Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

ঘিরে থাকো

আনারকলি। সব চেহারায় কিন্তু মানাবে না। কী করবেন ফিগার ঠিক করতে? পরামর্শ দিলেন ফিটনেস বিশেষজ্ঞ চিন্ময় রায়।আপনার ওয়ার্ড্রোবে এত দিনে বেশ কিছু আনারকলি ড্রেস জমে গিয়েছে নিশ্চয়ই? একটা ব্যাপার খেয়াল তো করেছেনই। তা হল কলিদার এই পোশাকের ঘেরে নিজেকে সাজানোর ঝক্কি বেশ অনেকটাই। ফিগারটা সুন্দর হতেই হবে।মোটা, ভুঁড়িওলা চেহারায় এই পোশাক? দোহাই, এই দৃশ্যদূষণ ভুল করেও করবেন না।

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৪ ০১:০০
Share: Save:

আপনার ওয়ার্ড্রোবে এত দিনে বেশ কিছু আনারকলি ড্রেস জমে গিয়েছে নিশ্চয়ই?

একটা ব্যাপার খেয়াল তো করেছেনই। তা হল কলিদার এই পোশাকের ঘেরে নিজেকে সাজানোর ঝক্কি বেশ অনেকটাই। ফিগারটা সুন্দর হতেই হবে।

মোটা, ভুঁড়িওলা চেহারায় এই পোশাক? দোহাই, এই দৃশ্যদূষণ ভুল করেও করবেন না।

বুকের ওয়ার্কআউটে বার্বেল

আনারকলি চুড়িদারে নিজেকে ক্যারি করার অন্যতম শর্ত হল বুক আর পেটের অংশকে টানটান, সুঠাম করা। বেশির ভাগ মহিলারই এই দুই অংশে অতিরিক্ত মেদ জমার প্রবণতা দেখা যায়। তাই মাথা খাটিয়ে বেছে বেছে ওয়ার্কআউট করতে হবে। একটা জিনিস সবাই জানেন। মেয়েদের শরীরের ওপরের অংশে ফ্যাট বেশি থাকে। যতই ওর্য়াকআউট করুন না কেন, এই ফ্যাট পুরোপুরি কমানো কখনওই সম্ভব নয়। যেটা করা যায়, তা হল উপরের অংশটাকে ‘শেপলি’ করা। মানে আকর্ষণীয় গঠনে আনা। তবেই কিন্তু আনারকলি পোশাকে সৌন্দর্য খুলবে। তাই শুধু দৌড়-ঝাঁপে কাজ হবে না। বার্বেল বা ডাম্বেল নিয়ে ওয়ার্কআউট করতে পারলে সবচেয়ে ভাল। ডাম্বেল, চেস্ট প্রেস, বেঞ্চ প্রেসও কিন্তু শরীরের ওপরের অংশের পেশির জোর বাড়িয়ে সুগঠিত করে পেশিকে। সপ্তাহ দুয়েক হাল্কা ওজন নিয়ে ১২-টা রিপিটিশন করবেন। তার পর মাঝারি ভারি ওজন নিয়ে করুন ১০টা রিপিটিশন। ৩-৪টে সেট করলেই যথেষ্ট।

বুকের অংশকে সুগঠিত করতে আর একটা দুর্দান্ত ওয়ার্কআউট হল পুশ আপ। প্রথম প্রথম হাঁটুতে ভর রেখে পুশ আপ দিন। যাকে বলে মডিফায়েড পুশ আপ। সপ্তাহ দুয়েক বাদে পায়ের পাতায় ভর রেখে প্রথাগত পদ্ধতিতে পুশ আপ করুন। মেডিসিন বল নিয়ে করতে পারেন চেস্ট প্রেস-ও। নিল ডাউন হয়ে ৩-৪ কেজি ভারি মেডিসিন বল বুকের সামনে থেকে দু’হাতে জোরে দেয়ালে ছুঁড়ে দিন। দেওয়াল থেকে বলটা রিবাউন্ডে এলে ধরে নিন। এ ভাবে করতে হবে ৪টে সেট। আর ১০ বার রিপিটও করতে হবে। এ ভাবে করতে পারেন এক দিন অন্তর এক দিন।

পিঠ বাঁচাতে হরাইজন্টাল পুল আপ

পেটের অংশে ফ্যাট থাকলে আনারকলি চুড়িদার কিন্তু মোটেই মানাবে না। অনেকেই কিন্তু আনারকলির ঘেরে ভুঁড়ি ঢেকে দেওয়ার কায়দা খোঁজেন। পোশাকটা পরার পর দেখতে যদিও অত্যন্ত বিশ্রী লাগে। কাজেই যাই হোক না কেন, ভুঁড়ি কমাতে ওজন নিয়ে ব্যায়াম করতেই হবে। শরীরের প্রধান পেশিগুলো বেছে নিয়ে করতে হবে এক্সারসাইজ। শুধু বুক বা পেটই কেন। পিঠের সৌন্দর্যও কিন্তু আনারকলি পোশাক ক্যারি করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই পিঠের জন্য করতে পারেন ডাম্বেল কোর রো বা হরাইজন্টাল পুল আপ। আবার চুড়িদার পরতে তো পায়ের গঠনকেও হেলাফেলা করলে চলে না। পায়ের ক্ষেত্রে তাই স্টেপ আপ, রোটেশন, ডাম্বেল ওভারহেড লাঞ্জ, প্লেট হাতে পিস্তল স্কোয়াট, সুইস বল হ্যাম কার্ল দারুণ কাজে দেবে। সপ্তাহে তিন দিন পায়ের ওয়ার্কআউটগুলো করলেই যথেষ্ট।

কোর-য়ে থাকুন

এত কিছু করতে গিয়ে কোর এক্সারসাইজটাকে অবহেলা করবেন না। সপ্তাহে ৪-৫ দিন করতেই হবে। শুয়ে বা হামাগুড়ি দেওয়ার ভঙ্গিতে পেটটা ভিতর দিকে টেনে ধরে রাখুন ১০ সেকেন্ড। অভ্যেস হলে সময়টা বাড়িয়ে নেবেন আস্তে আস্তে। এই সময় শ্বাস নেওয়া ছাড়ার প্রক্রিয়াটাও স্বাভাবিক রাখতে হবে। এই ওয়ার্কআউটটা করলে পেটের গভীরের পেশি কার্যক্ষম হয়। পেটের আলগা ভাব কেটে গিয়ে টানটান ভাব আসে। প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক, ব্রিজ এই কোর এক্সারসাইজগুলো করাও যেমন সহজ, ফিগার কারেকশনেও তেমনই দারুণ কাজ দেয়।

ওপরের ওয়ার্কআউটগুলো তো শিখে গেলেন। এ বার যেটা করতে হবে তা হল নিজস্ব একটা ওয়ার্কআউট ব্যাঙ্ক তৈরি করে নিতে হবে আপনাকে। আপনার এক্সারসাইজ ব্যাঙ্কে রাখুন সুইস বলে রোল আউট, ডায়নামিক সাইড প্ল্যাঙ্ক, স্পাইডার প্ল্যাঙ্ক, মেডিসিন বল ডায়নামিক উডচপের মতো সব ওয়ার্কআউট। ৪-৫টা এক্সারসাইজ বেছে নিয়ে ১২-১৪টা রিপিটিশন করতে হবে। আর প্রতিটা এক্সারসাইজ করবেন কমপক্ষে ৩ সেট করে।

পরুন আপনিও

• দিনে ৬-৭ বার অল্প অল্প খান। কার্বোহাইড্রেট একেবারে বাদ দেবেন না। ওটস, আটার রুটি, ডালিয়া খেতেই পারেন। চিকেন স্যুপ নিন। মাটন নয়। সেদ্ধ সবজি, মরসুমি ফল খেতে হবে।

• স্ট্রেস নিয়ে ওয়ার্কআউট করলে মেদ ঝরতে সময় লাগে। তাই ওয়ার্কআউটটা এনজয় করে করুন।

• পায়ের ওয়ার্কআউটও করুন গুরুত্ব দিয়ে। করতে পারেন সুইস বল হ্যাম কার্ল, স্টেপ আপের মতো ওয়ার্কআউট।

• ওজন নিয়ে ব্যায়াম করলে ভুঁড়ি খুব তাড়াতাড়ি কমে যাবে।

তা হলে কী দাঁড়াল? ২০-২৫ মিনিট সপ্তাহে ৩-৪ দিন তীব্রমাত্রার কার্ডিও, সকালে ওজন নিয়ে ব্যায়াম, আর বিকেলে সম্ভব হলে কার্ডিও। চাইলে ওজন নিয়ে ব্যায়ামের পরও কার্ডিও এক্সারসাইজ করতে পারেন। বেছে নিতে পারেন রোয়িং, ২০-৩০ মিনিট জোরে দৌড়, বক্সিং, সিঁড়ি বেয়ে ওঠার মতো কিছু আনকনভেনশনাল ওয়ার্কআউটও। প্রতিটা ওয়ার্কআউটই ২-৩ মিনিট করার পর ২ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ৫-৬ বার রিপিট করতে হবে।

এত কিছুর রেজাল্ট?

আপনার গর্জাস আনারকলি-সেলফিতে তারিফের বন্যায় ভেসে যাওয়া তো এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE