ছবি: পিটিআই।
দিল্লি থেকে যখন ফিরবেন এ বার, তখন মুখে হাসি নিয়ে ফেরার অবকাশটা তৈরি রইল তাঁর সামনে। দানা বেঁধে গিয়েছে আন্দোলনটা। প্রথম দফায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য না পেয়েও হাল ছাড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়াস নিরন্তর ছিল, ফলটা পেলেন। দ্বিতীয় দফায় দিল্লিতে বিরোধী ঐক্যের প্রশস্ত একটা ছবি তৈরি হতে দেখলেন।
নোট বাতিল উত্তর পরিস্থিতিতে সবচেয়ে উচ্চকিত প্রতিবাদ তাঁরই। প্রথম থেকেই তিনিই সর্বাপেক্ষা সরব। এখনও তিনিই অঘোষিত কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু এখন আর তখনের ফারাকটা সাদা চোখেই ধরা পড়ছে। অভিযোগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতির দরবারে হাজির হতে প্রথম দফায় দিল্লি গিয়েছিলেন যখন, পাশে পেয়েছিলেন শুধু শিবসেনা, ন্যাশনাল কনফারেন্স আর দ্বিধান্বিত আম আদমি পার্টিকে। পরবর্তী কয়েক দিনে বিপুল বদলে গেল ছবিটা। মমতার প্রথম দফার সফরকালে সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ করতে দেখা যাচ্ছিল শুধুমাত্র তৃণমূল সাংসদদের। আর এ বার তিনি দেখলেন পনেরোটি দলের সম্মিলিত বিক্ষোভ, দু’শো সাংসদের অংশগ্রহণ, সেই সংসদ চত্বরেই, সেই গাঁধীমূর্তির পদমূলেই।
সাফল্যটা কিন্তু অনমনীয় মানসিকতারই। উল্লেখযোগ্য সহযোগী মেলেনি বলে অবস্থান বদলাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই কালো টাকার কালি গায়ে লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে বিচলিত হয়ে পড়েননি। অবস্থানে অনড় থেকেছেন, বিরোধিতার স্বর আরও তীব্র করেছেন, আক্রমণের ভাষা ক্রমশ শানিয়ে নিয়েছেন। অদম্য এবং সরলরৈখিক এই অভিমুখ অন্য বিরোধী দলগুলিকে স্পষ্ট বিরোধিতার পথ বেছে নিতে কিছুমাত্র প্রেরিত করেনি বললে সত্যের অপলাপ হয়। বিরোধীর উঠোনে সহযোগিতা-সমঝোতা-মৈত্রীর যে প্রসারিত পরিসরটা আজ দৃশ্যমান, তার সংঘটনের অনেকখানি কৃতিত্বই তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করতে পারেন।
নরেন্দ্র মোদী ঠিক পথে, না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সে বিতর্ক অন্য। তর্ক বা চর্চা আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কৌশলের ঠিক-ভুল নিয়ে। সে তর্কে কিন্তু প্রমাণিত হল, লক্ষ্যে অটল থাকার নীতি সফল। আর সেই সাফল্যের হাত ধরে জাতীয় রাজনীতির অন্যতম চর্চিত চরিত্র আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy