Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
physically challenged

দৃষ্টিহীনদেরও ভোটে কাজ দেওয়ায় ক্ষোভ

এই নিয়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:২৪
Share: Save:

তাঁরা শিক্ষক। তবে তাঁদের কেউ সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তিহীন, কেউ বা ৭৫% শতাংশ দৃষ্টিশক্তিহীন, আবার কারও একটি হাত নেই, পোলিয়োর কোপে কেউ বা ভাল করে চলতে পারেন না। অথচ এই ধরনের শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের উপরেও বিধানসভা ভোটে বিভিন্ন দায়িত্ব চাপিয়ে নিয়োগপত্র পাঠিয়ে দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এই নিয়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষা শিবিরের প্রশ্ন, সব শিক্ষককে ভোটের ডিউটি দেওয়ার নিয়ম যদি থাকেও, যথেষ্ট সাধারণ শিক্ষক তো আছেনই। তা হলে প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের অব্যাহতি দেওয়া হবে না কেন? প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের অভিযোগ, ভোট-দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য তাঁদের হন্যে হয়ে জেলার প্রশাসনিক অফিসে ঘুরতে হচ্ছে।

কুলতলির ৭৫% দৃষ্টিহীন শিক্ষক কিংশুক হালদার জানান, তাঁর কাছে ভোটের কাজের নিয়োগপত্র আসে ১৮ ফেব্রুয়ারি। ১৯ তারিখেই সোনারপুর বিদ্যাপীঠে তাঁর ভোট-প্রশিক্ষণ ছিল। অব্যাহতি চেয়ে আবেদনপত্র এবং প্রতিবন্ধী শংসাপত্র-সহ সব নথি ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে দেখানোর পরে তাঁকে বলা হয়, আলিপুরে জেলার প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে কথা বলতে হবে। প্রশাসনিক ভবনে গেলে আধিকারিকেরা জানান, সরকারি হাসপাতালে ফের পরীক্ষা করিয়ে তাঁর প্রতিবন্ধকতার প্রমাণ আনতে হবে।” কিংশুকবাবুর প্রশ্ন, “আমি তো প্রতিবন্ধী কোটাতেই শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছি। আমাকে ফের কেন মেডিক্যাল টেস্ট করতে হবে?” মথুরাপুরের একটি স্কুলের শিক্ষক নিলু মিস্ত্রি সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন। তাঁরও অভিজ্ঞতা যে কিংশুকবাবুর মতোই, তা জানিয়ে ওই শিক্ষক বলেন, “আমি জানি, শেষ পর্যন্ত আমাকে ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। এর আগেও দু’বার বিধানসভা ভোটেও আমাকে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি পেতে হয়েছে। আমার প্রশ্ন, কেন আমাদের বার বার এই হয়রানির শিকার হতে হবে? ভোটের ডিউটির জন্য আমাদের নাম নির্বাচন দফতর থেকে পাঠানো হবেই বা কেন?’’ কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানান, ভোটের ডিউটির জন্য নির্বাচন দফতর থেকে তাঁদের কাছে শিক্ষকদের নাম চেয়ে পাঠানো হয়। সব শিক্ষকের নামই পাঠাতে হয় কমিশনের অফিসে। প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের নামের পাশে কে কেমন প্রতিবন্ধী, কে কত শতাংশ প্রতিবন্ধী, তা লিখে দেন তাঁরা। “প্রধান শিক্ষকেরা প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের সবিস্তার তথ্য দেওয়া সত্ত্বেও কমিশন থেকে বার বার তাঁদের নাম পাঠিয়ে হয়রান করা হচ্ছে কেন,” প্রশ্ন শিক্ষক-নেতা অনিমেষ হালদারের। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক, কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “মাসখানেক আগে কমিশনের প্রধান দফতরে স্মারকলিপি দিয়ে জানিয়েছিলাম, প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। কিন্তু তা হয়নি।’’

এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও) আরিজ আফতাবকে ফোন-এসএমএস করা হয়েছিল। সাড়া মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

State Election Commission physically challenged
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE