Advertisement
০৮ মে ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

২০০৬ সালের বিধানসভা ভোটে নির্বাচন কমিশন দৃশ্য দূষণের কারণে দেওয়াল লিখনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, তার পর থেকে আবার যে কে সে-ই।

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০২
Share: Save:

দেওয়ালের ভাড়া দিন

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ আছে বাড়ির দেওয়ালে লিখতে গেলে মালিকের থেকে অনুমতি নিতে হবে। বেশ কিছু পরিচিত ব্যক্তির (যাঁদের দেওয়ালে প্রচার চালানো হয়েছে) সঙ্গে কথা বলে জানলাম, কোনও অনুমতিই নেওয়া হয়নি এই ব্যাপারে। কিন্তু এ নিয়ে অভিযোগ কে করবে? জলে থেকে কে আর কুমিরের সঙ্গে বিবাদ করে!

মনে আছে, ২০০৬ সালের বিধানসভা ভোটে নির্বাচন কমিশন দৃশ্য দূষণের কারণে দেওয়াল লিখনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, তার পর থেকে আবার যে কে সে-ই। একটা কাজ করা যেতে পারে, দেওয়াল রং করে “দেওয়াল লিখিবেন না পোস্টার মারিবেন না” লিখে দেওয়া। কয়েক জন এটা করে সুফলও পেয়েছেন।

আর একটি কথা। যদি আমার দেওয়াল কোনও প্রতিষ্ঠানের পণ্যের বিজ্ঞাপনের জন্যে ব্যবহার করতে দিলে তার বিনিময়ে অর্থ পাই, তা হলে কোনও রাজনৈতিক দল আমার দেওয়াল ব্যবহার করলে আমাকে অর্থ দেবে না কেন? এমন আইন প্রণয়ন করা হোক। কারণ প্রার্থী তাঁর প্রচারের ব্যানার, পোস্টার, ফ্লেক্স, রং, তুলি সবই অর্থের বিনিময়ে সংগ্রহ করে থাকেন, এখন ডিজিটাল যুগে টিভি বা ইন্টারনেটেও প্রচার চলে, এবং তা অর্থের বিনিময়েই হয়, তা হলে জনগণের বাড়ির দেওয়ালও অর্থের বিনিময়ে নেওয়া হবে না কেন? দেওয়াল লিখুন, দেওয়ালের ভাড়া দিন।

অভিজিৎ ঘোষ

কমলপুর, উত্তর ২৪ পরগনা

অবৈধ নির্মাণ

কলকাতা কর্পোরেশনের অধীনে প্রায় সব ওয়ার্ডেই অবৈধ বাড়ি করার সংখ্যা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি এ রকম শতাধিক কেস পর্যালোচনা করে দেখা গিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে কর্পোরেশনের ঢিলেমিতে বিরক্ত হয়ে বাদী বা বিবাদী পক্ষ মহামান্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন, রিট পিটিশনের মাধ্যমে এর দ্রুত নিষ্পত্তি চাইছেন। দেখা গিয়েছে একেবারেই অনুমোদন না নিয়ে কেউ কাজ করছেন, কেউ অনুমোদন নিলেও বাড়তি একটি বা একাধিক তলা (floor) চাপিয়ে দিচ্ছেন, কেউ বা বাড়তি বারান্দা বা ঘর বানাচ্ছেন, কেউ অনুমোদিত নকশাটি পুরো পাল্টে ফেলেছেন, কেউ বসবাসের অংশটি পুরোপুরি অথবা আংশিক বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করছেন।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের ১৯৮১-র অ্যাক্টের অধীন কেএমসি বিল্ডিং রুল ২০০৯-এর অনুমোদিত নকশামতো বাড়ির সামনে, পিছনে, ও দুই পাশে ফাঁকা রাখার যে ন্যূনতম জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে, অনেকে তা একেবারেই রাখছেন না বা আংশিক রাখছেন। কেউ নির্মাণ করছেন জমির শেষ প্রান্ত পর্যন্ত, ফলে প্রতিবেশীর বাড়ির ক্ষয়ক্ষতির সম্ভবনা থেকে যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে প্রতিবেশী তাঁর বাউন্ডারি ওয়াল বা বাড়ির ক্ষয়ক্ষতির ফটো তুলে শুনানির সময় বিহিত চাইছেন, বলছেন জমির ব্যবহারের পরিমাণটা অনুমোদিত গ্রাউন্ড কভারেজ ছাপিয়ে যাচ্ছে।

বাড়ির উচ্চতা কতটা হবে, চার পাশের ফাঁকা জায়গা কতটা থাকবে, সেই অনুমোদন নির্ভর করে নির্দিষ্ট জায়গাটির সামনের রাস্তাটির প্রস্থের উপর। এই ধারাটির লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত প্রায়শই মেলে। জমির কতটা পরিমাণ ব্যবহার করা যাবে (গ্রাউন্ড কভারেজ) তাও উল্লিখিত থাকে অনুমোদিত নকশাতে। প্রধানত ওপরের তলাগুলোতে, প্রজেকশনের মাধ্যমে এরিয়া বাড়িয়ে, বা জমির অননুুমোদিত অংশটিকেও আংশিক বা পুরো ব্যবহার করে এই সমস্যাটি তৈরি করা হয়। এ ছাড়াও অনেকে বাড়ির তলা বাড়িয়ে তোলেন, পার্কিং স্পেস কমিয়ে দেন বা একেবারেই রাখেন না। যেমন কিছু ডেভেলাপার অতিরিক্ত লাভের মুখ দেখতে পার্কিং স্পেস না রেখে গ্রাউন্ড ফ্লোরে অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করে বিক্রি করছেন। সিঁড়ির সংখ্যা ও প্রস্থ কমিয়ে, প্লিন্‌থের উচ্চতা কমিয়ে ইত্যাদি বহু বিধি ভঙ্গ করে বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি করছেন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দু’টি হল: এক) বাড়িটি গড়ে ওঠার সময় কী ধরনের মালমশলা ব্যবহার করা হয়েছিল এবং ঠিকঠাক কর্মপদ্ধতি অনুযায়ী কাজটি হয়েছিল কি না। দুই) স্ট্রাকচারাল মেম্বারগুলি যথা ফাউন্ডেশন, কলম বা পিলার, বিম ও ফ্লোর স্ল্যাব বা রুফ স্ল্যাব— এগুলির নকশা এবং অন্য সব কিছু ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (NBC) মাফিক হয়েছিল কি না।

একটি অনুমোদিত বাড়ির ক্ষেত্রে ওই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেখেন কর্পোরেশন অনুমোদিত ইঞ্জিনিয়ারেরা। কিন্তু অনুমোদিত বাড়ির ক্ষেত্রে এটাই গুরুতর সমস্যা তৈরি করে, কারণ সেগুলো কী ভাবে নির্মিত হয়েছে তা অজানা। এমনও হতে পারে, একটি জি+৩ আরসিসি (R.C.C) কলম-বিমের ফ্রেম্‌ড (framed) বিল্ডিং কোনও অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার ছাড়াই নির্মিত হয়েছে।

১০০টি কেস স্টাডি করতে গিয়ে, সবচেয় বেশি সংখ্যক ১৬টি এ রকম অননুমোদিত নির্মাণের ঘটনা পাওয়া গিয়েছে বরো–৭ থেকে। যার মধ্যে ৫৯ এবং ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিধি লঙ্ঘনের মাত্রাটা বেশি। এর পরে বরো-১০। এখানে ১৪টি কেস, যার মধ্যে ৯১, ৯২, ৯৩ ও ১০০ নম্বর ওয়ার্ডে অনুমোদনহীন বাড়ি করার হার বেশি। এর পরে বরো-৬’এ মোট ১১টি, যার মধ্যে ওয়ার্ড নম্বর ৫১, ৫৩ ও ৬০’এ প্রবণতা বেশি। বরো-৫’এ ১০টির মধ্যে ৪৫ ও ৪৯ নং ওয়ার্ডে প্রবণতা বেশি। বরো-৪ ও ১৫-তে ৯টি করে, যার মধ্যে ওয়ার্ড-২৭, ৩৯ ও ৪০ এবং ১৩৩ ও ১৩৯-এ প্রবণতা বেশি। বরো-১, ৩ ও ১৩-তে যথাক্রমে ৬টি করে। ওয়ার্ড-৫, ৩৪, ৩৫, ১১৮ ও ১১৯-এ প্রবণতা বেশি। বরো-৮’এ ওয়ার্ড-৬৯ প্রণিধানযোগ্য।

এই ধরনের অনুমোদনহীন বা আংশিক অনুমোদনপ্রাপ্ত বাড়ি কলকাতায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে। এটি অচিরে বন্ধ করতে না পারলে কলকাতা ক্রমশই এক অত্যন্ত বিপজ্জনক নগরীতে পরিণত হবে।

মৃণাল মুখোপাধ্যায়

প্রাক্তন স্পেশাল অফিসার(বিল্ডিং), কেএমসি

মূর্তির দশা

2 বহরমপুর শহরের গোরাবাজারে ড. রেজাউল করিম অ্যাভিনিউ এবং সূর্য সেন স্ট্রিটের সংযোগস্থলে কৃষ্ণনাথ কলেজের খেলার মাঠের দক্ষিণ পূর্ব কোণে, অধ্যাপক রেজাউল করিমের একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপিত হয়েছে ২০০৩ সালে। মূর্তিটির বর্তমান অবস্থা দেখে অতীব ব্যথিত হই। মূর্তিটির বাঁ পাশ ঘেঁষে একটি বিরাট হনুমানজির মন্দির গড়ে উঠেছে। মন্দিরে ওঠার সিঁড়িটি এমন ভাবে তৈরি হয়েছে যে, হনুমানজির বিগ্রহের সামনে পৌঁছতে হলে রেজাউল করিমের মূর্তির পাদদেশেই জুতো খুলে রেখে যেতে হচ্ছে, যা অত্যন্ত দৃষ্টিকটূ এবং অসম্মানজনক। শুধু তা-ই নয়, মূর্তিটির ডান পাশের দেওয়াল ঘেঁষে নতুন করে তৈরি হয়েছে একটি দক্ষিণা কালী মন্দির। এর ফলে রেজাউল করিমের মূর্তিটি ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের দৃষ্টির আড়ালে চলে যাচ্ছে। ভেবে অবাক হতে হয়, স্বাধীনতা সংগ্রামী ঋষিতুল্য যে মানুষটি কয়েক দশক ধরে বহরমপুর গার্লস কলেজে অধ্যাপনা করেছেন, ছাত্রীরা যাঁকে শ্রদ্ধায় পিতার আসনে বসিয়েছেন, যাঁকে পিএইচ ডি ডিগ্রিতে ভূষিত করার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহরমপুরে এসেছেন, যিনি একদা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হয়েছিলেন, তাঁর মূর্তিটির এই দশা!

তপনমোহন চক্রবর্তী

কলকাতা-৯১

বিভ্রম

আনন্দ প্লাস-এ (১০-৪) আমার যে বিবৃতি ছাপা হয়েছে তাতে, হয়তো শ্রুতিবিভ্রমের কারণে, একটি ভুল হয়েছে। ‘ঋতুপর্ণ ঘোষ-এর ছাত্র হিসেবে শুধু আমারই অধিকার আছে’— এ রকম উক্তি করার কোনও কারণ নেই। দীর্ঘদিন বহু মানুষ তাঁর সান্নিধ্যে এসেছেন ও শিখেছেন। আমি তেমনই এক জন। আজ তাঁর অবর্তমানে বাড়তি কোনও বন্ধুত্বের দাবি আমার নেই। তবে আমার কাজ তাঁকে খুশি করত, জানি। দ্বিতীয় বক্তব্য হল, প্রতিমকে আমি ‘তুই’ বলেই সম্বোধন করি। এটা সেই ‘তুই’। কোনও ঔদ্ধত্যজাত ‘তুই’ নয়। সাক্ষাৎকারটিতে আমার অপমান, কষ্ট আমি প্রকাশ করেছি মাত্র।

কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়

কলকাতা-৮৪

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE