মধুর ভন্ডারকরের পাশে সুব্রত সেন
গল্পের কেন্দ্রে কামাথিপুরার এক যৌনকর্মীর জীবন। তাঁর দিনযাপনের বেশ কিছু মুহূর্তের দৃশ্যায়নও রয়েছে ছবিতে। যৌনকর্মীর চরিত্রে অভিনেত্রী শ্বেতা বসু প্রসাদ। তাঁর সংলাপে যৌনপল্লির ভাষা। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ছবির নিয়ম মেনেই ইংরেজি অক্ষর ‘এ’-র তকমা পেয়েছে মধুর ভন্ডারকরের নতুন ছবি ‘ইন্ডিয়া লকডাউন’-এ। তবু, তার পরেও ছবির মোট ১২টি অংশ কেটে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন (সিবিএফসি)।
১২টি অংশের মধ্যে রয়েছে ২টি দৃশ্যে ধরা যৌনকর্মী-রূপী শ্বেতা ও তাঁর এক খদ্দেরের সঙ্গম। এ ছাড়া বাদ দিতে বলা হয়েছে ১০টি অডিয়ো। পরিচালক মধুরের কথায়, ‘‘যে এলাকার গল্প, সেখানকার মানুষের কথ্য ভাষাকে তুলে ধরতে চেয়েছিলাম। আমাকে বলা হয়েছে, সংলাপগুলি সমস্যাজনক। কিন্তু এমন জীবনযাপনের আসল ছবি তুলে ধরতে গেলে সে সব ভাষা বাদ দিতে পারব না আমি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আবার সংশোধনী কমিটির কাছে যাব।’’
ছবি ঘিরে এমন ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও বহু বার নিজের চিত্রনাট্যে কাঁচি চালাতে হয়েছে পরিচালকদের। তা তিনি দেশের যে প্রান্তের বাসিন্দাই হোন না কেন।
‘হঠাৎ নীরার জন্য’ থেকে ‘বিবর’ কিংবা ‘কয়েকটি মেয়ের গল্প’। বিতর্ক পিছু ছা়ড়েনি বাংলার পরিচালক সুব্রত সেনের। একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাঁকেও। আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল পরিচালকের সঙ্গে। সুব্রত বলেন, ‘‘আমি সময় পাইনি সংশোধনী কমিটিতে যাওয়ার। ছবি মুক্তির তারিখ এগিয়ে এসেছিল। অগত্যা যা নির্দেশ এসেছিল, তা মেনে নিয়েই ছবি বেরিয়েছে। তাই মধুর ভন্ডারকর সময় নিয়ে নিজের ছবির জন্য লড়াই করুন, তেমনটাই চাই।’’
সেন্সর বোর্ড নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পোষণ করেন সুব্রত। তাঁর মতে, দু’রকমের মানুষই রয়েছেন বিচারকমণ্ডলীর তালিকায়। ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’ ছবিটি পাশ করানো নিয়ে চিন্তায় ছিলেন পরিচালক। কিন্তু ‘ইউ’ তকমা, অর্থাৎ সকলকে এই ছবি দেখানোর ছাড়পত্র পেয়েছিলেন তিনি। তবে মুদ্রার উল্টো পিঠও দেখতে হয়েছে সুব্রতকে।
পরিচালকের মতে, সেন্সর বোর্ডের বিচারকদের আরও খানিকটা উদারমনস্কের হতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘একটি বিশেষ সময়ে কয়েক জন মানুষ একটি ছবি দেখে বিচার করেন। কিন্তু ছবি তো আসলে প্রতিটি কাছে ব্যক্তির আলাদা আলাদা অর্থ নিয়ে আসে। ভিন্ন ব্যাখ্যা তৈরি করে। উপরন্তু এখন তো ওটিটি-র দৌলতে পৃথিবীর যে কোনও দেশের সব ধরনের ছবি আমাদের হাতের মুঠোয়। তা হলে কেন ভারতের চলচ্চিত্র জগতে এত নিয়মের কড়াকড়ি?’’ সুব্রতর মনে হয়, নিজের ছবির জন্য ল়়ড়াই করাকে কোথাও যেন আসামি হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy