Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Rice Vs Roti

গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে ভাত খাবেন না কি রুটি? কী বলছেন পুষ্টিবিদ?

রুটি না কি ভাত? গরমে কোন খাবারটি শরীর ঠান্ডা রাখে তা নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। এই যুদ্ধে কে হবে বিজয়ী?

গরমে ভাত আর রুটির যুদ্ধে কে হবে জয়ী?

গরমে ভাত আর রুটির যুদ্ধে কে হবে জয়ী? ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৪ ১৪:৫৮
Share: Save:

খাওয়া নিয়ে কলেজপড়ুয়া তিথির সঙ্গে তার মায়ের প্রায়শই ঝগড়া লেগে থাকে। ওজন কমিয়ে ছিপছিপে হতে চায় তিথি। তাই খাওয়াদাওয়া নিয়ে নিজের মতোই কিছু নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করে। তা নিয়ে মায়ের সঙ্গে তর্ক-বিবাদ চলতেই থাকে। তিথি ভাত খাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছে। খেলেও এক থেকে দু’চামচ খায়। রুটিই খায় মূলত। গরমেও সেই নিয়ম জারি আছে। তাতেই মায়ের তীব্র আপত্তি। তিথির মায়ের বক্তব্য, ‘গরমে রুটি খেলে পেটগরম হয়। অস্বস্তি হয় বেশি। তার চেয়ে ভাত খেলে স্বস্তি পাওয়া যায়’। কিন্তু তিথির কাছে স্বস্তির চেয়েও রোগা হওয়ার বিষয়টি বেশি প্রাধান্য পায়। তাই গরমেও রুটি খাওয়া বন্ধ করেনি। রুটি না কি ভাত? গরমে কোন খাবারটি শরীর ঠান্ডা রাখে, তা নিয়ে আলোচনার শেষ নেই।

অনেকেরই ধারণা, গরমে ভাত খাওয়া সবচেয়ে স্বস্তিকর। ভাতে জল ঢেলে পান্তা করে খেতেও পছন্দ করেন অনেকে। এ কথা ঠিক যে, গরমে পান্তাভাত খেলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। রুটিপ্রেমীরাও তা স্বীকার করে নেবেন। কিন্তু গ্রীষ্মকালে রুটি খাওয়া বন্ধ করে দেবেন, সেটাও নয়। গরমে যাঁরা ভাত খাওয়ার পক্ষে, তাঁদের ধারণা রুটি খেলে পেটের গোলমাল হতে পারে। অস্বস্তিরও কারণ হতে পারে রুটি । তার চেয়ে ভাত খাওয়াই শ্রেয়।

স্বাস্থ্যগুণের দিক থেকে একে-অপরকে পাল্লা দেয় ভাত এবং রুটি। ভাতে রয়েছে ভিটামিন বি, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রনের মতো উপাদান। ভাতে রয়েছে ম্যাগনেশিয়ামের মতো উপাদানও। যা পেশির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পেশি সচল রাখে। কার্বোহাইড্রেট থাকায় ভাত পেটের যত্ন নেয়। অন্য দিকে রুটিতেও রয়েছে ফাইবার। যা ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরলের মতো রোগের সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে। কিন্তু শরীর ঠান্ডা রাখতে কে বেশি সক্ষম? ভাত না রুটি— এই বিতর্কে কে হবে বিজয়ী?

পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়িকা অনন্যা ভৌমিকের কথায়, ‘‘ভাত খেলে শরীর ঠান্ডা থাকবে আর রুটি খেলে বেশি গরম লাগবে, এই ধারণা একেবারেই সঠিক নয়। খাওয়াদাওয়া একান্তই ব্যক্তিগত ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। ভাতে জলীয় অংশের পরিমাণ বেশি। তাই গরমে ভাত খাওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবে আলাদা তৃপ্তি হয়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে রুটি খাওয়া যাবে না। রুটি খেয়ে কেউ যদি হজম করতে পারেন, তা হলে কোনও সমস্যা নেই। আবার কারও যদি মনে তিন বেলা ভাত খাবেন, সেটাও খেতে পারেন। তবে হজমের গোলমাল থাকলে রুটি না খাওয়াই ভাল। শারীরিক কোনও সমস্যা না থাকলে, ভাত হোক কিংবা রুটি— সব কিছুই পরিমাণ মতো খেয়ে সুস্থ থাকা যায়।’’

সুতরাং ভাত বনাম রুটি, এই বিতর্কের কোনও সঠিক জবাব পাওয়া কঠিন। অনন্যার মতে, “ভাতের মধ্যে শীতলভাব বেশি এ কথা অস্বীকার করা যায় না। তবে রুটি খেয়ে যদি হজম করা যায়, তবে তাতেও কোনও সমস্যা নেই। রাতে বাঙালিরা রুটি খেতেই বেশি পছন্দ করেন। গরমে হজমের সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। তা সত্ত্বেও বলছি, রাতে রুটি খাওয়ায় কোনও বারণ নেই, যদি সকালে উঠে শরীর খারাপ না হয়। তবে ভাত বা রুটি —যা-ই খান, গ্রীষ্মকালে পরিমাণ কমিয়ে খাওয়াই ভাল। শরীর ঝরঝরে থাকবে পরদিন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rice Roti Summer Digestion Dinner
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE