Advertisement
০৪ মে ২০২৪

অঙ্ক কষেই সময় কাটছে প্রার্থীদের

নিজে বলছেন, জয় নিয়ে নিঃসংশয় তিনি। কিন্তু অনুগামীরা জয়ের ব্যবধান বা আসন সংখ্যা বললেই ভ্রূ কুঁচকে তাকাচ্ছেন। বলছেন, ‘‘এমন কেন মনে হচ্ছে? যুক্তি দিয়ে বলো।’’

জাহানারা খান। ভি শিবদাসন।রুনু দত্ত। নিজস্ব চিত্র।

জাহানারা খান। ভি শিবদাসন।রুনু দত্ত। নিজস্ব চিত্র।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৬ ০১:৩৫
Share: Save:

নিজে বলছেন, জয় নিয়ে নিঃসংশয় তিনি। কিন্তু অনুগামীরা জয়ের ব্যবধান বা আসন সংখ্যা বললেই ভ্রূ কুঁচকে তাকাচ্ছেন। বলছেন, ‘‘এমন কেন মনে হচ্ছে? যুক্তি দিয়ে বলো।’’

সকাল-সকাল উঠেই নিজের বাড়ির চেম্বারে বসছেন জামুড়িয়ার তৃণমূল প্রার্থী ভি শিবদাশন (দাশু)। মাঝে তো দু’টো রাত। চাপ বাড়ছে না কি? তাঁর জবাব, “নিজের কেন্দ্র নিয়ে কোনও টেনশন নেই। আমার জেলা ও রাজ্যে দল কত আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসছে, সেই অঙ্ক কষতে সময় চলে যাচ্ছে।” ভোট মিটতেই ছুটে গিয়েছিলেন কেরলের বাড়িতে। জানালেন, ৪ এপ্রিল সেখানে তাঁর বাবা কোমায় আচ্ছন্ন হন। কিন্তু ১১ এপ্রিল ভোট থাকায় সেই খবর তাঁকে জানাননি পরিবারের লোকজন। কিন্তু ভোট মেটার পরে খবর শুনেই ছুটে গিয়েছিলেন সেখানে। তিনি বলেন, ‘‘তার পর থেকে বাবাকে নিয়েই টেনশনে ছিলাম। তবে তাঁকে সুস্থ দেখে ফিরে এসেছি।’’

শিবদাসনের স্ত্রী রাধাদাসদেবী ব্যস্ত থাকেন পুজো-আচ্চা নিয়ে। ছেলে অনুরাগ সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। বাবা এখন বাড়িতে থাকায় সে বেশ খুশি। তবে বাড়িতে দলের কর্মী-সমর্থকদের ভিড় লেগেই রয়েছে। প্রার্থীর অনুগামীরা জানাচ্ছেন, মুখে না মানলেও টেনশন রয়েছেই। তা কাটাতেই রাজ্যের খবর নিয়ে বেশি আলোচনা করে সময় কাটাচ্ছেন। শিবদাসন বলেন, “এ রাজ্যে ভোটের খবর সংগ্রহে এসে এ বার দক্ষিণ ভারতের নানা সংবাদমাধ্যম আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। আমার কথা সেখানে প্রচার হওয়ায় কেরল থেকে আত্মীয়-পরিজনদের প্রচুর ফোন পেয়েছি।”

২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়ার মাঝেও জামুড়িয়ায় জিতেছিলেন সিপিএমের জাহানারা খান। এ বারও সেখানে দলের প্রার্থী তিনি। তাঁর দাবি, এ বার প্রচারে আরও বেশি সাড়া পেয়েছেন। তাই তিনি নিশ্চিন্ত। তাঁর বক্তব্য, “বামপন্থী ঘরানায় মানুষ। শিখেছি ব্যক্তি নয়, নির্বাচন লড়ে দল। আমাদের দল এ বার ক্ষমতায় ফিরছে। তাই আমিও জয় নিয়ে নিশ্চিত।” তিনি জানান, “সকালে উঠে স্কুলে যাচ্ছেন, পড়াচ্ছেন। বিকেলে আড্ডা, জনসংযোগ করে সময় কাটছে।’’

রানিগঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী নার্গিস বেগম আবার ভোটের পরে চলে গিয়েছেন কলকাতায়। সেখানে দিন কাটাচ্ছেন আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে। নার্গিস বলেন, “বরাবর যেমন দিনে পাঁচ বার নামাজ পড়ি, এখনও তাই করছি। যে যাই বলুক, দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) উন্নয়নের ফল আমরা পাবই। তাই রানিগঞ্জেও জয় নিশ্চিত।’’ তিনি জানান, তাঁর স্বামী, বিদায়ী বিধায়ক সোহরাব আলি এলাকায় দলের কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।

এই কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী তথা দলের রানিগঞ্জে জোনাল সম্পাদক রুনু দত্ত সকাল-সকাল হাঁটতে বেরোচ্ছেন। বাড়ি ফিরে স্নান সেরে পৌঁছে যাচ্ছেন দলের কার্যালয়ে। ডুবে যাচ্ছেন দলের নানা কাজে। হার-জিত যাই হোক, কর্মীদের মনোবল অটুট রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাঁর দাদা প্রভাতবাবু বলেন, “রুনু ছোট থেকেই মানসিক ভাবে খুব শক্ত। ওর কোনও টেনশন আছে কি না বোঝা যায় না।” রুনুবাবু শুধু বলেন, “দল যখন যা দায়িত্ব দিয়েছে, মাথা পেতে নিয়েছি। দলের কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমার কাছে টেনশনের। আর কোনও টেনশন নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE