Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
bollywood

অভিনয়ের জন্য পড়াশোনায় ইতি নবম শ্রেণিতে, দিব্যা ভারতীর রহস্যমৃত্যু যবনিকার আড়ালেই

চার বছর প্রেমের পরে ১৯৯২-এর ১০ মে এক গোপন অনুষ্ঠানে বিয়ে করেন সাজিদ-দিব্যা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২০ ১৬:১৮
Share: Save:
০১ ১৮
প্রথম অভিনয়ের সুযোগ নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে। সমসাময়িক নায়িকাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখেও সমানে পাল্লা দিয়েছেন তিনি। দ্রুত উঠে এসেছেন জনপ্রিয়তার প্রথম সারিতে। রহস্যময় অকালমৃত্যু  থামিয়ে না দিলে আরও অনেক আলোকবর্ষ পাড়ি দিত তারকা দিব্যা ভারতীর খ্যাতি।

প্রথম অভিনয়ের সুযোগ নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে। সমসাময়িক নায়িকাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখেও সমানে পাল্লা দিয়েছেন তিনি। দ্রুত উঠে এসেছেন জনপ্রিয়তার প্রথম সারিতে। রহস্যময় অকালমৃত্যু থামিয়ে না দিলে আরও অনেক আলোকবর্ষ পাড়ি দিত তারকা দিব্যা ভারতীর খ্যাতি।

০২ ১৮
দিব্যার জন্ম ১৯৭৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। তাঁর বাবা ওমপ্রকাশ ভারতী ছিলেন জীবনবিমা কর্মী। মা মিতা ভারতী ব্যস্ত থাকতেন ঘরকন্না নিয়েই। ছোটভাই কুণাল এবং সৎ বোন পুনমের সঙ্গে মুম্বইয়ে বেড়ে ওঠা দিব্যার।

দিব্যার জন্ম ১৯৭৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। তাঁর বাবা ওমপ্রকাশ ভারতী ছিলেন জীবনবিমা কর্মী। মা মিতা ভারতী ব্যস্ত থাকতেন ঘরকন্না নিয়েই। ছোটভাই কুণাল এবং সৎ বোন পুনমের সঙ্গে মুম্বইয়ে বেড়ে ওঠা দিব্যার।

০৩ ১৮
ছোট থেকেই হিন্দি, মরাঠি আর ইংরেজিতে স্বচ্ছন্দ ছিলেন দিব্যা। পড়তেন মানেকজি কুপার হাই স্কুলে। তবে অভিনয়ের সুযোগ পাওয়ার পরে নবম শ্রেণির পরে আর পড়াশোনা করেননি তিনি।

ছোট থেকেই হিন্দি, মরাঠি আর ইংরেজিতে স্বচ্ছন্দ ছিলেন দিব্যা। পড়তেন মানেকজি কুপার হাই স্কুলে। তবে অভিনয়ের সুযোগ পাওয়ার পরে নবম শ্রেণির পরে আর পড়াশোনা করেননি তিনি।

০৪ ১৮
১৯৮৮ সালে ‘গুনাহোঁ কা দেবতা’ ছবিতে দিব্যার অভিনয়ের কথা হয়েছিল। কিন্তু শেষ অবধি তিনি বাদ পড়েন। কীর্তি কুমার তাঁকে বেছেছিলেন ‘রাধা কা সঙ্গম’ ছবির জন্য। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে সেই সুযোগ চলে যায় জুহি চাওলার কাছে।

১৯৮৮ সালে ‘গুনাহোঁ কা দেবতা’ ছবিতে দিব্যার অভিনয়ের কথা হয়েছিল। কিন্তু শেষ অবধি তিনি বাদ পড়েন। কীর্তি কুমার তাঁকে বেছেছিলেন ‘রাধা কা সঙ্গম’ ছবির জন্য। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে সেই সুযোগ চলে যায় জুহি চাওলার কাছে।

০৫ ১৮
বার বার প্রত্যাখ্যাত হয়ে আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন দিব্যা। কিছুটা নিমরাজি হয়েই তিনি শুরু করেন তেলুগু ছবি ‘বব্বিলি রাজা’-র শুটিং।

বার বার প্রত্যাখ্যাত হয়ে আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন দিব্যা। কিছুটা নিমরাজি হয়েই তিনি শুরু করেন তেলুগু ছবি ‘বব্বিলি রাজা’-র শুটিং।

০৬ ১৮
১৯৯০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বব্বিলি রাজা’ এখনও অবধি সফলতম তেলুগু ছবির মধ্যে অন্যতম। প্রথম ছবিতেই আকাশছোঁয়া সাফল্যের পরে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি দিব্যাকে।

১৯৯০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বব্বিলি রাজা’ এখনও অবধি সফলতম তেলুগু ছবির মধ্যে অন্যতম। প্রথম ছবিতেই আকাশছোঁয়া সাফল্যের পরে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি দিব্যাকে।

০৭ ১৮
নয়ের দশকের গোড়াতেই দিব্যা দক্ষিণী ছবির পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। সেই সাফল্যের সূত্র ধরেই বলিউডের দরজা খুলে যায় তাঁর সামনে। ১৯৯২ সালে মুক্তি পায় দিব্যার প্রথম হিন্দি ছবি ‘বিশ্বাত্মা’। রাজীব রাইয়ের পরিচালনায় এই ছবিতে দিব্যার বিপরীতে নায়ক ছিলেন সানি দেওল। বক্স অফিসে সফল হয় ‘বিশ্বাত্মা’-ও।

নয়ের দশকের গোড়াতেই দিব্যা দক্ষিণী ছবির পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। সেই সাফল্যের সূত্র ধরেই বলিউডের দরজা খুলে যায় তাঁর সামনে। ১৯৯২ সালে মুক্তি পায় দিব্যার প্রথম হিন্দি ছবি ‘বিশ্বাত্মা’। রাজীব রাইয়ের পরিচালনায় এই ছবিতে দিব্যার বিপরীতে নায়ক ছিলেন সানি দেওল। বক্স অফিসে সফল হয় ‘বিশ্বাত্মা’-ও।

০৮ ১৮
১৯৯২ সালে মুক্তি পায় ডেভিড ধবন পরিচালিত ‘শোলা অউর শবনম’। বলিউডে এটাই দিব্যার প্রথম বড় সাফল্য। সুপারহিট এই ছবি দিব্যার পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিতে হালে পানি পেতে সাহায্য করেছিল নায়ক গোবিন্দ এবং পরিচালক ডেভিড ধবনকেও।

১৯৯২ সালে মুক্তি পায় ডেভিড ধবন পরিচালিত ‘শোলা অউর শবনম’। বলিউডে এটাই দিব্যার প্রথম বড় সাফল্য। সুপারহিট এই ছবি দিব্যার পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিতে হালে পানি পেতে সাহায্য করেছিল নায়ক গোবিন্দ এবং পরিচালক ডেভিড ধবনকেও।

০৯ ১৮
তবে দিব্যার জন্য আরও বড় সাফল্য অপেক্ষা করেছিল ১৯৯২-এ। সে বছরেই মুক্তি পায় ‘দিওয়ানা’। সুপারডুপার হিট এই ছবি ইন্ডাস্ট্রিতে পায়ের তলায় শক্ত জমি দেয় নবাগত শাহরুখ খানেরও।

তবে দিব্যার জন্য আরও বড় সাফল্য অপেক্ষা করেছিল ১৯৯২-এ। সে বছরেই মুক্তি পায় ‘দিওয়ানা’। সুপারডুপার হিট এই ছবি ইন্ডাস্ট্রিতে পায়ের তলায় শক্ত জমি দেয় নবাগত শাহরুখ খানেরও।

১০ ১৮
দিব্যার সংক্ষিপ্ত অথচ সফল কেরিয়ারে উল্লেখযোগ্য বাকি ছবি হল ‘দুশমন জমানা’, ‘দিল আশনা হ্যায়’, ‘গীত’ এবং‌ ‘দিল হি তো হ্যায়’। ১৯৯২ সালে মুক্তি পায় দিব্যার তেলুগু ছবি ‘চিট্টাম্মা মোগুড়ু’। বিপরীতে নায়ক ছিলেন মোহনবাবু।

দিব্যার সংক্ষিপ্ত অথচ সফল কেরিয়ারে উল্লেখযোগ্য বাকি ছবি হল ‘দুশমন জমানা’, ‘দিল আশনা হ্যায়’, ‘গীত’ এবং‌ ‘দিল হি তো হ্যায়’। ১৯৯২ সালে মুক্তি পায় দিব্যার তেলুগু ছবি ‘চিট্টাম্মা মোগুড়ু’। বিপরীতে নায়ক ছিলেন মোহনবাবু।

১১ ১৮
পরিচালক-প্রযোজক সাজিদ নাডিয়াডওয়ালার সঙ্গে দিব্যার আলাপ হয় ‘শোলা অউর শবনম’ ছবির সেটে। তাঁদের আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন অভিনেতা গোবিন্দ।

পরিচালক-প্রযোজক সাজিদ নাডিয়াডওয়ালার সঙ্গে দিব্যার আলাপ হয় ‘শোলা অউর শবনম’ ছবির সেটে। তাঁদের আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন অভিনেতা গোবিন্দ।

১২ ১৮
চার বছর প্রেমের পরে ১৯৯২-এর ১০ মে এক গোপন অনুষ্ঠানে বিয়ে করেন সাজিদ-দিব্যা। মুম্বইয়ে সাজিদের বাড়িতে সেই বিয়ের আসরে বর কনে ছাড়া হাজির ছিলেন দিব্যার হেয়ার ড্রেসার সন্ধ্যা, তাঁর স্বামী এবং একজন কাজি।

চার বছর প্রেমের পরে ১৯৯২-এর ১০ মে এক গোপন অনুষ্ঠানে বিয়ে করেন সাজিদ-দিব্যা। মুম্বইয়ে সাজিদের বাড়িতে সেই বিয়ের আসরে বর কনে ছাড়া হাজির ছিলেন দিব্যার হেয়ার ড্রেসার সন্ধ্যা, তাঁর স্বামী এবং একজন কাজি।

১৩ ১৮
কেরিয়ারের মতো দিব্যার দাম্পত্যও ছিল স্বল্পস্থায়ী। ভারসোভার যে তুলসী বিল্ডিংস বহুতলে বিয়ে হয়েছিল দিব্যার, যেখানে ছিল তাঁর সংসার, সেই বহতলের পাঁচতলার বারান্দার জানালা দিয়ে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় দিব্যার। ১৯৯৩ সালের ৫ এপ্রিল। কুপার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

কেরিয়ারের মতো দিব্যার দাম্পত্যও ছিল স্বল্পস্থায়ী। ভারসোভার যে তুলসী বিল্ডিংস বহুতলে বিয়ে হয়েছিল দিব্যার, যেখানে ছিল তাঁর সংসার, সেই বহতলের পাঁচতলার বারান্দার জানালা দিয়ে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় দিব্যার। ১৯৯৩ সালের ৫ এপ্রিল। কুপার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

১৪ ১৮
দিব্যার রহস্যমৃত্যু নিয়ে বহু তত্ত্ব দীর্ঘদিন ধরে ঘুরতে থাকে সংবাদমাধ্যমে। অভিযোগ উঠেছিল, দিব্যাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। বহুবার উঠে আসে এর পিছনে আন্ডারওয়ার্ল্ডের যোগের সম্ভাবনাও। সন্দেহভাজনদের তালিকায় ছিলেন দিব্যার স্বামীও।

দিব্যার রহস্যমৃত্যু নিয়ে বহু তত্ত্ব দীর্ঘদিন ধরে ঘুরতে থাকে সংবাদমাধ্যমে। অভিযোগ উঠেছিল, দিব্যাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। বহুবার উঠে আসে এর পিছনে আন্ডারওয়ার্ল্ডের যোগের সম্ভাবনাও। সন্দেহভাজনদের তালিকায় ছিলেন দিব্যার স্বামীও।

১৫ ১৮
কিন্তু শেষ অবধি কোনও যুক্তি ধোপে টেকেনি। ১৯৯৮ সালে বন্ধ হয়ে যায় হত্যারহস্যের তদন্ত। পুলিশ সিলমোহর দেয় সে সময় দিব্যার ফ্ল্যাটে উপস্থিত অতিথিদের দাবিকেই।

কিন্তু শেষ অবধি কোনও যুক্তি ধোপে টেকেনি। ১৯৯৮ সালে বন্ধ হয়ে যায় হত্যারহস্যের তদন্ত। পুলিশ সিলমোহর দেয় সে সময় দিব্যার ফ্ল্যাটে উপস্থিত অতিথিদের দাবিকেই।

১৬ ১৮
সে দিন দিব্যার বাড়িতে অতিথি ছিলেন ডিজাইনার নীতা লুল্লা এবং তাঁর স্বামী। তাঁদের বয়ান ছিল, ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকেই মদ্যপান করছিলেন দিব্যা। সেই অবস্থায় ভারসাম্য রাখতে না পেরে ব্যালকনির খোলা জানালা দিয়ে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। এই জানালাটি ছিল তাঁর অবসর কাটানোর প্রিয় জায়গা। শেষ অবধি পুলিশের খাতায় দিব্যার মৃত্যু রয়ে গিয়েছে ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবেই।

সে দিন দিব্যার বাড়িতে অতিথি ছিলেন ডিজাইনার নীতা লুল্লা এবং তাঁর স্বামী। তাঁদের বয়ান ছিল, ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকেই মদ্যপান করছিলেন দিব্যা। সেই অবস্থায় ভারসাম্য রাখতে না পেরে ব্যালকনির খোলা জানালা দিয়ে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। এই জানালাটি ছিল তাঁর অবসর কাটানোর প্রিয় জায়গা। শেষ অবধি পুলিশের খাতায় দিব্যার মৃত্যু রয়ে গিয়েছে ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবেই।

১৭ ১৮
দিব্যার মৃত্যুর পরে মুক্তি পায় তাঁর ছবি ‘রং’ এবং ‘শতরঞ্জ’। আরও কিছু ছবি যেমন ‘লাডলা’, ‘মোহরা’, ‘কর্তব্য’, ‘বিজয়পথ’, ‘দিলওয়ালে’, ‘আন্দোলন’ নতুন করে শুট করতে হয়। সবগুলির কাজ অর্ধসমাপ্ত রেখে গিয়েছিলেন দিব্যা। তাঁর বদলে অভিনয় শেষ করেন অন্য অভিনেত্রী।

দিব্যার মৃত্যুর পরে মুক্তি পায় তাঁর ছবি ‘রং’ এবং ‘শতরঞ্জ’। আরও কিছু ছবি যেমন ‘লাডলা’, ‘মোহরা’, ‘কর্তব্য’, ‘বিজয়পথ’, ‘দিলওয়ালে’, ‘আন্দোলন’ নতুন করে শুট করতে হয়। সবগুলির কাজ অর্ধসমাপ্ত রেখে গিয়েছিলেন দিব্যা। তাঁর বদলে অভিনয় শেষ করেন অন্য অভিনেত্রী।

১৮ ১৮
১৯৯৩ সালের ২৬ মার্চ মুক্তি পাওয়া ‘ক্ষত্রিয়’ ছিল দিব্যার জীবদ্দশায় মুক্তিপ্রাপ্ত শেষ ছবি। তাঁর মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে যায় ইন্ডাস্ট্রি। চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞরা সহমত, দিব্যার অকালমৃত্যু না হলে আরও কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হত শ্রীদেবী, জুহি এবং মাধুরী দীক্ষিতকে।  (ছবি: আর্কাইভ ও  সোশ্যাল মিডিয়া)

১৯৯৩ সালের ২৬ মার্চ মুক্তি পাওয়া ‘ক্ষত্রিয়’ ছিল দিব্যার জীবদ্দশায় মুক্তিপ্রাপ্ত শেষ ছবি। তাঁর মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে যায় ইন্ডাস্ট্রি। চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞরা সহমত, দিব্যার অকালমৃত্যু না হলে আরও কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হত শ্রীদেবী, জুহি এবং মাধুরী দীক্ষিতকে। (ছবি: আর্কাইভ ও সোশ্যাল মিডিয়া)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE