ভোট ফুরিয়েছে হপ্তা দুয়েক আগে। অবাধ ভোট করানোয় নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ধন্য ধন্য করছে আম-জনতা।
হঠাৎ যেন ঘুম ভাঙল তৃণমূলের বর্ধমান জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি স্বপন দেবনাথের! কমিশনের কাছে বাহিনীর বিরুদ্ধেই ভোটারদের উপরে লাঠিচার্জের নালিশ ঠুকলেন। মঙ্গলবার জেলা দফতরে বর্ধমান গ্রামীণের ১৬ জন দলীয় প্রার্থীকে ডেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ‘অত্যাচারে’র বর্ণনাও শোনেন স্বপনবাবু। তার পরেই নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠান (অভিযোগের প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে মুখ্যসচিবকেও)। অভিযোগ, ‘নির্বাচনের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী কারণ ছাড়াই সাধারণ ভোটারদের উপরে লাঠিচার্জ করেছে। ফলে অনেক ভোটার বুথমুখো হননি।
তা হলে কি কিছু বুথে পুনর্নির্বাচন চাইছে তারা? তৃণমূল অবশ্য বলছে, না। বিরোধীদের আবার প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় বাহিনী যদি এমন করেও থাকে, তা হলে এত দিন পরে অভিযোগ কেন? সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিকের তাই কটাক্ষ, “ভোটে যে ভরাডুবি হতে চলেছে, তার আঁচ পেয়েছেন তৃণমূল নেতারা। সেই আশঙ্কায় আগেভাগেই অজুহাত পেড়ে রাখছেন ওঁরা!”
মজার ব্যাপার, স্বপনবাবুর সঙ্গে এক মত নন দলের কিছু নেতাই। দলের অন্দরের খবর, এ দিনের বৈঠকে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, বাহিনীর ‘অত্যাচারে’ ভোট দিতে পারেননি, এমন ভোটারের খোঁজ নেই। বরং তাঁরা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরে রাজ্য পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ জানিয়েছেন। রায়নার তৃণমূল প্রার্থী নেপাল ঘোড়ুই বা মন্তেশ্বরের প্রার্থী সজল পাঁজা বলছেন, “বাহিনীর জন্য ভোটাররা ভোট দিতে পারেনি, এমন জানা নেই।” সূত্রের খবর, বর্ধমান দক্ষিণ, মেমারি, পূর্বস্থলী উত্তর, মঙ্গলকোট, মন্তেশ্বর, আউশগ্রাম, বর্ধমান উত্তর, রায়না, খণ্ডঘোষ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী বা তাঁদের নির্বাচনী এজেন্টরা জানিয়েছেন, বাহিনী কী ভাবে, কোন কোন বুথে কর্মীদের উপর ‘আক্রমণ’ করেছে। এক নেতার স্বীকারোক্তি, ‘‘কেউই চিঠিতে লেখেননি, বাহিনীর অত্যাচারে ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি।’’ বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “কেন্দ্রীয় বাহিনী নয়, পুলিশের বাড়াবাড়িতে গত বারের চেয়ে ৬% ভোট কম পড়েছে।”
তা হলে বাহিনীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ কেন?
স্বপনবাবু বলছেন, ‘‘কে, কী বলছেন জানি না। আমাদের প্রার্থীরা আগেই বাহিনীর বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলে চিঠি দিয়েছিলেন। এ দিনের বৈঠকের পরে জেলা থেকে ওই চিঠি দেওয়া হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy