Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: বন্‌ধ ডাকবেন না

রাত সোয়া এগারোটা। এক রাশ ক্লান্তি চোখে মুখে সুজয়ের। তবুও যেন কিছুটা তৃপ্ত, কারণ আর রোজগার ১২০ টাকা বেশি। এই রোজগারের জন্যই আজ সকাল সাতটা থেকে খেটেছে।

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০০

রাত সোয়া এগারোটা। এক রাশ ক্লান্তি চোখে মুখে সুজয়ের। তবুও যেন কিছুটা তৃপ্ত, কারণ আর রোজগার ১২০ টাকা বেশি। এই রোজগারের জন্যই আজ সকাল সাতটা থেকে খেটেছে। বাড়ি ফিরে বৌয়ের হাতে টাকা তুলে দিয়ে বলল, ‘‘এটা দিয়েই কাল সংসার চালিয়ে নিয়ো। কাল তো আর টোটো বেরোবে না। কাল বন্‌ধ।’’

অফিস ফিরেই মিত্তিরবাবুর চোখ টিভির পর্দায়। না, এটা ওঁর অভ্যেসের মধ্যে পড়ে না। কিন্তু কাল বন্‌ধ না উঠলে যে তাকে শোকজ় লেটার ধরানো হবে। সার্ভিস বুকে ছেদ পড়বে। .৫ ডোজ়ের ঘুমের ওষুধও ঘুম আনতে ব্যর্থ হল মিত্তিরবাবুর চোখে।

ফোনে কাকে রানাবাবু বলছেন, ‘‘ছেলেটার আমার কী হবে! সেই দেড় মাস আগে চেন্নাই মেলে টিকিট কেটে রেখেছি। কাল বন্‌ধ, কী করে যাব? না গেলে তো আবার দু’মাসের আগে টিকিট পাব না।’’ ছোট থেকেই ওঁর ছেলের ফুসফুসে সমস্যা।

এই সমস্যা, এই উদ্বেগ শুধু এঁদের একার নয়। মুদির দোকানি থেকে ভিখারি, বাস ড্রাইভার থেকে রিকশাওয়ালা, মুটে, মজুর, বাড়ির কাজের মেয়ে, কাজের মেয়ে না এলে বিপদে পড়া গৃহিণী, কেউই বন্‌ধের দিন ভাল করে বাঁচতে পারেন না। ‌

কিন্তু একটু ভেবে দেখুন তো, আমি কাল কী করব, আমি কাল কোথায় যাব, আমি কাল কী খাব, সব কিছু ঠিক করে দেওয়ার অধিকার কি কোনও রাজনৈতিক দলের আছে? তা হলে আমরা কিসের স্বাধীন? প্রশ্নটা সত্যিই বেদনাদায়ক। বন্‌ধ ডেকে কি কোনও প্রতিকার কোনও কালেই হায়েছে? পেট্রল এখন কত টাকা লিটার দেখলেই তা স্পষ্ট হবে।

বিষয়টা কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে কেন্দ্র করে নয়। বর্তমান শাসক দল ক্ষমতায় আসার আগে প্রচুর বন্‌ধ করেছে। মানুষের অসুবিধে তখনও ছিল, এখনও।

ছোটবেলার একটা দিনের ঘটনা এখনও মনে স্পষ্ট। কৃষক ধর্মঘট মানে কৃষিকাজ করা যাবে না।

কারণ ছিল শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি। সেই দিন লাঙল করা আবশ্যিক বুঝে এক ক্ষুদ্র কৃষিজীবী গিয়েছিল লাঙল করতে। ফিরে এল রক্তাক্ত হয়ে। বল্লম ঢুকে গিয়েছিল বুকে। আজও ওই ব্যক্তি খুঁড়িয়ে চলেছে। আসলে এই নৃশংস কাজগুলো করার একটাই কারণ, রাজনৈতিক সুবিধে পাওয়া। মানুষ যাতে ভয় পায়। আর যাতে সাহস না করে। আর ঠিক এই কারণেই বাস জ্বালানো।

আচ্ছা একটা কথা ভাবুন তো, আজ বন্‌ধে বেরিয়ে আপনি যদি বিপদে পড়েন তার দায়িত্ব কার? মারা গেলে রাজ্য সরকার দু’লাখ টাকা দেবে। কিন্তু জীবন তো আর ফিরবে না!

তাই প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দলের কাছে অনুরোধ, তারা সাধারণ মানুষের কথা ভাবুক। ওঁরাই তাদের শক্তি। তাই এই বন্‌ধের রাজনীতি বন্ধ হোক।

ছাত্রমৃত্যু, ধর্ষণ, পেট্রলের দাম বৃদ্ধি-সহ প্রতিটা বিষয়েই অবশ্যই প্রতিবাদ হোক। কিন্তু দয়া করে বন্‌ধ ডেকে নয়।

প্রতীক চৌধুরী

লূড়কা, বারিকুল, বাঁকুড়া

তারস্বরে

আমি নাগেরবাজার এলাকায় থাকি। এখানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাইক বাজে এবং তারস্বরে। সারা বছর। পুজোর মরসুমে তা এমন মাত্রায় পৌঁছয় যে রাস্তায় কানে হাত দিয়ে চলতে হয়।

অপরেশ সেন

কলকাতা-৮০

আরও মাইক

আমি এক জন অবসরপ্রাপ্ত নাগরিক। দমদমের যে অঞ্চলে বসবাস করি সেখানে প্রায়ই, বিশেষ করে এই শীতের মরসুমে, সন্ধ্যার পর নানা ধরনের ক্রীড়া ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চলে অনেক রাত পর্যন্ত। এই সুদীর্ঘ সময় ধরে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে যে ভাবে তারস্বরে মাইক বাজানো হয় তা সত্যিই পীড়াদায়ক। অনুষ্ঠানের আগে বেশ কয়েক দিন ধরে চলে একনাগাড়ে প্রচারপর্ব। এলাকাবাসীর কাছে যা এক সময় বিরক্তিকর হয়ে দাঁড়ায়। আমার বিনীত অনুরোধ, অনুষ্ঠান হয় হোক, কিন্তু মাইকের ব্যবহার সংযত করা হোক।

সমীর কুমার ঘোষ

কলকাতা-৬৫

স্কুলের সময়

আমাদের রাজ্যে বিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের শুরু ১০:৩০ মিনিট (প্রার্থনা) এবং শেষ অষ্টম পিরিয়ড-সহ ৪:৩০ মিনিট পর্যন্ত। শীতকালে অষ্টম পিরিয়ড ৪:৩০-এ শেষ হলে ছাত্রছাত্রীরা বাড়ি ফিরে বিশ্রাম বা খেলাধুলার সময়টুকু পায় না, সন্ধ্যা গড়িয়ে আসে। আবার হয়তো ব্যাগ কাঁধে টিউশনি ছুটতে হয়। বিদ্যালয়ে যদি পঠনপাঠন ৯:৩০ মিনিটে শুরু হয় এবং ৩:৩০ মিনিটে শেষ হয়, তবে ছাত্রদের বিশ্রাম নেওয়া ও খেলাধুলা দুইই সময়ে হতে পারে।

নিমেষচন্দ্র মাইতি

বেলদা, পশ্চিম মেদিনীপুর

জমির পরচা

আমি দমদম পুরসভার, সুলতানপুর মৌজার স্থায়ী বাসিন্দা। এই মৌজার সকল বাসিন্দাদের নিজ নিজ জমির মালিকানা ৫০ বৎসর বা ততোধিক কালের কিন্তু আমাদের নিজেদের জমির মালিকানা থাকা সত্ত্বেও ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতর থেকে সকলকে জমির পরচা দেওয়া হয়নি, নিরলস ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা ও মধ্যস্বত্বভোগীদের সাহায্যে অর্থবলে কিছু ব্যক্তি নিজ নিজ পরচা তৈরি করালেও সবার সে ক্ষমতা নেই। যদিও আমরা আমাদের প্রদেও খাজনা সেই জমির পুরনো মালিকের নামে প্রতি বছর আজ অবধি জমা করে চলেছি। প্রায় চার অথবা পাঁচ বৎসর পূর্বে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে এক বার জমি জরিপের কাজ সম্পূর্ণ করা সত্ত্বেও কেন এক অজ্ঞাত কারণে আজ অবধি আমরা আমাদের জমির পরচা পাইনি।

মৃণাল রায়

কলকাতা-৭৯

ডিসপ্লে

আমি ১৯৬৯ সাল থেকে বারুইপুর-শিয়ালদহ বিভাগে নিত্যযাত্রী। বিগত বছর দেড়েক যাবৎ ডিসপ্লেগুলোর অব্যবস্থা ভীষণ পীড়াদায়ক। তিন দিকে তিনটি বড় ডিসপ্লে থাকলেও, একটি বড় ডিসপ্লেতে মাত্র ট্রেনের সূচনা ঘোষিত হয়। বাকি একটিতে রেলের গুণগান বিরক্তিকর ভাবে একনাগাড়ে চলছে। আরও একটি বড় ডিসপ্লে (যেটা আগে ব্যবহার হত এবং যাত্রীদের সবচেয়ে বেশি সুবিধা হত) বর্তমানে বধির হয়ে পড়ে আছে। যেটি এখন একমাত্র ব্যবহার করা হয়, সেটা এমন কোণে অবস্থিত, যাত্রীদের পক্ষে একটা নির্দিষ্ট স্থানে না দাঁড়ালে দেখা যায় না।

প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের সামনে ডিসপ্লে থাকলেও, ১৪এ প্লাটফর্মে কোনও ডিসপ্লে না থাকায় অসুবিধা হয়। ১৪ নম্বরের পরে কেন যে ১৫ নম্বর না লিখে ১৪এ তথা XX লেখা হয় বুঝলাম না। যাত্রীদের সুবিধার্থে ১৫ নম্বর লিখলে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

আরও একটি হৃদয়বিদারক দৃশ্য গতকাল মনকে নাড়া দিয়ে গেল। এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের পাশে রেলের সুলভ শৌচাগারে গিয়ে শুনলাম, কর্মীটি খুব উঁচু গলায় এক জনকে কড়া কড়া কথা বলছে। হয়তো লোকটি দাবিমতো টাকা দিতে অপারগ। এমনিতেই এরা মলত্যাগের মূল্য হিসাবে পাঁচ টাকা নেয়।

ফিরে দেখি, লোকটার একটি পা কাটা ও সদ্য ব্যান্ডেজ করা। তাড়া থাকায় তর্ক না করে চলে এলাম। তবু মনে মনে এ প্রশ্ন ঠোকরাতে থাকে যে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য যদি রেলযাত্রায় এত সুবিধা থাকে, তবে কেন এই মানুষটিকে অপদস্থ হতে হবে?

আশিস্ ভট্টাচার্য

আটঘরা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

ভাঙা রাস্তা

গত তিন চার বছর ধরে জ্যাংড়া ঘোষপাড়া এলাকায় বাজার সংলগ্ন রাস্তাটি ভেঙেই চলেছে। যাতায়াত দুঃসহ। এ রকমই থাকবে?

কুমার মুখোপাধ্যায়

বাগবাজার, কলকাতা-৩

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,

কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

Strike Bharat Bandh 2019 Problem
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy