Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Entertainment News

ইতিহাস ছুঁয়ে থাকা এ বীরগাথা কঙ্গনারও

রানি নয় এ যেন এক মেয়ের লড়াইয়ের গল্প। যে ক্ষমতার চেয়ে ভালবাসাকে কাঙ্ক্ষিত জেনেছে।

কঙ্গনার শিরায় শিরায় রক্তমাখা সংগ্রামের ছাপ।

কঙ্গনার শিরায় শিরায় রক্তমাখা সংগ্রামের ছাপ।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ১৭:১৩
Share: Save:

প্রথম তাঁকে ইতিহাসের পাতায় দু এক লাইনে জেনেছি। তার পরে কোনও এক প্রচলিত গানে। লড়াই আর বীরগাথায় তাঁর নাম।
এ বার অনুভব, শক্তি আর আবেগের মধ্যে ধরা দিলেন তিনি। রাধাকৃষ্ণ জগরলামুরির ছবি 'মনিকর্ণিকা'-তে। এই 'মনিকর্ণিকা' এক আগুনের নাম। যে আগুনে পুড়ে আগুনময় বি-টাউনের গ্ল্যামার কঙ্গনা রানাউত। এ ছবি মেয়ে, মহিলা থেকে শক্তিশালী মানুষ হয়ে ওঠার কাহিনি। যে কাহিনি কখনও ইতিহাসকে ছুঁয়ে আছে। কখনও বা স্বজাত্যাভিমানের আলোক বলয়ে পক্ষীরাজের সাদা ঘোড়াকে আকাশে ছুটিয়েছে রানী লক্ষ্মীবাঈয়ের পরাক্রম বোঝাতে।
রানি নয় এ যেন এক মেয়ের লড়াইয়ের গল্প। যে ক্ষমতার চেয়ে ভালবাসাকে কাঙ্ক্ষিত জেনেছে। রাজ ঘরানার নিয়ম বদলে অনায়সে গরীব প্রজাদের মধ্যে মিশে গিয়েছে। তার বিশ্বাস একটাই। দেশের মাটির অংশীদার সকলে। তাই আলাদা কোনও বিভেদ নেই রাজা আর প্রজায়। পেশোয়ার হাতে মানুষ মনিকর্ণিকা, রাজ করতে চেয়েছিল মানুষের মনে, অধিকার কেড়ে বেড়ানো তাঁর স্বভাব ছিল না। ইংরেজ শক্তি যখন তাঁকে মহল থেকে তাড়িয়ে দেয় তখন ঝাঁসির ঘরে ঘরে মশালের আলো আর আলো মাখা মানুষের মুখ, শক্তি তার সঙ্গে! এটাই তো তার পাওয়া।

এ ছবিতে চোখ দিয়ে কথা বলেছেন কঙ্গনা রানাউত।

কঙ্গনা রানাউত। আপাতত এটাই তাঁর সেরা অভিনয়। বিট্টুর থেকে ঝাঁসিতে ঝড় হয়ে আসা তরতাজা এক খুশির তুফান মনিকর্ণিকা থেকে লক্ষ্মীবাঈ হয়ে ওঠে। সন্তানের মৃত্যু, স্বামীর চলে যাওয়া। নিঠুর পৃথিবীর নির্মম দায়িত্ব নেওয়া কঙ্গনা ক্রমশ নিজেকে বদলাতে থাকেন। ঝাঁসির মাটি রুক্ষ, তাই কঠিন হয়ে ওঠে কঙ্গনার মুখ। ঝাঁসির মাটি রক্তাক্ত। কঙ্গনার শিরায় শিরায় রক্তমাখা সংগ্রামের ছাপ। সংলাপ নয়। এ ছবিতে চোখ দিয়ে কথা বলেছেন তিনি। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে তার সাহসী হুঙ্কার দর্শকদের নাড়িয়ে দেয়। যিশু সেনগুপ্তও চমৎকার। ঝাঁসির রাজার পরাজয়ের আলো আঁধারি মুখের অভিব্যাক্তি দর্শকদের মনে থাকবে। প্রশ্ন জাগে, এমন রাজা রানির আবেগের দৃশ্য কোথায়? দেশপ্রেমের ছবিতে কী মানবপ্রেম বাদ?
এই ছবির ব্রিটিশ অফিসাররা বেশ হাস্যকর। 'লগান' থেকে 'মঙ্গল পাণ্ডে' সব ছবিতেই ব্রিটিশ অফিসারদের নির্বাচনে অবহেলা চোখে পড়েছিল। এ ছবিতেও সেই এক ধারা।

আরও পড়ুন: সলমনের নতুন জার্নি, মুক্তি পেল ‘ভারত’-এর টিজার

শঙ্কর এহসান লয়ের গান ভালই লাগে। কিন্তু এই ধারার ছবিতে হঠাৎ হঠাৎ বলিউডি চালের গান অপ্রয়োজনীয়। বরং ঘটনার বাঁধুনি আরও খানিক আটোসাঁটো হলে ছবিটা একটু ছোট হত। টেক্সট বুকের ছোট্ট কয়েকটা লাইনের মতোই ঘুরতে থাকে 'মনিকর্ণিকার' গল্প। ড্যানি ডেংজংপা আর অঙ্কিতা লোখাণ্ডের অভিনয় মনকাড়া। প্রসূন জোশীর দেশের লড়াইয়ের সংলাপ ও ইতিমধ্যেই জনপ্রিয়।
তবুও শেষে মনে হয় এ ছবি কেবল কঙ্গনা রানাউতের বা মনিকর্ণিকার।

আরও পড়ুন: নওয়াজ নন, পর্দার ‘ঠাকরে’ হিসেবে প্রথম পছন্দ ছিলেন অন্য কেউ!

মানসিকতার দিক থেকেও তিনি আজকের মেয়েদের চেয়ে এগিয়ে। রাজার মৃত্যুর পর তিনি দত্তক সন্তান নিয়ে রঙিন শাড়িতে ঝাঁসির সিংহাসনে বসলেন। শুধু রাজ্য নয়, বাড়িতেও তাঁর লড়াই চলেছে নিরন্তর। পাওয়ার ঝুলি তাঁর বরাবর শূন্য। তিনি পূর্ণ করেছেন কালের দাবি। যে কাল তাকে সমসাময়িক অনেক রাজার থেকে এগিয়ে রেখেছে। চিন্তা চেতনা আর লড়াইয়ে।
কঙ্গনার আগুনরূপ এ ছবির সবচেয়ে বড় সম্পদ।

(কোন সিনেমা বক্স অফিস মাত করল, কোন ছবি মুখ থুবড়ে পড়ল - বক্স অফিসের সব খবর জানতে পড়ুন আমাদেরবিনোদনবিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE