Advertisement
E-Paper

এখানে রাসমণি ব্যাডমিন্টন খেলেন

ছোট পর্দার রাসমণি, মথুর, রাজচন্দ্র... কী করেন শুটের ফাঁকে? সেটে উঁকি দিল আনন্দ প্লাসছোট পর্দার রাসমণি, মথুর, রাজচন্দ্র... কী করেন শুটের ফাঁকে? সেটে উঁকি দিল আনন্দ প্লাস

রূম্পা দাস

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:২৭
চিত্রনাট্য পড়ার ফাঁকে

চিত্রনাট্য পড়ার ফাঁকে

স্টুডিয়োর বড় দরজা পেরিয়ে ভিতরে ঢুকলেই অবাক কাণ্ড। একটা ঘরের ভিতরে সোফায় আধশোয়া স্বয়ং মথুর! অনর্গল মোবাইলের স্ক্রিন স্ক্রল করে চলেছেন। আর একটি ঘরে চেয়ারের উপরে হাঁটু মুড়ে বসে রানি রাসমণি। কানে গোঁজা ইয়ারফোন। মন দিয়ে ইউটিউব দেখছেন! আসলে দিনের প্রায় অর্ধেকের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকের চরিত্রে অভিনয় করতে গেলে গুলিয়ে যায় সব। তখন সিরিয়ালের সেটই হয়ে ওঠে দ্বিতীয় ঘরবাড়ি। যেমনটা হয়েছে দিতিপ্রিয়া রায় বা গৌরব চট্টোপাধ্যায়ের।

সেটের সাজ

ইন্দ্রপুরী স্টুডিয়োর ভিতরেই হয় ‘করুণাময়ী রানী রাসমণি’ ধারাবাহিকের বেশির ভাগ শুট। বাইরে যদি বা লালচে ইটের নোনা ধরা দেওয়াল, ভিতরে একেবারে বিপরীত চেহারা। ক্যামেরা, তার, ট্রলি পেরিয়ে ভিতরে ঢুকলে মনে হবে, এ যেন রাজবাড়ি। বৈঠকখানা জুড়ে বড় বড় জানালা। তাতে লাল-নীল রঙিন কাচ লাগানো। বসার জন্য রাজকীয় আরামকেদারা। নরম সাদা লেসের পর্দা ঝুলছে ঘর জুড়ে। রয়েছে ভারী আসবাবও। বাতিদানের সৌন্দর্যে চোখ ঝলসে যেতে পারে। নিখুঁত ভাবে তৈরি করা হয়েছে ধারাবাহিকের সেট। পিরিয়ড ধর্মী ধারাবাহিক তৈরি করতে গেলে সেটের চেহারাই বদলে যায়। ‘করুণাময়ী...’র সেটের লুক অ্যান্ড ফিলের দায়িত্বে রয়েছেন কৃষ্ণেন্দু কারার। বললেন, ‘‘এই সময়টা তুলে ধরার জন্য কোনও ছবি ছিল না। ভরসা ছিল টেক্সট। উনিশ শতকের ওই সময়ে ব্রিটিশদের সঙ্গে রাজপরিবারের ওঠাবসা ছিল। ফলে কেমন আসবাব তৈরি করা হতো, তার ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের সেটের রঙে ন্যাচরাল বেজ, সাদা রঙের প্রাধান্য। আর্ট ডিরেক্টর জয়চন্দ্র চন্দ্র মূল ভাবনা বাস্তবায়নের কাজ করেছেন।’’ পরে কালীমন্দির দেখানো হলে বদলে যাবে সেট। তার জন্য নির্মাতারা সাহায্য পাচ্ছেন দক্ষিণেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।

ভাত-ডাল আর ব্যাডমিন্টন

এ তো গেল সেট পরিকল্পনা ও তৈরির কাজ। সেটের বাইরে বেরোতেই দেখা মিলল কয়েক জন তরুণ ছেলেমেয়ের। গৌরবকে ঘিরে ধরে সেলফির আবদার তাঁদের। সেই পর্ব মিটতেই এল লাঞ্চ। স্বাস্থ্যসচেতন গৌরব যেমন বাড়ি থেকেই ভাত, ডাল, চিকেনের ঝোল নিয়ে আসা পছন্দ করেন। দিতিপ্রিয়ার মা নিজের হাতে মেয়ের জন্য বানিয়ে নিয়ে আসেন খাবার। কিন্তু রাজচন্দ্র ওরফে গাজ়ি আবদুন নুর সেটের খাবারই খান। যে নুর মিনিট দুয়েক আগে ক্যামেরার সামনে রাসমণিকে শান্ত হওয়ার পরামর্শ দেন, শট শেষে তিনিই মেকআপ রুমে গুছিয়ে বসে পঞ্চব্যঞ্জনে মগ্ন হন।

জানা গেল, ধারাবাহিকের বেশির ভাগ অভিনেতাই বড় গোঁফ রেখেছেন। গৌরব জানালেন, ‘‘নুরকে দেখেই আমরাও গোঁফ বাড়াতে শুরু করলাম। সত্যি বলতে, রোজ রোজ নকল গোঁফ লাগিয়ে শুটিং করাটাও ঝামেলার।’’ নুর-গৌরবকে গোঁফে তা দিতে দেখে স্পষ্টই বোঝা গেল, বড় গোঁফই এখন তাঁদের স্টাইল স্টেটমেন্ট।

দিতিপ্রিয়ার ঘরে ঢুকতেই দেখা গেল, তিনি ভীষণ উত্তেজিত। শটের ফাঁকেই নানা ফোন কলে ব্যস্ত। তাঁকে নিয়ে ট্রোলের অন্ত নেই। অথচ তাতে দিতিপ্রিয়ার হেলদোল নেই। ‘‘ছ’মাসেই আমাকে আমার হেটাররা ভারতবিখ্যাত করে ছাড়বে,’’ হেসে বললেন অভিনেত্রী। সপ্তাহে দু’দিন স্কুলে যান একাদশ শ্রেণির দিতিপ্রিয়া। বাকি দিনগুলো শুটিং। শুটের মাঝেই সিনেমা দেখা, আড্ডা দেওয়া, ব্যাডমিন্টন খেলা। ‘‘এই শাড়ি পরেই ব্যাডমিন্টন খেলি। নেহাত শাড়ি পরে থাকি বলে বোঝা যায় না। না হলে দেখতেন, আমার হাঁটু দুটোয় কত কাটা দাগ আছে,’’ বলতে বলতে কাটা দাগ দেখান দিতিপ্রিয়া। এ ভাবেই সময় কাটান ‘জগদম্বা’ সম্পূর্ণা ও ‘কুমারী’ অস্মিও।

সারাদিনের পরে সেট থেকে বেরোনোর মুখে দেখি, গাছের ছায়ায় ব্যাডমিন্টন খেলছেন গেরুয়াধারী এক সুদর্শন যুবক। কাছে যেতেই ধোঁয়াশা কাটে। ইনি যে স্বয়ং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (সৌরভ দাস)। একটু পরেই তিনি শট দিতে যাবেন!

ছবি: সুপ্রতিম চট্টোপাধ্যায়

নিরুপম দত্ত

Ditipriya Roy Gourab Chatterjee Film actor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy