Advertisement
E-Paper

বাইরে জটলা, ভিতরেই বসে জওয়ানেরা

বুথ থেকে একশো মিটার দূরে চাটাই-মাদুর বিছিয়ে জমিয়ে বসেছেন তৃণমূলের কর্মীরা। বুথের ভিতরে নিজেদের মধ্যে গল্পে মশগুল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। বাইরে জড়ো হওয়া শাসক দলের কর্মীদের হঠিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কোনও হেলদোল নেই।

দেবব্রত দাস

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৬ ০০:২৬
সারেঙ্গার খয়েরপাহাড়িতে। ছবি:উমাকান্ত ধর।

সারেঙ্গার খয়েরপাহাড়িতে। ছবি:উমাকান্ত ধর।

বুথ থেকে একশো মিটার দূরে চাটাই-মাদুর বিছিয়ে জমিয়ে বসেছেন তৃণমূলের কর্মীরা। বুথের ভিতরে নিজেদের মধ্যে গল্পে মশগুল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। বাইরে জড়ো হওয়া শাসক দলের কর্মীদের হঠিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কোনও হেলদোল নেই।

রাজ্যে প্রথম দফার ভোটে সোমবার বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের তিন কেন্দ্র রানিবাঁধ, রাইপুর ও তালড্যাংরায় নানা বুথে দেখা গেল এমন ছবিই। ভোটের আগে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘ওরা তিন দিনের অতিথি।’’ সেই বাহিনীর জওয়ানদের এ দিন বুথ চত্বরের বাইরে কার্যত কোনও সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেল না। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরাও।

এ দিন সকালে ভোট শুরু হতেই লম্বা লাইন পড়ে বুথের সামনে। তবে সকাল ১০টার পরে তেমনটা আর ছিল না। ভোটগ্রহণের শেষ পর্বে আবার খানিকটা কিছুটা ভিড় জমে। অনেক বুথে তৃণমূল ছাড়া অন্য কোনও দলের এজেন্টের দেখা মেলেনি। এলাকায় ছিল না কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলও। বুথের ভিতরে এক জায়গায় বসে-দাঁড়িয়েই কর্তব্য সেরেছেন তাঁরা। আর বুথের বাইরে পাহারায় রাজ্য পুলিশ।

এ দিন সকাল ৭টা নাগাদ রানিবাঁধের কালিখেন্ন্যা বুথে দেখা গেল, ভোটারদের লম্বা লাইন। বুথের ভিতরে ও বাইরে কড়া পাহারায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু বুথ থেকে বেরোলেই রাস্তায় আর জওয়ানদের দেখা নেই। রানিবাঁধের দুবরাজপুর, মাজগেড়িয়া, ছেন্দাপাথর বা রাইপুর বিধানসভার ফুলকুসমা, মেলেড়া, বড়কলা, ধর্মপুর— সর্বত্র এক চিত্র। ভোটারেরা যাতে নির্ভয়ে বুথে যেতে পারেন সে জন্য রাস্তায় বা গ্রামে বাহিনীকে টহল দিতে দেখা যায়নি।

রাইপুরের ফুলকুসমা হাইস্কুলের বুথের সামনে বসেছিলেন রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের কর্মীরা। খানিকটা দূরেই পতাকা, ফেস্টুন নিয়ে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা চুটিয়ে বসে জটলা করছিলেন। সিপিএম বা বিজেপির এজেন্টরা বুথে থাকলেও তাঁদের তেমন প্রতিবাদ করতে দেখা গেল না। দুপুরে তালড্যাংরার সিমলাপাল ব্লকের জোড়িষ্যা প্রাথমিক স্কুলে বুথের পাশেও জমায়েত করেছিলেন তৃণমূলের কর্মীরা। বাহিনীর জওয়ানেরা রইলেন বুথের ভিতরেই। শাসকদলের কর্মীদের সরিয়ে দিতে উদ্যোগী হতে দেখা গেল না তাঁদের। একই ছবি তালড্যাংরা মনিপুর চণ্ডীমাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের বুথেও। সেখানে তৃণমূল কর্মীরা জড়ো হয়েছিলেন বুথে ঢোকার মুখে রাস্তার উপরে। পুখুরিয়া-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করলেন, গ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সে ভাবে টহল দিতে দেখা যায়নি। ভোটের দিন শুধু বুথেই দেখা গেল।

রাইপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী দিলীপ হাঁসদার অভিযোগ, “বুথেই তো শুধু বাহিনীকে দেখা গেল। এলাকায় ঘোরাঘুরি যেটুকু করেছে তা রাজ্য পুলিশ। তৃণমূলের লোকেরা বুথের বাইরে রাস্তা আটকে জটলা করে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। সব দেখেও কেন্দ্রীয় বাহিনী কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” বাঁকুড়ার জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, “প্রায় ১৭টি বুথে কিছু অভিযোগ পেয়েছিলাম। সেখানে আধিকারিকদের পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগের সত্যতা মেলেনি।’’ তাঁর দাবি, কমিশনের নির্দেশ মেনেই প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল।

(সহ-প্রতিবেদন: রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়)

assembly election 2016 west bengal central force
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy