রাজারহাটে শোয়ের সেটে ঢুকতেই বিরাট পুকুর পেরিয়ে নৌকোর পাশ কাটিয়ে এই ঘর। ঘরে ঢুকতেই গুটিকতক চেনা মুখ। হাত দিয়ে খাট পিটিয়েই গলার সুরে তাল মেলাচ্ছেন সা রে গা মা পা-এর প্রতিযোগীরা। বিভিন্ন জেলা থেকে তাঁরা এসেছেন। প্রত্যেকের জীবনে সঙ্গীতও এসেছে ভিন্ন ভাবে।
উত্তর দিনাজপুর থেকেই এসেছেন দুই প্রতিযোগী, তন্ময় বিশ্বাস ও স্নিগ্ধদীপ ভৌমিক। গানের সঙ্গে তন্ময়ের বন্ধুত্ব শুরু তাঁর বাবা-জেঠুর হাত ধরে, ‘‘জেঠুর কীর্তনের দল ছিল। রামমঙ্গল, মনসামঙ্গল হতো। তখন থেকেই আমি ওঁদের কাছে তালিম নিতে শুরু করি। আর আমাদের দিনাজপুরে খন গান খুব প্রচলিত। খিসা খন ও শাস্তরি খন, এ সবই মূলত গাইতাম।’’
একই জায়গার ছেলে স্নিগ্ধদীপ। কিন্তু তন্ময়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব এখানেই। স্নিগ্ধদীপের জীবনে গানের ভূমিকাও বেশ আলাদা। ‘‘আসলে আমি বুনিয়াদপুরের ছেলে। কিন্তু ওই জায়গাটাকে আমি আমার পরিচিতির মধ্যে রাখি না। সেখানে পরিবার কখনও আমার পাশে দাঁড়ায়নি। আমি যৌথ পরিবারে বড় হয়েছি। আমার বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন, তাই পরিবারের বাকিরা আমাদের দাবিয়ে রাখতে চাইত। এমন দিনও গিয়েছে যে, মাকে কেউ এক গ্লাস জলও দেয়নি আর এখন তো বাটি ভরে খাবার দিয়ে যায়। তা ছাড়া বছর দশেক হল বিয়েও করেছি। তাই সংসারের চাপে গানকে জীবনে মুখ্য করে তুলতে পারিনি।’’ স্নিগ্ধদীপের স্বপ্ন আজ পূরণ হয়েছে। আর এখন বুনিয়াদপুরের পরিবারও তাঁর পরিচয়ে পরিচিত।