রেস্ট্রিকশনটা নেই বলে কি এখন রিল্যাক্সড লাগে?
এখানে একটা সমস্যাও আছে। এরা অনেক শট নেয়। সব অ্যাঙ্গেল থেকেই আবার পুরোটা বলতে বলে। অভিনেতাদের সমস্যা কি, যেহেতু ১৭ বার পুরোটাই করতে হবে, জেসচার মেলে না, মুভমেন্ট মিলবে না। ১৭ বার ১৭ রকম হবে। কিন্তু ডিরেক্টরের অনেক বেশি শট আছে, তাই কন্টিনিউয়িটিতে সমস্যা হবে না। তবে এখন তো দীপকের ফেজ। তাই আমি কমফর্টেবল। যখন ‘চ্যাম্প’ করছি বা ‘বস টু’ করছি তখন মাঝে মাঝে চিরঞ্জিতকে ডেকে নিচ্ছি। বলছি, এই শটটা তোর। যা গিয়ে দিয়ে আয় (মুচকি হাসি)।
‘মাস’ অডিয়েন্সকে তো আপনি আগেই পেয়েছেন। দীপকের ফেজ দিয়ে কি কোথাও ‘ক্লাস’কে ধরার চেষ্টা?
কিছুটা ঠিক। তখন তো এমন ছবি করার সুযোগ পাইনি। তাই আমি খুশি। ১৫ বছর আগে তো এমন প্রেশার ছিল না। কিন্তু একটা কথা সত্যি, কর্মাশিয়াল ছবি করা অনেক শক্ত কাজ।
তাই?
দেখুন, আমি ক্রিকেট খেলি। হঠাত্ বললাম, আমি ফুটবলটাও খেলতে পারব, হয় না ওটা। অঞ্জন দত্ত বললেন, আমি কর্মাশিয়াল করব। ‘গণেশ টকিজ’ বানালেন। তেমন চলল কি? এটা অত সহজ খেলা নয়। আমার খুব প্রিয় মানুষ অঞ্জন। কিন্তু আমি বলতে চাইছি, আমরা যেটা বানাই সেটাই ছবি, আর কর্মাশিয়াল যে কেউ বানাতে পারে, এই ভাবনাটা ঠিক নয়।
আরও পড়ুন, ‘আমি সিঙ্গল, তবে এক জন স্পেশ্যাল বন্ধুও আছে’
ইন্ডাস্ট্রির আর কোনও চেঞ্জ চোখে পড়ছে?
এখন খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সকলে ‘অনবদ্য’ অভিনেতার বিশেষণ পাচ্ছেন। আমিই পাচ্ছি। ‘কিরীটী’ বা ‘চতুষ্কোণ’-এ যা অ্যাপ্রিশিয়েনশ পেয়েছি তা সারা জীবনে পাইনি। এগুলো আমাদের সময়ে ছিল না। তখন ক্রিটিকরা খুব কড়া ছিলেন। এটা আধুনিকতা।
এই আধুনিকতা ভাল লাগছে নিশ্চয়ই।
না! আমার খুব একটা ভাল লাগছে না। (উত্তেজিত হয়ে) সবাই সব ছবিতেই নাকি দুর্দান্ত। কিন্তু ছবি তো চলছে না। খরাজ ওয়ান অফ দ্য বেস্ট, রুদ্রনীলও তাই। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের থেকে ভাল অভিনেতা হয় না। যিশু অসাধারণ, আবির সাংঘাতিক। ঋত্বিক ভাবাই যায় না। এরপর ঋত্বিক সম্বন্ধে অ্যাডজেকটিভ খুঁজেই পাবেন না। রজতাভ অন্য ক্লাস।
এতে অভিনেতাদের সমস্যা কোথায়?
দেখুন, ভালটা যদি এতটা দেওয়া হয়, তা হলে তার ভ্যালুটা আর থাকে না। বিষয়টা এমন যে, ও তো খারাপ কখনও করেই না। সবাই ওয়ান্ডারফুল, এটা হতে পারে? আমি তো তা হলে স্ট্যান্ডার্ডটাই বুঝি না। ফাটাফাটিটা বলে দেওয়ার পরে তার ওপরের কিছু এলে সেটা তো আর কিছু দিতেই পারব না। আসলে আমরা সবাই বিক্রি হয়ে গিয়েছি। সমাজটা বিক্রি হয়ে গিয়েছে। একটা নতুন যুগ আমাদের এমবিএ পড়িয়েছে। ম্যানেজমেন্ট। আমরা ম্যানেজ করতে শিখেছি। তাই সব লোককেই ভাল বলা ভাল। আমার পক্ষে তো সেফ।
কিরীটীর বেশে।