Advertisement
E-Paper

উত্তরে বিজেপির ঝুলিতে ২, হাতে ২৬

ঝুলিতে ২, কিন্তু হাতে ২৬। দিনের শেষে উত্তরবঙ্গের বিজেপি নেতাদের খাতার পাতায় হিসেবটা এমনই।

সৌমিত্র কুন্ডু ও সংগ্রাম সিংহ রায়

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৬ ০২:৩৮

ঝুলিতে ২, কিন্তু হাতে ২৬। দিনের শেষে উত্তরবঙ্গের বিজেপি নেতাদের খাতার পাতায় হিসেবটা এমনই।

দু’টি আসন পেয়ে উত্তরবঙ্গে এ বারই প্রথম খাতা খুলেছে বিজেপি। তবে দলের নেতাদের দাবি, উত্তরের অন্তত ২৬টি আসনে জয়-পরাজয় নির্ধারণ করেছেন তাঁদের দলের প্রার্থীরা। ক’দিন আগেই শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের সব প্রার্থীকে ডেকে বৈঠক করেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সে দিনও এমনই আভাস দিয়েছিলেন দিলীপবাবু। তিনি দাবি করেছিলেন, জিততে না পারলেও জয়-পরাজয়ের দিক নির্দেশ করবে বিজেপি প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট। মালদহের বৈষ্ণবনগর এবং আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট আসন দু’টি বিজেপি জিতেছে এবং জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, মালদহ, আলিপুরদুয়ার এবং উত্তর দিনাজপুরের অন্তত ২৬টি আসনে তারাই নির্ণায়ক শক্তি।

জলপাইগুড়ি জেলার ছটি এবং মালদহের অন্তত চারটি আসনে এমনই পরিস্থিতি। জলপাইগুড়ি, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি, ধূপগুড়ি, মালবাজার এবং নাগরাকাটা আসনে প্রার্থীরা যে ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন, তার থেকে বিজেপির ভোট বেশি। গৌতম দেব ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি থেকে জিতেছেন প্রায় চব্বিশ হাজার ভোটে। গৌতমবাবুর কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন ২৬,১৯৫টি ভোট।

পাশের কেন্দ্র রাজগঞ্জে তৃণমূল জিতেছে ১৪,৬৭৭ ভোটে। এখানে বিজেপি পেয়েছে ১৭,৮১১টি ভোট। ধূপগুড়ি কেন্দ্রে জয়ী প্রার্থীর ব্যবধানের দ্বিগুণ ভোট পেয়েছে বিজেপি। দিনের শেষে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান থেকে বিজেপির ভোট বেশি ছিল ধূপগুড়ি, মালবাজার, নাগরাকাটায়। শুধু তৃণমূল নয়, পদ্মফুলে যাওয়া ভোট স্বস্তি দিয়েছে কংগ্রেস তথা জোট প্রার্থীকেও। জলপাইগুড়ি সদর আসনে ৫১৫৭ ভোটে জিতেছেন জোট প্রার্থী সুখবিলাস বর্মা। বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন ১৬,০২৯ ভোট। আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে জিতেছেন তৃণমূলের সৌরভ চক্রবর্তী। তাঁর রাজনৈতিক গুরু বিশ্বরঞ্জন সরকারের থেকে ১২,০২৩ ভোট পেয়েছেন। এখানে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন ২০ হাজার ৯৬৭ ভোট। কুমারগ্রামে প্রাক্তন পুলিশ কর্তা তৃণমূল প্রার্থী জেমস কুজুর এবং ফালাকাটার তৃণমূল প্রার্থী অনিল অধিকারীর কপালেও একই ভাবে শিকে ছিঁড়েছে। দার্জিলিং জেলায় বিজেপি সমর্থিত মোর্চা প্রার্থীরা তো আছেনই। এমনকী, অশোক ভট্টাচার্যও যেখানে ১৪ হাজার ব্যবধানে ভাইচুং ভুটিয়াকে হারিয়েছেন, সেখানে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন ১৯ হাজারের বেশি ভোট।

কোচবিহারে বিধানসভা ভোটের মাসখানেক আগে থেকে ক্যাম্প করে পড়ে ছিলেন আরএসএসের প্রচারকরা। তার প্রভাব ভোটে পড়েছে বলে দাবি বিজেপির। এবং তাঁরা জেলার প্রায় সব আসনেই তারাই নির্ণায়ক হয়েছেন। নাটাবাড়ি কেন্দ্রে তৃণমূল ১৬ হাজারের কিছু বেশি ভোটে জয়ী হয়। ওই আসনে বিজেপি পেয়েছে ২১,৫৪০টি ভোট। মেখলিগঞ্জে বিজেপির প্রার্থী পেয়েছেন ২৩,৩৩৫ টি ভোট। দিনহাটায় তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ জয়ী হন ২১ হাজার ৭৯৩ ভোটে। বিজেপির ভোট ২৫,৫৯৮। সিতাই, শীতলখুচি, তুফানগঞ্জেও একই সমীকরণ। কোচবিহার উত্তর কেন্দ্রেও ৩০,০২৫টি ভোট পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। ওই আসনে অবশ্য ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী জিতেছেন বারো হাজারের কিছু বেশি ভোটে।

আমের জেলা মালদহেও এ বার পদ্ম ফুটেছে। বৈষ্ণবনগর আসনে জিতেছে বিজেপি প্রার্থী। মালদহের মানিকচকে হেরেছেন তৃণমূলের সাবিত্রী মিত্র। জয়ের ব্যবধান ১২,৬০৩। ওই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছে ২০,৫৪৯টি ভোট। বিদায়ী মন্ত্রীর এক ছায়াসঙ্গীর কথায়, ‘‘বিজেপি আমাদের পথে কাঁটা বিছিয়ে দিল।’’ গাজল, হবিবপুর এবং মালতীপুরে জোট প্রার্থীরা যত ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন, তার থেকেও বিজেপির প্রাপ্ত ভোট বেশি। উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘিতে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান থেকে বিজেপি প্রার্থীর ভোট বেশি। চাকুলিয়া, হেমতাবাদ, ইসলামপুরেও জোটের প্রার্থীর জয়ের মার্জিন থেকে বিজেপি প্রার্থীর ভোট বেশি।

মোট কথা, উত্তরে এ বার নিজের উপস্থিতি জানাতে শুরু করল পদ্ম।

(সহ প্রতিবেদন: নারায়ণ দে, নমিতেশ ঘোষ, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিজিৎ সাহা)

assembly election 2016 BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy