চূড়ান্ত অব্যবস্থায় ক্ষুব্ধ দর্শকরা।—নিজস্ব চিত্র।
ছবির কালেকশন ভাল।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও কোনও খামতি রাখা হয়নি।খামতি নেই প্রচারেও। তবুও প্রথম দু’দিনে তাল কাটল ২৪তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। সমস্যা করল ফেস্টিভ্যালের ছাপানো ছবির নির্ঘণ্ট এবং প্রথম দু’দিনে নজরুল তীর্থ আর পিভিআর সিনেমায় (ডায়মন্ড প্লাজা) নির্ধারিত ছবির পরিবর্তন।
প্রতিবারই ডেলিগেট কার্ডের সঙ্গে ছবির ছাপানো একটা নির্ঘণ্ট দেওয়া হয়। তাতে কবে, কোথায়, কোন সময়, কোন ছবি দেখানো হবে তার একটা পূর্ণাঙ্গ তালিকা থাকে। এবারও সেটা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেটা ভুলে ভরা। প্রথম ভুল শিশির মঞ্চের তালিকায়। সেখানে লেখা ছবি দেখানো হবে যথাক্রমে দুপুর ২টো, সন্ধ্যা ৬টা ৪৫, বিকেল ৪টে ১৫ এবং আবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৫-এ। কিন্তু আসলসময় সকাল ১১টা, দুপুর ২টো, বিকেল ৪টে ১৫ এবং সন্ধ্যা ৬টা ৪৫।পরের ভুল রবীন্দ্র সদন। নির্ঘণ্টে লেখা, সেখানে ছবি দেখানো হবে সকাল ১১টা, দুপুর ২টো, বিকেল ৪টে, সন্ধ্যা ৬টা। যার প্রতিটাই ভুল। আসল সময় সকাল ১১টা ১৫, দুপুর ৩টে ১৫, বিকেল ৫টা ১৫ এবং সন্ধ্যা ৭টা ৩০।
তৃতীয় এবং বড় ভুল নজরুল তীর্থে। ওই নির্ঘণ্টে লেখা আছে ছবি দেখানো হবে দুপুর ২টো, সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ এবং বিকেল ৪টে। আসলে তিনটে নয়, দিনে মোট চারটি শো দেখানো হবে। সকাল ১১টা, দুপুর ২টো, বিকেল ৪টে এবং সন্ধ্যা ৬টা।
আরও পড়ুন: দীপিকা-রণবীরের বিয়ে, কেঁদে ফেললেন কে?
প্রথম দুটো সিনেমা হলে ভুল শুধরানোর তা-ও কিছু উপায় আছে। কারণ দুটো হল একই জায়গায় এবং মেন ভেন্যু। সেখানে দু’টি বড় সঠিক নির্ঘণ্ট লাগানো রয়েছে। যা দেখে সাধারণ দর্শক সঠিক সময় জেনে নিতে পারছেন। কিন্তু নজরুল তীর্থে এমন কিছু নেই। ফলে দর্শকদের সমস্যা হচ্ছে। ফেস্টিভ্যালের ওয়েবসাইটে সঠিক নির্ঘণ্ট দেওয়া রয়েছে। তবে সব দর্শক ওয়েবসাইটদেখে ছবি দেখতে আসবেন, এটা আশা করা যায় না।
নানা ধরনের সমস্যায় পড়েছেন সিনেপ্রেমী মানুষ।
পিভিআর সিনেমা (ডায়মন্ড প্লাজা)-য় আবার অন্য ধরনের সমস্যায় পড়েছেন সিনেপ্রেমী মানুষ। ফেস্টিভ্যালের প্রথম দিন দুপুর দুটোয় সেখানে দেখানোর কথা ছিল প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক গ্যাসপার নোয়ের ‘ক্লাইম্যাক্স’ ছবিটি। কিন্তু দেখতে গিয়ে জানা যায়,যান্ত্রিক সমস্যার জন্য ছবিটি দেখানো যাবেনা। সে দিন পিভিআরে ছবিটি দেখতে গিয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়য়ের চলচ্চিত্র বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বললেন,‘‘অনেক দূর থেকে পার্টিকুলার এই ছবিটাই দেখব বলে এসেছিলাম। পুরো সময়টাই নষ্ট হল। তাছাড়া অনেকেই অনলাইন টিকিট কেটে ছবি দেখতে গিয়েছিলেন। তাঁদের টিকিট রিফান্ড করার কোন ব্যবস্থা নেই।”
আরও পড়ুন: স্পাইডার ম্যানের জনক স্ট্যান লি প্রয়াত
একই সমস্যা নজরুল তীর্থে। গত মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ‘দ্য ম্যান হু কিলড ডন কিহোতে’ ছবিটি দেখানোর কথা ছিল। কিন্তু হলে পৌঁছে দর্শক জানতে পারেন শো বাতিল। পরের ছবি ‘দ্য বোন কাকেলটর’ পাল্টে দেওয়া হয়। সিনেমার ছাত্র শুভজিৎ মহাজন অভিযোগ করেন, ‘‘যাচ্ছেতাই অবস্থা। হল কর্তৃপক্ষ ফেস্টিভ্যাল কর্তৃপক্ষের উপর দোষ দিয়েই খালাস। কোনও এক টেকনিক্যাল জিনিস নন্দন থেকে আসার কথা ছিল। কিন্তু সেটা না আসায় ছবি দেখানো যায়নি। আমরা এত দূর থেকে সকালবেলা ছবি দেখতে গেলাম। দু’ঘণ্টা এমনি বসে থাকতে হল।’’
ওই দিন বিকেলে নজরুল তীর্থে গিয়ে একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন দেবাঞ্জন সেনগুপ্ত। তাঁর অভিযোগ, ‘‘অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করার পর প্রোজেক্টর রুম থেকে কর্মীরা এসে জানালেন, কেডিএম কোড নন্দন থেকে আসার কথা ছিল। তা আসেনি। ফলে নির্ধারিত ছবিটি দেখানো যাবে না। অন্য ছবি দেখাব? অনেক দূর থেকে নিজেদের অন্যান্য কাজ ফেলে রেখে ছবি দেখতে গিয়ে এই অভিজ্ঞতা হল!’’
এই সমস্যার সমাধান কী? তা জানতে চলচ্চিত্র উত্সব কর্তৃপক্ষকে ফোন করা হলে তাঁরা ফোন ধরেননি। এই পরিস্থিতিতে অধিকাংশ দর্শকের প্রশ্ন, এই যদি অবস্থা হয়, তাহলে বিশ্ব চলচ্চিত্র উৎসবগুলির সঙ্গে কীভাবে আমরা এক আসনে বসব? কারণ শুধু ঝাঁ চকচকে উদ্বোধন নয়,চলচ্চিত্র উত্সবের হৃদয়, তার সিনেমা। তা দেখানোয় যদি গাফিলতি থাকে,তখন কি শাক দিয়ে মাছ ঢাকা সম্ভব?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy