বিধায়কও একদা পুলিশের চোখে ফেরার হয়ে যান। আইনের চোখে সবাই এক হলেও, দুর্ভাগ্যজনক ভাবে পুলিশ প্রায়শই তা বিস্মৃত
হয়ে যায়।
ধীরেন্দ্র মোহন সাহা
কলকাতা-১০৭
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy