Advertisement
১০ মে ২০২৪
Yogi Adityanath

Bengal Polls: ‘বিজেপি জিতলে শহরের ঐতিহ্য ফিরবে’, যোগী-আশ্বাসে ধন্দ চন্দননগরে

যোগী কোন ‘হারানো ঐতিহ্য’ ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছেন, তা অবশ্য সভায় উপস্থিত অনেকের কাছেই স্পষ্ট নয়।

শেষবেলার প্রচারে ফাঁকা মাঠে জাঙ্গিপাড়া বিজেপি প্রার্থী দেবজিৎ সরকারের সমর্থনে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

শেষবেলার প্রচারে ফাঁকা মাঠে জাঙ্গিপাড়া বিজেপি প্রার্থী দেবজিৎ সরকারের সমর্থনে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ছবি: দীপঙ্কর দে।

তাপস ঘোষ
চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫৩
Share: Save:

নির্বাচনী প্রচারে রবিবারই তিনি প্রথম চন্দননগরে পা দিলেন। জনসভায় তেমন লোক হল না। প্রায় ফাঁকা মাঠে এ শহরের ‘হারানো ঐতিহ্য’ ফেরানোর আশ্বাস দিয়ে গেলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। যা নিয়ে ধন্দ দেখা দিল।

চন্দননগরের বিজেপি প্রার্থী দীপাঞ্জন গুহর সমর্থনে মেরির মাঠের ওই জনসভায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ঐতিহ্যের শহর চন্দননগর। স্বাধীনতা আন্দোলনের কেন্দ্রভূমি এ শহর যেন ‘মিনি কাশী’। কিন্তু ৩৪ বছরে ঐতিহাসিক এ শহরের উন্নয়নের জন্য বাম সরকার কোনও কাজ করেনি। বর্তমান তৃণমূল সরকারও কিছু করেনি। এ বার বিজেপি সরকার এলে চন্দননগর নিজের হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে।’’

যোগী কোন ‘হারানো ঐতিহ্য’ ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছেন, তা অবশ্য সভায় উপস্থিত অনেকের কাছেই স্পষ্ট নয়। শহরের বিদ্বজ্জনদের একাংশও এ নিয়ে সংশয়ে। এ শহরের বাসিন্দা, বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার সম্পাদিকা বেবি তিওয়ারি অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘এ শহরের সঙ্গে বহু মনীষী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীর স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। সেই সব স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য এতদিন কিছু হয়নি, এটাই যোগীজি বলতে চেয়েছেন।’’

বিজেপির এই অভিযোগ মানতে চাননি বাম ও তৃণমূল নেতারা। তৃণমূল নেতা রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উনি চন্দননগর সম্পর্কে অবগত নন। বর্তমান সরকারের আমলে এই শহরের যে উন্নয়ন হয়েছে, সে বিষয়ে দলের নেতারা তাঁকে সঠিক তথ্য না-জানানোয় তিনি ওই মন্তব্য করেন।’’ সিপিএম নেতা হিরালাল সিংহের শ্লেষ, ‘‘উনি নিজের রাজ্যকেই ঠিক করে সামলাতে পারছেন না। চন্দননগরের ঐতিহ্য নিয়ে কী জানেন, যে এ সব বলছেন!’’

প্রশ্ন রয়েছে বিশিষ্টজনদেরও। বোসপাড়া-মুখার্জিবাগানের বাসিন্দা, গবেষক দেবাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ শহরের ঐতিহ্য বলতে যদি ফরাসি আমলের কথা বলা হয়ে থাকে, তা হলে যা আছে, যথেষ্ট। শুধু কিছু ব্যক্তি-মালিকানাধীন ভবন বা জমিদার-বাড়ি ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। সেগুলো সংস্কার করা যেতে পারে। পুরনো ঐতিহ্য সম্পর্কে না জেনেই উনি (যোগী) এ সব বলে দিয়েছেন বলে মনে হয়।’’

আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চা করেন এ শহরের গোন্দলপাড়ার বাসিন্দা তপনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘চন্দননগরের সমাজজীবন এবং সাংস্কৃতিক জগৎ ফরাসিদের হাত ধরে উন্নতি করেছিল। অনেকদিন ধরে তা বজায় ছিল। পরে কালের নিয়মে তা রূপ বদলায়। কিন্তু ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা উনিই বলতে পারবেন।’’

এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ চন্দননগরের কুঠির মাঠে যোগীর হেলিকপ্টার নামে। সেখান থেকে গাড়িতে তিনি সভাস্থলে আসেন। মঞ্চ থেকে এ দিন কংগ্রেসকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি যোগী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE