Advertisement
E-Paper

গুপ্তধন হাতে না এলেও আশা থাকল

ছবির শুরুর দিকটা বেশ জমাট। সেরিব্রাল উপাদানও প্রশংসনীয়। কিন্তু তার পর কী যে হল! পাহাড়ি দুর্গম জঙ্গল বলে দেখানো অগভীর অরণ্যে পিস্তলধারী একদল দুর্বৃত্তকে তিন জন খালি হাতে মেরে পাট করছে।

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ১০:২০
ছবিতে রাহুল ও পরমব্রত

ছবিতে রাহুল ও পরমব্রত

যকের ধন

পরিচালনা: সায়ন্তন ঘোষাল

অভিনয়: পরমব্রত, রাহুল, সব্যসাচী, কৌশিক

৫/১০

তখন খাসি পাহাড় ছিল মেঘালয়ে নয়, অসমে। অনেকে সেখানে যেতেন শ্রীহট্ট ঘুরে। ১৯২৩। হেমেন্দ্রকুমার রায়ের রোমাঞ্চকর উপন্যাস ‘যকের ধন’ প্রকাশিত হওয়ার বছর। কিছুটা রহস্যভেদী, তবে মূলত দুঃসাহসী অভিযাত্রী জুটি বিমল আর কুমারের আবির্ভাব হল। ওই উপন্যাসকে ধরে প্রথম ছবি ১৯৩৯ সালে, হরিচরণ ভঞ্জের পরিচালনায়। অভিনয় করেছিলেন অহীন্দ্র চৌধুরী, ছায়া দেবী, জহর গঙ্গোপাধ্যায়।

সায়ন্তন ঘোষালের ছবি ‘যকের ধন’ নিয়ে সেলুলয়েডের পরদায় দ্বিতীয় প্রয়াস। তবে সায়ন্তন ‘পিরিয়ড পিস’ করেননি। প্রতিপাদ্য এক রেখে গল্পটা ঘটমান বর্তমানের প্রেক্ষাপটে নতুন ভাবে গড়েছেন। আমদানি করেছেন নতুন কিছু চরিত্রেরও। উপায়ও ছিল না বোধহয়। ফেলুদা, ব্যোমকেশ ও কিরীটীর চরিত্র, কাহিনির উপকরণ এবং ঘটনার প্রেক্ষাপট যথেষ্ট জেল্লাদার। কিন্তু বিমল আর কুমার অসীম সাহসী হলেও চরিত্র হিসেবে সাদামাঠা। অনুষঙ্গেও এমন কিছু নেই, যা জেনারেশন ওয়াইকে মাল্টিপ্লেক্সে টেনে আনবে।

অতএব বড় পরদায় ২৮ বছর বয়সি পরিচালকের প্রথম কাজে থাকল স্মার্ট ফোন, গুগল, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়াল, মানবদেহের পরিমাপ বিষয়ক বিজ্ঞান, বৈদিক ভিলেজ, কলকাতার ভারতীয় জাদুঘর, তিব্বতি ভাষার উচেন লিপি এবং খাসি পাহাড়ের বদলে নেওড়া ভ্যালি।

ছবির শুরুর দিকটা বেশ জমাট। সেরিব্রাল উপাদানও প্রশংসনীয়। কিন্তু তার পর কী যে হল! পাহাড়ি দুর্গম জঙ্গল বলে দেখানো অগভীর অরণ্যে পিস্তলধারী একদল দুর্বৃত্তকে তিন জন খালি হাতে মেরে পাট করছে। প্রধান খলনায়ক করালী পট পট করে গুলি চালিয়ে খুন করছে তার সঙ্গীদের। এ সব অ্যানিমেশনে ভাল লাগতে পারে। তার উপর স্পেশ্যাল এফেক্টসে মেঘের আগমন ও বিস্ফোরণের দৃশ্য কাঁচা হাতের কাজ। লাভা থেকে কোলাখাম যাওয়ার অমন রাস্তা পেয়েও সিনেম্যাটোগ্রাফার সুদীপ্ত মজুমদার কাজে লাগালেন না! আর গুপ্তধনের গুপ্তগুহা যে স্টুডিয়োর সেট, সেটা সহজে বোঝা যাবে কেন? অথচ ছবির শেষে গুপ্তধনের মানেটা রীতিমতো চমকে দিল!

অভিনয়ে কৌশিক সেন ঝন্টের হিরুদা হিসেবে মানানসই, ভারতীয় জাদুঘরের অ্যাসিস্ট্যান্ট কিউরেটর হিসেবে নন। কুমারের চরিত্রে রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় সপ্রতিভ। তবে করালী মুখুজ্যের বর্ণনায় হেমেন রায় লিখেছেন, ‘কুতকুঁতে চোখ দুটো তার গোখরো সাপের মতো তীব্র হিংসায় ভরা।’ তা, সব্যসাচী চক্রবর্তী সেই করাল চোখজোড়া আনতে পারলেন কোথায়?

অভিনয়ে সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, মানে বিমল। এই বিমল ফেলুদার দ্বারা প্রভাবিত। ফেলুদার শক্তিশালী মগজাস্ত্রের প্রতিফলন ছিল তাঁর চোখের ধারালো ভাষায়, তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে। যা পুরোদস্তুর ফুটিয়ে তুলতে পেরেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বিমল ওরফে পরমব্রত যখন বলেন, ‘তিব্বতি লেখা, খুলির নকশা, হিরুদার মেসেজ, করালীর সাহিত্যচর্চা...পুঞ্জ পুঞ্জ রহস্য তার জাল বিস্তার করতে আরম্ভ করেছে কুমার,’ তখন মনে হয়, পরবর্তী ফেলুদা খুঁজতে কি খুব বেশি কাঠখড় পোড়াতে হবে?

Jakher Dhon Bengali Movie Tollywood যকের ধন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy