প্রতীকী ছবি।
আগেও লিখতে হয়েছে এ কথা, আবার লিখতে হচ্ছে— অসহিষ্ণুতার বিপদ শুধু সাম্প্রদায়িকতার রূপ ধরে আসে না, বিপদ রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতার রূপ ধরেও আসে।
রক্তাক্ত পাড়ুই ফের গণতন্ত্রের বধ্যভূমি হয়ে ওঠার চেষ্টায়। হিংসা, বারুদের গন্ধ, গুলি, বোমা, আর্তি— বাতাস ক্রমশ ভারী বীরভূমের প্রত্যন্ত প্রান্তে। ফের সেই গ্রাম দখলের আগ্রাসন, ফের সেই তৃণমূল বনাম বিজেপি। ২০১৪ সালেও মাখড়া, হাঁসড়া, চৌমণ্ডলপুরের বাতাস এ ভাবেই ভারী হয়ে উঠেছিল বারুদের গন্ধে। বছর কয়েকের বিরতি নিয়েই আবার ফিরল সেই আতঙ্ক। পঞ্চায়েত নির্বাচন এগিয়ে আসছে বাংলায়। দিগন্তে লিখন স্পষ্ট— আরও তাতবে বাতাস, আরও ঝরবে রক্ত, যদি না কঠোর নিরপেক্ষতার পরিচয় দেয় প্রশাসন।
এই হিংসা নিতান্তই অসহিষ্ণুতাজনিত। বিরোধী কণ্ঠস্বরের বিন্দুমাত্র অস্তিত্ব দেখলেই নিঃশেষে মুছে দিতে চায় যে অসহিষ্ণু রাজনৈতিক মানসিকতা, রক্তাক্ত পাড়ুই সেই মানসিকতারই ফসল। এমন হিংসার সাক্ষী আগে কখনও হতে হয়নি, তেমন নয় মোটেই। বাম জমানায় কংগ্রেস আক্রান্ত হয়েছে, তৃণমূল আক্রান্ত হয়েছে। কেশপুর, গড়বেতা, সিহড়-গোপীনাথপুর, আরামবাগ, গোঘাট, পুরশুড়া বা মুর্শিদাবাদ— শিরোনামে এসেছে বার বার। তৃণমূল আমলে প্রথমে আক্রান্ত হয়েছে বাম-কংগ্রেস। আজ বিজেপির উত্থানের আভাস মিলতেই আক্রান্ত বিজেপি। আজ পাড়ুই শিরোনামে, কাল হয়তো অন্য কোনও জনপদ।
গণতন্ত্রে এই রাজনীতির কোনও স্থান যে নেই, হিংসার হোতারা নিজেরাও তা জানেন। শুধু এই জমানায় নয়, যুগে যুগেই জানেন। তবু হিংসা থাবা বসায়, তবু রক্ত ঝরে। সময় যত এগোয়, হিংসার বহর তত বাড়ে, হিংসার তীব্রতা তত অসহনীয় হয়। রাজনৈতিক বোধে অভাবনীয় দুর্বলতা না থাকলে এমন কাণ্ড ঘটানো যায় না। রাজনৈতিক ভাবে অন্ধ না হলে গণতন্ত্র আর ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কারও কাছে সমার্থক হয়ে উঠতে পারে না। এই রাজনীতি নিপাত যাক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy