হালফিলে বলিউডে ‘অ্যাডাল্ট কমেডি’ বলতেই মনে আসে ‘মস্তিজাদে’ বা ‘হাউজফুল থ্রি’-এর মতো ছবি। যেখানে যৌনতা নিয়ে সুড়সুড়ি, দ্ব্যর্থবোধক ভাষায় মশকরা আর বক্ষখাঁজ দেখানোর অজুহাত খোঁজা হয়। সে দিক দিয়ে ভাবলে, এই ছবির জঁর ‘সাবালক’। ‘অ্যাডাল্ট’ নয়। পরিচালক আর এস প্রসন্নের তামিল ছবির হিন্দি রিমেক ‘শুভ মঙ্গল সাবধান’-এ পুরুষের যৌন সমস্যাকে সামনে রেখে, বিয়ে নামক সামাজিক প্রতিষ্ঠানটাকে কাটাছেঁড়া করা হয়েছে। আর সেই অস্ত্রোপচারের ছুরি হাস্যরস। এই ছবি যুগান্তকারী নয়। তবে ২০১৭-র বক্স অফিস যে ভাবে কৈশোরের ভাল লাগাকে (স্টার পাওয়ার) উপেক্ষা করে যৌবনের বিচক্ষণতার (ছবির কনটেন্ট) দিকে ঝুঁকছে, সেই ধারাকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে অবশ্যই সাহায্য করেছে আয়ুষ্মান-ভূমির বিবাহ-বিভ্রাট।
গুরুগ্রামের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার মুদিত (আয়ুষ্মান) অনলাইনে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় দিল্লির সুগন্ধাকে (ভূমি)। পালিয়ে বিয়ে করার ফ্যান্টাসি থাকলেও ‘ডিসেন্ট’ ছেলের প্রস্তাবে হ্যাঁ বলে সুগন্ধা। তবে বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে গিয়ে বাদ সাধে মুদিতের ‘জেন্টস প্রবলেম’। আর সেই নিয়ে শুরু হয় সম্পর্কের টানাপড়েন। তবে মুদিতের ব্যক্তিগত সমস্যা তার একার নয়। পাত্র-পাত্রীর পরিবার, বন্ধু-বান্ধব সকলেরই দুশ্চিন্তা, পাত্র ঠিক মতো ‘পারফর্ম’ করবে কি না।
ছবির প্রথমার্ধ বেশ মজার। হিতেশ কৈবল্যের সংলাপে হাততালিও পড়বে। তবে প্রথমার্ধের ‘পারফরম্যান্সে’ অনেকটাই জল ঢেলে দিয়েছে দ্বিতীয়ার্ধের অতি নাটুকেপনা। একই ঘটনা নিয়ে টানাহেঁচড়ায় এক সময়ে বিরক্তিও আসে। তার সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় স্টার ক্যামিও, হতাশাজনক ক্লাইম্যাক্স। আর অনেক বিষয়কে একসঙ্গে দেখাতে গিয়ে ছবির সাবলীল ছন্দটাই শেষে বিগড়ে দিয়েছেন পরিচালক।
মুদিতের চরিত্রে আয়ুষ্মান বেশ সপ্রতিভ। প্রথম ছবি থেকেই ‘আলফা মেল’এর কনসেপ্টকে চ্যালেঞ্জ করে বলিউডে ট্র্যাডিশনাল হিরোর সংজ্ঞা বদলাচ্ছেন তিনি। যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন ভূমি। তবে এ বার তাঁর অন্য ধরনের চরিত্র করা দরকার। ‘বরেলী..’র পর আরও এক বার মধ্যবিত্ত পরিবারের আধুনিকা মেয়ের সেকেলে মায়ের চরিত্রে দেখা গেল সীমা পহওয়াকে।
পারিবারিক ছবি বলেই এখানে যৌন সমস্যার বিষয়টিকে উপমার আড়ালে রাখা হয়েছে। তা সে ‘আলিবাবা আর চল্লিশ চোর’-এর গল্প দিয়ে সুগন্ধার মায়ের সঙ্গমের ব্যাখ্যা হোক বা মুদিতের সমস্যা বোঝাতে ডাক্তারের ‘বরাতি’ আর ‘ঘোড়া’র কাহিনি হোক না কেন!
তনিষ্ক বাগচী আর বায়ুর সুরে ‘রকেট সাইয়াঁ’ গানটি ছবির আবহকে তুলে ধরেছে। তবে কোনও কোনও দৃশ্যে ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের ব্যবহার একটু কম হলেও চলত।
সত্তর-আশির দশকে কপোত-কপোতীর চুম্বন আর ফুলের গায়ে হাওয়ার শিহরনই ছিল বলিউডে যৌন সম্পর্ক বোঝানোর রূপক। চায়ের কাপে গলে যাওয়া বিস্কুটের স্খলন দিয়ে ২০১৭ বোঝাচ্ছে পুরুষের যৌন সমস্যা। এ বার বলিউডের সাবালক হওয়া আটকায় কে তবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy