রিগিং চললেও ব্যবস্থা নেননি, এই অভিযোগে বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে ধমকেছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ময়ূরেশ্বরের বিজেপি প্রার্থী লকেটের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল নির্বাচন কমিশন।
কমিশনের নির্দেশে প্রিসাইডিং অফিসার দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবারই লকেটের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬ (সরকারি কর্মীর কাজে বাধা), ৫০৬ (হুমকি দেওয়া বা ভীতি প্রদর্শন)-সহ একাদিক ধারায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করছে ময়ূরেশ্বর থানা।
বীরভূমের জেলাশাসক তথা জেলার নির্বাচনী আধিকারিক পি মোহন গাঁধী সোমবার বলেন, ‘‘রবিবার ময়ূরেশ্বরের প্রচন্দ্রপুর বুথে ঠিক কী ঘটেছিল, সেই মর্মে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার ময়ূরেশ্বরের রিটার্নিং অফিসারকে রিপোর্ট দিয়েছেন। সেই রিপোর্ট তিনি থানায় পাঠিয়ে দেন।’’ তার ভিত্তিতেই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
রবিবার ভোটের দিন ময়ূরেশ্বরের ২৬২টি বুথের ৬৪টিতে বিজেপি-র এজেন্ট না থাকা, নানা বুথে রিগিংয়ের অভিযোগ আসতে থাকায় কার্যত অস্থির হয়ে ওঠেন লকেট। তখনই দল সূত্রে তাঁর কাছে খবর যায়, প্রচন্দ্রপুর বিএসএম হাইস্কুলের ৩০ নম্বর বুথে রিগিং চলছে। তিনি ওই বুথে ছুটে যান। সেখানেই দেবজিৎবাবুর সঙ্গে অগ্নিশর্মা হয়ে কথা বলেন। ওই প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে রিগিংয়ে মদত দেওয়ার অভিযোগও তোলেন। দেবজিৎবাবু চুপই ছিলেন।
রাজনগরের জয়পুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবজিৎবাবু অবশ্য মুখ খোলেননি এ দিনও। তাঁর বা়ড়ি সিউড়ি হাসপাতালের অদূরে তিলপাড়া পঞ্চায়েত এলাকায়। এ দিন বিকেলে সেই বাড়িতে গেলে দেবজিৎবাবু সামনে আসতে চাননি। তবে, লকেটের আচরণে পরিবারের সম্মানহানি হয়েছে বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন তাঁর বাবা ত্রিদীপ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ছেলের কাছে যেটুকু জেনেছি, ছাপ্পা ভোট দেওয়ার কোনও ঘটনা আদৌ ঘটেনি। যদি কোনও অভিযোগ থেকেও থাকে, তা নিষ্পত্তির জন্য নির্বাচন কমিশন তো ছিলই।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘সংস্কৃতি জগতের সম্মানীয় মানুষের কাছে যে ভাবে অপমানিত হয়েছে আমার ছেলে, তাতে আমরা মর্মাহত। ছেলেও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত।’’ ত্রিদীপবাবুর দাবি, তর্ক জুড়লে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আঁচ করে লকেটের সামনে চুপ করে ছিলেন তাঁর ছেলে।
তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়া নিয়ে এ দিন মন্তব্য করতে চাননি লকেট। তবে ওই ঘটনা নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই বুথে ছাপ্পা ভোট হচ্ছিল। মানুষ ভোট দিতে পারছিলেন না। তাতে বাধা না দেওয়ায় প্রার্থী হিসেবে নয়, এলাকার মানুষের প্রতিনিধি হিসাবেই ওঁর কাজের প্রতিবাদ করেছি। আবেগতাড়িত হয়ে হয়তো কিছু রূঢ় কথা বলে ফেলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy