(বাঁ দিক থেকে) ফওয়াদ খান, মাহিরা খান এবং রাহাত ফতেহ আলি খান। বলিউডে কাজ করা এই সব অভিনেতা-শিল্পীদেরই ‘বয়কট’-এর ঘোষণা এফডিব্লিউআইসিই-এর।
পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার পর থেকেই প্রতিবাদে শামিল গোটা দেশ। সিআরপিএফ জওয়ানদের মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন যেমন চলছে, তেমনই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া ‘প্রত্যাঘাত’-এর দাবি উঠেছে নানা মহল থেকে। এ বার সেই প্রতিবাদে শামিল হল বলিউড। পাকিস্তানের শিল্পীদের ভারতে কার্যত ‘বয়কট’ করল মুম্বই। পাক অভিনেতা, গায়ক-গায়িকা, শিল্পী বা কলাকুশলীদের সঙ্গে মুম্বইয়ের প্রযোজক পরিচালকদের কাজ করার উপর ‘নিষেধাজ্ঞা’ জারি করল মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির প্রধান সংগঠন দি ফেডারেশন অব ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ (এফডব্লিউআইসিই)।সংগঠনের মুখ্য উপদেষ্টা অশোক পণ্ডিতের মন্তব্য, ‘‘বারবার দেশে হামলার পরও যাঁরা পাকিস্তানের শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করার জন্য লালায়িত, তাঁদের লজ্জা হওয়া উচিত।’’
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে ভারতীয় সেই পরিচালক, প্রযোজককেও ‘বয়কট’ করা হবে বলে কড়া বার্তা দিয়েছেন পণ্ডিত। তিনি বলেন, ‘‘যে সব প্রযোজক, পরিচালক পাকিস্তানী অভিনেতা-শিল্পীর সঙ্গে কাজ করার জন্য জোরাজুরি করবেন, এফডব্লিউআইসিই তাঁদের বয়কট করবে। সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে এই অনমনীয় ফতোয়া জারি করা হল। বারবার আমাদের দেশে আক্রমণ করার পরও পাকিস্তানের সঙ্গে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের লজ্জা হওয়া উচিত। তাঁদের যখন লজ্জা নেই, তখন আমরাই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হচ্ছি।’’
এফডব্লিউআইসিই-র বয়কট মানে মুম্বইয়ের বিনোদন জগতে কার্যতআর পা রাখতেই পারবেন না কোনও পাকিস্তানি অভিনেতা, গায়ক-গায়িকা বা কলাকুশলী। কারণ, বলিউডের সিনেমা, টিভি, মিউজিক, বিজ্ঞাপন সমেত যাবতীয় ক্ষেত্রের প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পী, কলকুশলীদের ২০টিরও বেশি সংগঠনের মাথায় রয়েছে এফডব্লিউআইসিই। বিনোদন জগতের যে কোনও ক্ষেত্রে যাঁরাই কাজ করেন, তাঁরাই এই ২০টির মধ্যে কোনও না কোনও সংগঠনের সদস্য। আর এই সব ক’টি সংগঠনের নিয়ন্ত্রক এফডব্লিউআইসিই। সব মিলিয়ে এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ৫ লাখেরও বেশি। ফলে এফডব্লিউআইসিই কারও উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা মানে, তাঁর জন্য বলিউডের দরজাই বন্ধ হয়ে যাওয়া।
আরও পড়ুন: নজরদারি এড়াতে সিমহীন মোবাইল দিয়ে যোগাযোগ রাখছিল পুলওয়ামার চক্রীরা!
উরি হামলার পরেও নানা ভাবে প্রতিবাদ করেছিল বলিউড। কিন্তু বলিউডের এত বড় পদক্ষেপ এই প্রথম। পুলওয়ামা হামলার পর এফডব্লিউআইসিই যে পাকিস্তানের কার্যকলাপে বেজায় ক্ষুব্ধ, অশোক পণ্ডিতের কথাতেই তার আঁচ পাওয়া গিয়েছে। তিনি এ দিন আরও বলেন, একটা লোক কী ভাবে এত বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক নিয়ে কাশ্মীরে ঢুকতে পারে? সন্ত্রাসবাদী হামলা যখন বন্ধ হওয়ার কোনও লক্ষ্মণই নেই,সেই পরিস্থিতিতেও বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে কিছু লোক এখনও পাকিস্তানের শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করার জন্য হন্যে হয়ে পড়েন। প্রতিভা খুঁজতে যান সীমান্তের ওপারে।’’
আরও পডু়ন: ‘আলোচনার জন্য’ রাষ্ট্রদূতকে ইসলামাবাদে ফিরিয়ে নিয়ে গেল পাকিস্তান
এমনকি, সংগঠনের তরফে হুমকি দেওয়া হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ পাক শিল্পীদের নিয়ে সিনেমা করলে শুটিং ফ্লোরে গিয়ে ভাঙচুর করে দেওয়া হবে।
পুলওয়ামা হামলার পরের দিনই টি-সিরিজ ইতিমধ্যেই সব জায়গা থেকে পাক শিল্পীদের মিউজিক ভিডিয়ো এবং গান সরিয়ে নিয়েছে। ভবিষ্যতেও সেগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে সংস্থা। অন্য সংস্থাগুলিও সেই পথে হাঁটছে। বিভিন্ন চ্যানেল এবং লাইব্রেরি থেকে পাকিস্তানি গায়ক ও শিল্পীদের বাদ দেওয়ার জন্য মিউজিক কোম্পানিগুলিকে আগেই হুমকি দিয়েছিল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা। এই বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদগুলিই এবার সংগঠিত রূপ নিল এফডব্লিউআইসিই-র ঘোষণায়।
(হলিউড, বলিউড বা টলিউড - টিনসেল টাউনের টাটকা বাংলা খবর পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদনের সব খবর বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy