Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19

‘এ বার ক্ষমতাশালীরা হস্তক্ষেপ না করলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে’, আশঙ্কা ঋতব্রতর

‘‘যত ক্ষণে স্বাস্থ্যভবন ফোন তুলছে, তত ক্ষণে রোগীর অবস্থা শোচনীয়!’’ আক্ষেপ ঋতব্রতর

অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়।

অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২১ ১৬:১৬
Share: Save:

‘দেশের নামে’ সাধারণ মানুষ আজ রাস্তায়। কোভিড রোগীদের জন্য অক্সিজেন, হাসপাতালের শয্যা, কোভিড পরীক্ষা, ওষুধ, অ্যাম্বুল্যান্স— সব কিছুর ব্যবস্থা করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। গোটা দেশেই এই চেহারা। বাংলাও ব্যতিক্রম নয়। সাধারণ মানুষের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবীদের তালিকায় রয়েছেন চলচ্চিত্র জগতের খ্যাতনামীরাও। তাঁদেরই মধ্যে এক স্বেচ্ছাসেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করল আনন্দবাজার ডিজিটাল। শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়ের ছেলে অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়।

চলতি বছরের শুরুতেই একটি নাটকের নির্দেশনা দিয়েছিলেন অভিনেতা। ইউনিভার্সিটি ফ্রেন্ডস গ্রুপ প্রযোজিত ‘দেশের নামে’ নাটকটির শিরোনামেই সেই ছেলেমেয়ের দল আজ রোগীর সেবায় নেমে পড়েছে। ২৭ এপ্রিল থেকে চালু করা হয়েছে হেল্পলাইন নম্বর। তাঁদের কাছে প্রতিনিয়ত কমপক্ষে ১০০টি ফোন আসছে রোগীদের থেকে। যথা সম্ভব চেষ্টা করছেন তাঁদের সাহায্য করার। কিন্তু ঋতব্রতর আক্ষেপ, ‘‘আমরা তো রাষ্ট্র নই। অক্সিজেনের জন্য সরবরাহকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারি। কিন্তু অক্সিজেন বানাতে তো পারব না আমরা। এখানে আমাদের সীমাবদ্ধতা।’’

দেশের উপরওয়ালাদের নজর কাড়তে সেই সীমাবদ্ধতাগুলি তুলে ধরলেন ঋতব্রত। তাঁর ভাষায়, ‘‘ধরা যাক, ৪ জন রোগীর কাছে অক্সিজেন পাঠিয়েছি আমরা। তার পর আমাদের সেই নম্বরগুলো ছড়িয়ে দিয়ে বলা হচ্ছে, ‘এখানে ২৪ ঘণ্টা অক্সিজেন মিলবে’। কিন্তু আমরা তো সরবরাহকারী নই!’’ অভিনেতার আক্ষেপ, এর পরে যদি কোনও রোগীর ফোন আসে, তবে তাঁকে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করে দিতে না পারলে বড্ড কষ্ট হচ্ছে তাঁদের। রোগীর পরিবারের সদস্যরা ফোন করে কান্নাকাটি করছেন। ঋতব্রত বললেন, ‘‘অসহায় তাঁরা। বুঝতে পারছি। কিন্তু দেশের আইন কানুন যদি আমাদের সাহায্য না করে, তা হলে আমরাও তো অসহায়। দেশের অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবীর সঙ্গেই এমনটাই হচ্ছে। তাঁরা আর কত করবেন!’’

‘দেশের নামে’ হেল্পলাইন

‘দেশের নামে’ হেল্পলাইন

তা ছাড়া অক্সিজেন সিলিন্ডারের ঘাটতির কথা জানালেন তিনি। অভিনেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, যদি ৯০টার চাহিদা থাকে, পাওয়া যাচ্ছে ১২টা। ঋতব্রতর কথায়, ‘‘সকালের দিকে তবু বন্দোবস্ত করতে পারছি। কিন্তু রাত ৯টার পর থেকে কিছু পাওয়া যাচ্ছে না।’’

অভিনেতার অভিযোগ, যাঁরা ক্ষমতায় রয়েছেন, তাঁরা যদি বিপুল সংখ্যায় ব্যবস্থা না করেন, তা হলে আগামী দিনে আরও ভয়ঙ্কর হবে পরিস্থিতি। ‘‘গাফিলতির পিছনে নির্বাচন কোনও কারণ হতে পারে না। চাইলেই ব্যবস্থা করা যেত সে সময়ে। স্বাস্থ্য ভবনে যোগাযোগ করলে সাহায্য মিলছে বটে, কিন্তু যত ক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে, তত ক্ষণে রোগীর অবস্থা শোচনীয়।’’

তবে রাজ্য সরকারের থেকেও কেন্দ্রীয় সরকারের উপরে বে‌শি ক্ষোভ অভিনেতার। অক্সিজেন সরবরাহকারীদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জেনেছেন, অক্সিজেনের ঘাটতি মেটানোর জন্য রাজ্য নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ বেশি প্রয়োজন। ঋতব্রতর দাবি, ‘‘এ বারে রাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করুক! সাধারণ মানুষের সামর্থ্য প্রায় শূন্যের দিকে চলে যাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE