E-Paper

‘দ্বন্দ্বের’ ফায়দা নিয়ে হারানো ভোট ফেরার আশায় বাম

২০০৯ সালে এই কেন্দ্র ছিল সিপিএমের দখলে। ২০১৪ সালে দখল নেয় তৃণমূল। সে বার তৃণমূল পেয়েছিল ৩৯.৯৩ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিপিএম প্রার্থী পান ৩১.৯৭ শতাংশ ভোট।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৩৯
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

গত লোকসভা ভোটে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রে বামেদের ভোট ব্যাঙ্কে বড়সড় ধস নেমেছিল। বামেদের পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল বিজেপি। এ বারে সিপিএম নেতা-কর্মীদের অনেকেরই দাবি, হারানো ভোট ফিরে আসবে ঝুলিতে। যদিও পদ্ম না ঘাসফুল, কার পাপড়ি খসিয়ে ভোট ফিরবে, তার স্পষ্ট জবাব নেই তাঁদের কাছে। বামেদের দাবি মানতে নারাজ তৃণমূল, বিজেপিও।

২০০৯ সালে এই কেন্দ্র ছিল সিপিএমের দখলে। ২০১৪ সালে দখল নেয় তৃণমূল। সে বার তৃণমূল পেয়েছিল ৩৯.৯৩ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিপিএম প্রার্থী পান ৩১.৯৭ শতাংশ ভোট।বিজেপি ১১.৮৭ শতাংশ এবং কংগ্রেস পায় ৪.৭৯ শতাংশ ভোট। ২০১৯ সালে ফের তৃণমূল জেতে। সিপিএমকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে আসে বিজেপি। তৃণমূল ভোট পায় ৪৪.৫২ শতাংশ। বিজেপির ভোট ছিল ৩৮.৩২ শতাংশ। সেখানে সিপিএমের ভোট কমে দাঁড়ায় ১২.২২ শতাংশে। কংগ্রেসের ভোটও কমে দাঁড়ায় ২.৬৭ শতাংশে। এ বার এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের পৃথক প্রার্থী নেই। সিপিএম প্রচারে, মিছিলে, দেওয়াল লিখনে জোরদার প্রচার চালাচ্ছে। সাতটি বিধানসভা এলাকার বেশির ভাগ জায়গাতেই দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে হেঁটে প্রচার সেরে ফেলেছেন সিপিএম প্রার্থী নীরব খাঁ। পূর্বস্থলী ১ ব্লকে তাঁত শিল্প, আর্সেনিকের সমস্যা, পূর্বস্থলী ২ ব্লকে ভাগীরথীর ভাঙন, কালনা ২ ব্লকে ভাগীরথীর উপরে সেতু না হওয়ার মতো বিষয়গুলি নিয়ে প্রচারে সরবও হয়েছে সিপিএম। এ ছাড়াও কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে বিঁধে প্রচারে সারের দাম বৃদ্ধি, কালোবাজারি, ফসলের দাম না পাওয়ার মতো বিষয়েও জোর দেওয়া হয়েছে।

তবে প্রচারে ঝাঁঝ থাকলেও ভোটে তা কতখানি দেখা দেবে প্রশ্ন রয়েছে তা নিয়ে। নীরবের দাবি, ‘‘সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই দল ভাল ফল করবে। প্রচারে এমন কিছু মানুষকে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে গ্রামেগঞ্জে এগিয়ে আসতে দেখছি, যা আগে দেখা যায়নি।’’ পূর্বস্থলী উত্তরের সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ সাহাও বলেন, ‘‘ওষুধের দাম বৃদ্ধি, ফসলের দাম না পাওয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। প্রচারে বেরলোই তা টের পাওয়া যাচ্ছে। ভোট যে ফিরছে, ইঙ্গিত পাচ্ছি।’’

সিপিএম নেতাদের একাংশের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে বহু জায়গায়। সেই ফায়দা তুলবেন তাঁরা। দলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘আদিবাসী পাড়া, বাগদি পাড়া, দুলে পাড়ায় দলের এক সময় যে সংগঠন ছিল তার অনেকটাই বিরোধীদের হাতে চলে গিয়েছে। মানুষকে বুঝিয়ে ভোট ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ তৃণমূলের নেতাদের একাংশেরও দাবি, সিপিএম সংখ্যালঘু ভোট কাটলে তাঁদের ক্ষতি। বরং হারানো হিন্দু ভোট যদি কিছুটা ফিরলে লাভ হবে।

তৃণমূলের রাজ্যের মুখপাত্র দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘সিপিএমের সাংগঠনিক শক্তি দুর্বল হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি দেখে যা মনে হচ্ছে হারানো ভোট আর ফিরবে না।’’ বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘মানুষ এখন মনে করছেন বিজেপিই এ রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবে। তাই ভোট আমাদের দিকেই আসবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Kalna CPIM

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy