মৃণাল সেন। ফাইল চিত্র।
প্রয়াত হলেন প্রবাদপ্রতিম চিত্রপরিচালক মৃণাল সেন। সকাল সাড়ে ১০ টা নাগাদ ভবানীপুরে নিজের বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন মৃণাল সেন। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন তিনি। মৃণালের প্রয়াণে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে একটা যুগের অবসান হল। বাংলা সিনেমার স্বর্ণ যুগের ট্রায়ো সত্যজিত-ঋত্বিক-মৃণালের দু’জন চলে গিয়েছিলেন আগেই। শেষ প্রদীপ নিভে গেল রবিবার।
১৪ মে, ১৯২৩ বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্ম মৃণালের। হাইস্কুলের পড়া শেষ করে কলকাতায় আসেন। পদার্থবিদ্যা নিয়ে স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়াশোনা করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। আজীবন বামপন্থায় বিশ্বাসী ছিলেন। কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার সাংস্কৃতিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু কখনও পার্টির সদস্য হননি।
১৯৫৫-এ ‘রাত ভোর’-এর মাধ্যমে পরিচালনা শুরু করেন মৃণাল। তাঁর পরের ছবি ‘নীল আকাশের নীচে’। ‘বাইশে শ্রাবণ’-এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খ্যাতি মেলে। তবে ১৯৬৯-এ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ভুবন সোম’-এর মাধ্যমে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি আসে। পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ইন্ডাস্ট্রিতে।
আরও পড়ুন, ৬০ বছরের সম্পর্ক ছিল আমাদের, বললেন সৌমিত্র
মৃণালের প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি টুইট করেন, ‘বাংলা চলচ্চিত্র জগতের অপূরণীয় ক্ষতি। ওঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইল।’
টুইট করে শোক জ্ঞাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও। এই মৃত্যু পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষ এমনকি সিনেমা জগতের খুব বড় ক্ষতি।
মৃণাল সেল পরিচালিত ছবিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ইন্টারভিউ, ভুবন সোম, খারিজ, কোরাস, মৃগয়া, আকালের সন্ধানে, কলকাতা ৭১, আকাশকুসুম, অন্তরীণ, খণ্ডহর, ওকা অরি কথা, একদিন প্রতিদিন, আমার ভুবন ইত্যাদি।
বেশ কয়েকবার জাতীয় পুরস্কারের সম্মান তো পেয়েইছেন। এ ছাড়াও দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার, কান চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি সম্মান, বার্লিন ও মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবের বেশ কয়েকটি পুরস্কারও পয়েছেন তিনি। সম্মানিত হয়েছেন শিকাগো, মন্ট্রিল, ভেনিস ও কায়রো চলচ্চিত্র উৎসবেও।
২০০২ সালে তাঁর পরিচালিত শেষ ছবি ‘আমার ভুবন’-এর জন্যও তিনি সেরা পরিচালক হিসাবে ‘সিলভার বিয়ার’ সম্মান পেয়েছিলেন।
মৃণালবাবুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন অমিতাভ বচ্চন, নন্দিতা দাস, মহেশ ভট্ট, সুজিত সরকার, মধুর ভাণ্ডারকর, মনোজ বাজপেয়ী, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্ট তারকারা।
Sad to learn of the passing of acclaimed film-maker Mrinal Sen. From Bhuvan Shome to the Calcutta trilogy, his penetrating and sensitive portrayal of social realities made him a fine chronicler of our times. A loss to Bengal, to India and to the world of cinema #PresidentKovind
— President of India (@rashtrapatibhvn) December 30, 2018
অমিতাভ বচ্চন মৃণাল সেনের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে লিখেছেন, তাঁর প্রথম ভয়েস ওভার মৃণাল বাবুর ছবিতেই। মহেশ ভট্টও রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতার লাইন পোস্ট করেছেন পরিচালকের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে।
২০১৭-এ প্রয়াত হন মৃণালের স্ত্রী গীতা। মৃণাল রেখে গেলেন পুত্র কুণালকে। তিনি আমেরিকায় থাকেন। পরিবার সূত্রে খবর, কুণাল আসবেন আগামিকাল। ততক্ষণ পর্যন্ত সায়েন্স সিটির কাছে শবদেহ সংরক্ষণালয়ে রাখা থাকবে প্রয়াত পরিচালকে দেহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy