রাজ্যের মুখ্য সচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে শোকজ করার দাবি তুলল বিজেপি। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে মুখ্য সচিবের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্বাচন কমিশন শোকজ নোটিস পাঠিয়েছিল আসানসোলের জনসভায় নির্বাচনী বিধি ভাঙার অভিযোগে। মমতার বদলে বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় কমিশনকে সেই শোকজের জবাব দিয়েছেন। মুখ্য সচিবের এই কাজও বিধিভঙ্গের সামিল। তাই তাঁর শাস্তির দাবিতে সরব বিজেপি ও অন্য বিরোধী দলগুলি। বাসুদেববাবুকে এ দিন ‘মেরুদণ্ডহীন’ বলেও আক্রমণ করেছেন বিরোধীরা।
নির্বাচন চলাকালীন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা সরকার বা প্রশাসনকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগাতে পারেন না কোনও ভাবেই। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রশাসনকে এখন নিজের কাজে লাগাতে পারেন না। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাঁকে শোকজ করার পর, সেই নোটিসের জবাব দেওয়ার জন্য মমতা নির্দেশ দেন রাজ্যের মুখ্য সচিবকে। মুখ্য সচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় সেই নির্দেশ মেনে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠিয়ে দেন। সেই চিঠিতে ব্যাখ্যা দিয়ে জানানো হয়, আসানসোলের জনসভায় পৃথক আসানসোল জেলা গঠনের আশ্বাস দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি। কারণ, নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার অনেক আগেই রাজ্যের মন্ত্রিসভার বৈঠকে পৃথক আসানসোল জেলা গঠনের সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছিল। নবান্ন সূত্রের খবর, বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল নেত্রীর হয়ে যে জবাবি চিঠি কমিশনে পাঠান, তাতে কমিশনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে উষ্মাও প্রকাশ করা হয়। চিঠিতে লেখা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শোকজ করার আগে ভাল করে খোঁজখবর নেওয়া উচিত ছিল কমিশনের।
বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই চিঠির বিরুদ্ধেই সরব হয়েছে বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে শোকজ নোটিস পাঠানো হয়েছে, তার জবাব মমতাকেই দিতে হবে। রাজ্য সরকার মমতার হয়ে তার জবাব দিতে পারে না। নবান্ন সূত্রের খবর মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাঁর হয়ে শোকজের জবাব পাঠিয়ে দিতে। কিন্তু বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, সেই নির্দেশ মানা উচিত হয়নি বাসুদেবের। এই নির্দেশ মানলে যে বিধিভঙ্গ হবে, তা মুখ্য সচিবের জানা উচিত।
আরও পড়ুন:
অনুব্রত আজ যা যা বললেন
রাজ্য সচিবালয় সূত্রের খবর, বিধিভঙ্গ হওয়া রুখতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পালন না করার নজির একাধিক রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরে তৎকালীন মুখ্য সচিব সমর ঘোষ বেশ কিছু নির্দেশ পালন করেননি। রুল বুকে নেই বলে তিনি নির্দেশ পালন করতে অস্বীকার করেন। বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় সেই দৃঢ়তা দেখাতে পারেননি। বিরোধী দলগুলির তরফে মুখ্য সচিবের তীব্র সমালোচনা করা বলা হয়েছে, তাঁর মেরুদণ্ড নেই। তাই বিধিভঙ্গ হওয়ার তোয়াক্কা না করে, মুখ্যমন্ত্রীর সব নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy