Advertisement
E-Paper

সুরক্ষার বজ্র আঁটুনি, ভোটের আঁচও ঠান্ডা

শেষ কবে এমন নিরুত্তাপ শিল্পাঞ্চল দেখেছেন, মনে করতে পারছেন না এলাকার প্রবীণেরা।আজ সোমবার, ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ৩০৮ বর্গকিমি এলাকার ১২টি কেন্দ্রে বিধানসভার নির্বাচন। মোট ভোটার ৪৮ লক্ষ।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিতান ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৩৭

শেষ কবে এমন নিরুত্তাপ শিল্পাঞ্চল দেখেছেন, মনে করতে পারছেন না এলাকার প্রবীণেরা।

আজ সোমবার, ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ৩০৮ বর্গকিমি এলাকার ১২টি কেন্দ্রে বিধানসভার নির্বাচন। মোট ভোটার ৪৮ লক্ষ। কিন্তু নির্বাচনী এলাকাগুলিতে কার্যত ভোটের কোনও উত্তাপ নেই। আছে, তীব্র দাবদহের উত্তাপ। তাতেই এখন মাথা ঝাঁ ঝাঁ করছে শহরবাসীর।

কিন্তু দমদম থেকে বীজপুর— এত বড় এলাকায় মানুষ এতকাল ভোটের যে চেহারা দেখে এসেছেন, এ বার তার থেকে অনেকটাই আলাদা ছবিটা। কোথাও তেমন অভিযোগও হয়নি। পুলিশ জানায়, রবিবার রাত পর্যন্ত অভিযোগ জমা পড়েছে ২৫০-৩০০টি। সব মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে সঙ্গে সঙ্গে। ফলে অনেকের মত, শিল্পাঞ্চলে ভোটের দামামা এ বার তেমন ভাবে বাজেনি।

দামামা না-বাজার পিছনে নির্বাচন কমিশনের যথেষ্ট কড়া নজরদারির কথাই বলছেন ভোটারেরা। তাঁদের যুক্তি, বাম আমলে শেষ কয়েক বার এই শিল্পাঞ্চলের মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারেননি। ২০১১-য় সুযোগ আসতেই মানুষ ভোট দেন। উল্টে যায় বাম সরকার। কিন্তু তার পরে একটি লোকসভা ও একটি বিধানসভা নির্বাচনে শিল্পাঞ্চল ফিরে গিয়েছে পুরনো চেহারাও। তৃণমূলের আমলেও শেষ দু’টি নির্বাচনে বুথে-বুথে ব্যাপক রিগিং হওয়ায় ভোট দিতে পারেননি সাধারণ ভোটারেরা। সে কথা মাথায় রেখেই শিল্পাঞ্চলে নজরদারি চার গুণ বাড়িয়েছে কমিশন। অনেকের মতে, তাতেই ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন মহল্লা।

শনিবার বিকেল থেকেই শিল্পাঞ্চল জুড়ে মাইকে বারবার ১৪৪ ধারা বলবৎ করার কথা প্রচার করা হয়েছে। প্রবীণ নাগরিকদের কথায়, সব নির্বাচনের সময়েই এই আইন লাগু থাকে। কিন্তু এই প্রথম পুলিশকে বলতে শোনা গেল, ‘১৪৪ ধারা ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ পাশাপাশি, যে ভাবে থানা এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী নেমেছে দলগুলির ভোট মেশিনারিকে ভয় ধরিয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

পুলিশ সূত্রে খবর, গোটা শিল্পাঞ্চলে চারটি এলাকা বছরভর উত্তেজনাপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত— কামারহাটি, টিটাগড়, ভাটপাড়া ও জগদ্দল। এই চার এলাকাতেও বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পুলিশকর্তারা জানান, শিল্পাঞ্চলে ১৩৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানো হয়েছে। মোতায়েন হয়েছে চার হাজার পুলিশকর্মীও। রয়েছেন ৩৫০০-র বেশি হোমগার্ড এবং এনভিএফ কর্মীও। কমিশনের নির্দেশ মেনে এই প্রথম কন্ট্রোল রুমে থাকছে পাঁচটি আলাদা টিভি সেট। সেগুলিতে পাঁচটি চ্যানেলে চোখ রাখা হবে। যাতে কোনও চ্যানেলে কোনও অশান্তির খবর দেখানো হলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

তবে রাস্তাঘাটে বোমাবাজি বা সন্ত্রাস না হলেও বিরোধীদের চোরাগোপ্তা ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন এলাকায়। অভিযোগ রয়েছে বহিরাগত ঢোকানোরও। পুলিশ কর্তারা অবশ্য বলেছেন, শিল্পাঞ্চলে বা়ড়াবাড়ি দেখলেই ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচনের দিন কোথাও বেচাল দেখলেই কড়া হাতে তার মোকাবিলা করার নির্দেশ রয়েছে কমিশনের। ফলে পুলিশকর্তারা জানিয়ে দিয়েছেন, গোলমাল দেখে আর চুপচাপ বসে থাকবে না পুলিশ।

গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন উত্তেজনাপ্রবণ মহল্লায় গিয়ে ভোটারদের ভোট দিতে সাহস জুগিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সঙ্গে ছিল পুলিশও। কিন্তু এত ব্যবস্থা সত্ত্বেও দু’টি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ভোটারদের মনে। প্রথমত, শিল্পাঞ্চলে ভোটের দিন এই ‘শান্তি’ কতক্ষণ বজায় থাকবে? দ্বিতীয়ত, নিজের ভোট নিজে দিতে পারবেন কি না? দুয়ের উত্তরই পরিষ্কার হয়ে যাবে সোমবার।

assembly election 2016 security
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy