Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Sourav Das

Movie Review: জীবন-খাতায় ‘অল্প হলেও সত্যি’ প্রেমের টানাপড়েন, ছিমছাম ছবিতে প্রাপ্তি সাবলীল অভিনয়

কেউ কেউ অল্পের জন্য নিজের জীবনের সত্যিটাই মেনে নিতে পারেন না। কেউ আবার অল্প হলেও সত্যি হত যদি— সেই আশাতেই কাটিয়ে দেন জীবন। আশা-দুরাশার দোলাচলে আটকে থাকা চার জনের গল্প এ ছবিতে।

শুভদীপ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২১ ১৫:৫২
Share: Save:

প্রথম ভালবাসা যদি অল্প হলেও সত্যি হত, তা হলে কেমন হত? এ প্রশ্নটা বোধহয় আজীবন মনে থেকে যায় অনেকেরই। বিশেষত যদি সেই প্রথম ভালবাসায় অনেকখানি অপ্রাপ্তি থাকে। বহু মানুষ এই অল্পের জন্য নিজের জীবনের সত্যিটাই মেনে নিতে পারেন না। কেউ কেউ আবার এই অল্প হলেও সত্যি হত যদি— সেই আশাতেই কাটিয়ে দেন গোটা জীবন। ‘অল্প হলেও সত্যি’ সেই নিতান্ত আশা-দুরাশার দোলাচলে আটকে থাকা চার জন মানুষের জীবনের গল্প।

অর্জুন ( সৌরভ দাস) থাকে উত্তর কলকাতায়। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া তার মস্ত বড় বাড়ি। এক কালে ছাত্র সংগঠনের নেতা, উদাত্ত গলায় আবৃত্তিতে পারদর্শী, সুবক্তা ও যুক্তিবাদী অর্জুনকে দেখে মেয়েরা প্রেমে পড়তে বাধ্য। কিন্তু এক দিকে অসুস্থতা, অন্য দিকে আর্থিক অবস্থা তলানিতে। টিউশন করিয়ে আর বাড়ি ভাড়া দিয়ে কোনও রকমে দিন কাটে।

এ হেন অর্জুনের জীবনেই ঢুকে পড়ে অমৃতা (দর্শনা বণিক)। বাড়ির নতুন ভাড়াটে পরিবারের মেয়ে। অমৃতা নরম মনের, খানিক উদাস প্রকৃতির। অর্জুনের সঙ্গে তার আলাপ গড়ায় বন্ধুত্বে। তা গাঢ়তর হয়ে অমৃতার মনে অর্জুনের জন্য প্রচ্ছন্ন অনুভূতি তৈরি করে দেয়। আদর্শ এক প্রেমের গল্প শুরু হতে পারত এখানেই। কিন্তু বাধ সাধল অর্জুনের ক্যানসার। তার দেখভাল, ডাক্তারের কাছে ছোটাছুটি অজান্তেই এক মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে ফেলে দু’জনকে।

 ‘অল্প হলেও সত্যি’ ছবির দৃশ্য।

‘অল্প হলেও সত্যি’ ছবির দৃশ্য।

সিদ্ধার্থ (ঋষভ বসু) ও গুঞ্জন (সৃজনী মিত্র) এক বেসরকারি বিজ্ঞাপন সংস্থায় সহকর্মী। দু’জনের বিয়ে ঠিক হয়েছে। তার আগে নিজেদের সম্পর্কটাকে একটু তলিয়ে দেখে নিতে একসঙ্গে থাকতে চায় দু’জনে। দু’পক্ষের বাবা-মায়ের সম্মতিও মেলে। সেই সহবাসের দিনগুলোতেই গুঞ্জনের কাছে পৌঁছয় অর্জুনের ক্যানসারের খবর। অর্জুন, তার প্রথম ভালবাসা।

 ‘অল্প হলেও সত্যি’ ছবির দৃশ্য।

‘অল্প হলেও সত্যি’ ছবির দৃশ্য।

সময়ের আড়ালে হারিয়ে যাওয়া প্রেম, সেই প্রিয় মানুষটার কথা কি সিদ্ধার্থকে জানাবে গুঞ্জন? অর্জুনের সঙ্গে কী ফের দেখা হবে তার? অর্জুন-অমৃতা, সিদ্ধার্থ-গুঞ্জনের জীবন কোন খাতে বইবে, কতটা উল্টেপাল্টে যাবে চার জনের সমীকরণ, তা নিয়েই এগোয় গল্প। ছবির ঝকঝকে নির্মাণ এবং তরুণ পরিচালক সৌম্যজিৎ আদকের কাজ নজর কাড়ে। সৌরভ, ঋষভ, দর্শনা, ও সৃজনী প্রত্যেকেই সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন নিজের নিজের চরিত্র। তার মধ্যেও সবচেয়ে বেশি চোখ টানেন ঋষভ। ‘সিদ্ধার্থ’র টানাপড়েন, উথালপাথাল অনুভূতি তাঁর অভিনয়ের গুণে জীবন্ত হয়ে ওঠে। মৃত্যুপথযাত্রী অর্জুনের চরিত্রে সৌরভকেও বেশ সাবলীল লাগে। প্রাণবন্ত লাগে দর্শনা ও সৃজনীর অভিনয়ও।
ছবিতে সাহানা বাজপেয়ীর গলায় ‘মুখ ফেরায়না মন’ গানটি ভারি শ্রুতিমধুর। সম্পর্কে টানাপড়েনের বুনোটে সুন্দর, ছিমছাম একটি ছবি। তার প্রাণভোমরা হয়ে কানে বাজতে থাকে সেই গান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE