আতঙ্কের কান্না।—নিজস্ব চিত্র।
কোনও কোনও ঘটনা হঠাত্ করে বেআব্রু করে দেয়। বেশ চলছিল সব, আপাত শান্তিকল্যাণ, কোথাও কোনও ঝড়ের চিহ্নমাত্র নেই, আচমকাই পর্দাটা সরে যায় এবং তখন আয়নায় দেখা যায় আসলে এক কঙ্কাল দাঁড়িয়ে আছি। মুর্শিদাবাদ তেমনটা করল। বেআব্রু করে দিয়ে গেল এ রাজ্যের শুধু স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকেই নয়, সামগ্রিক শৃঙ্খলার চেহারাটাকেও।
দৃশ্যটা শুধু কল্পনা করা যাক। অনেক রোগী, অনেক মানুষ, অনেক সদ্যজাত শিশু, অনেক আত্মীয়, জীবনের সন্ধানে ছুটে চলা আস্ত একটা সময়কে নাড়িয়ে দিয়ে গেল মুর্শিদাবাদ হাসপাতালে বিপর্যয়। প্রাকৃতিক নয়, নিতান্তই পার্থিব। এসিতে কেন যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ছিল না, হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কেন সেখানে শর্ট সার্কিট হয়, কেন আগুন লেগে যায়, আগুন লাগলে তার মোকাবিলায় কেন ন্যূনতম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকে না, কেন আপত্কালীন দরজা বন্ধ থাকে, কেন পরিকাঠামো নেই, প্রশাসন নেই, পরিষেবা নেই— এই প্রশ্নগুলো কিন্তু তোলার সময় এসেছে।
আমরা জানি, এ বার নড়েচড়ে বসবে প্রশাসন, ক্ষতিপূরণ হবে, হবে তদন্ত কমিটি। অন্য হাসপাতালগুলোর ব্যবস্থা যথাযথ কি না খতিয়ে দেখার বিজ্ঞপ্তি জারি হবে, আগামী দু’দিন মিডিয়া এবং সমাজে আলোড়ন থাকবে। তার পর আবার আস্তরণ, শুধুই ধুলোর আস্তরণ পড়বে। বেআব্রু ব্যবস্থাটা অতএব আরও এক বার বিরোধীর অভিযোগ এবং শাসকের ক্ষতিপূরণের তরজায় ধীরে ধীরে ঢাকা পড়ে যাবে।
ঢাকা পড়বে না অন্তত দু’জনের পরিবার-স্বজনের কুলে। যারা অপদার্থ এক প্রশাসনিক ব্যবস্থার বলি হয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ হাসপাতালে। জীবনের খোঁজে এসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy