সকালের হাওয়ায় এখন হাল্কা ঠান্ডার আমেজ। ঘামের গল্পই নেই। সকাল সকাল গায়ে ট্র্যাক আপার চড়ালে বেশ আরামই লাগে। ওয়ার্কআউটপ্রেমীদের তাই একটাই পরামর্শ।
জিমের এসি ছেড়ে মুক্ত হাওয়াতে বেড়িয়ে আসুন। ওয়ার্কআউট করুন খোলা হাওয়ায়।
ঘরে-বাইরে
সকালের তাপমাত্রা এখন প্রায় দিনই ১৪-১৫ ডিগ্রির আশপাশ। বাতাসে অক্সিজেনও প্রচুর। সব মিলিয়ে একটা সতেজ ভাব। ঘাম ঝরাতে চাইলেও বেশ কসরত করতে হবে। ওয়ার্কআউট এফেক্টেও তাই অনেকটা ফারাক। জিমের ট্রেডমিল, ক্রস ট্রেনার, সাইকেল একঘেয়ে হয়ে গিয়েছে। এই সময়ের ওয়ার্কআউট তাই খুব বৈচিত্র্যের আর চ্যালেঞ্জিং হওয়া দরকার। ঘরের চার দেওয়ালের ভিতর ওয়ার্কআউট বন্ধ করুন। পার্ক, সরোবর, আবাসনের মাঠ বা উদ্যানে দৌড়োদৌড়ির ওয়ার্কআউট করুন। সেই চ্যালেঞ্জটা পেয়ে যাবেন। শুধু একটু উদ্ভাবনী শক্তি দেখাতে হবে। যে ওয়ার্কআউটই করুন না কেন, শুরুতেই ওয়ার্ম আপ করাটা কিন্তু মাস্ট।
ফেলুন-তুলুন
নিশ্চয়ই ভাবছেন কী ধরনের ওয়ার্কআউট করবেন?
কয়েকটা মার্কার নিন। সঙ্গে নিন ফুটবলের মাপের একটা বল, যেটা ড্রপ খেলেই লাফায়। মার্কার না থাকলে নিতে পারেন ৩-টে জলের বোতল। এ বার মার্কার কী ভাবে রাখবেন, সেটা বুঝে নিন। প্রথম মার্কার থেকে লম্বা স্টেপ মেপে ১০-পা দূরে রাখুন আরেকটা মার্কার। প্রথম মার্কার থেকে জোরে ছুটুন। মাঝের মার্কারে বলটা রেখে দিন। এ বার শেষ মার্কার পর্যন্ত জোরে দৌড়ন। ঘুরে আসার সময় বলটা তুলে নিয়ে প্রথম মার্কারে দৌড় শেষ করুন।
ফিটনেস ভাল হলে ফেরার সময় জোরে দৌড়ে আসতে পারেন। ফিটনেস যদি গড়পড়তা হয়, তা হলে জগিং করে ড্রিলটা করুন। ফিটনেস আরও কম হলে করুন জোরে হেঁটে। ঘাবড়ানোর কিছু নেই। ১০ বার যাবেন। ১০ বার ফিরবেন। ২ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে রিপিট করবেন ৫-৬ বার। বল সেন্স ভাল হলে বলটাকে ড্রপ খাইয়ে বাস্কেটবলের মতো দৌড়ন।
ফলো দ্য বল
মার্কার রাখার মাপজোক ঠিক আগের ড্রিলটার মতো। দরকার শুধু একজন সঙ্গী হলেই এই ড্রিলটা করতে পারবেন। পার্ক বা সরোবরে কাউকে একটু সাহায্য করার জন্য ডেকে নিন। আপনি দাঁড়ান ঠিক মাঝের মার্কারে সঙ্গীর দিকে মুখ করে। সঙ্গীর হাতে থাকুক বলটা। বলটা একবার ড্রপ করে বাড়িয়ে দিলেই আপনি ছুটে বা জগিং করে গিয়ে বলটা ধরে সঙ্গীকে ফেরত দিন। এ বার আপনাকে ডান দিকের মার্কারে ছুটে যেতে হবে কারণ উনি বলটা ওই দিকেই ড্রপ দিয়ে দেবেন। একবার বাঁ দিকে, একবার ডান দিকে বল দেওয়া চলবে নাগাড়ে। আপনার লক্ষ্য বল ধরে, ড্রপ দিয়ে বলটা ফেরত দেওয়া। সঙ্গীকে বলবেন আপনার দৌড়ের গতি অনুযায়ী বল দিতে। ফিটনেস অনুযায়ী দু’দিকেই ৮-১০ বার বল দেওয়া-নেওয়া হোক। ২ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ড্রিলটা রিপিট করতে হবে ৫-৬ বার।
প্ল্যাঙ্ক একপায়ে ব্রিজ
যাদের বল-মার্কার গুলিয়ে যায়, তাদের জন্য একেবারে সহজ কার্ডিও। আপনার ফিটনেস অনুযায়ী ঠিক করুন দৌড়বেন, নাকি জগিং বা হাঁটা বেছে নেবেন। যেটাই করুন, ৩ মিনিট টানা করতে হবে। ঠিক পরপর মাটিতে দুই কনুই আর পায়ের পাতায় ভর রেখে শরীরটা শূন্যে ধরে রাখুন। মাথা, পিঠ, কোমর এক সরলরেখায় থাকবে। ব্যায়ামটার নাম প্ল্যাঙ্ক। সাধ্য মতো ১০-৩০ সেকেন্ড ধরে রাখতে হবে। এ বার উঠেপড়ে ফিটনেস অনুযায়ী হয় জগিং করুন, নইলে আস্তে হাঁটুন ১ মিনিট। এ বার করুন ২ মিনিটের দৌড় বা জগিং। হয়ে গেলেই চিত হয়ে শুয়ে হাঁটু কোমরের কাছে ভাঁজ করে এনে একটা পায়ের পাতা মাটিতে রেখে অন্য পা-টা শূন্যে রাখুন। এ বার কোমরটা মাটি থেকে ওঠান আর নামান। কোমর বুকের সমান ওপরে ওঠান। ১২ বার করুন দু’পায়ে। ব্যায়ামটার নাম একপায়ে ব্রিজ। এ বার উঠে পড়ে ১ মিনিট জগিং বা হাঁটা করে নেবেন। এতে সম্পূর্ণ হল এক মিনিটের একটা সাইকেল। এ রকম ৩-৪ টে সাইকেল করার চেষ্টা করুন বিশ্রাম না নিয়েই।
প্রকৃতির মধ্যে...
• বল ব্যবহার করে ড্রিলে দক্ষতা বা স্কিল আর কো-অর্ডিনেশন তৈরি হয়। ট্রেডমিলের দৌড়ে স্কিলের ব্যাপারই নেই। বলের গতি আপনাকে গতি বাড়াতে বাধ্য করবে। আপনি একটা চ্যালেঞ্জ অনুভব করবেন
• রিসার্চের ফল বলছে প্রকৃতির সবুজের মধ্যে ওয়ার্কআউট করলে মানসিক অবসাদ কাটে। এই সময় বাতাসে বেশি অক্সিজেন পাওয়া যায়। সুতরাং শরীর অনেক সতেজ হয়। জিমের বদ্ধ পরিবেশে তা সম্ভব নয়
• আপনি দৌড়নোর মতো ফিট না হলে জগিং করুন। না হলে জোরে হাঁটা তো আছেই। পারব না বলে হাল ছেড়ে দেবেন না
• ৩-১-২-১ ড্রিলে দৌড় বা জগিংয়ের মাঝে প্ল্যাঙ্ক, একপায়ে ব্রিজ করলে কোর পেশির জোর বাড়ে। মানে একসঙ্গে ক্যালোরি ঝরা আর পেটের মাঝারি অংশের জোর বাড়া দুটোই হচ্ছে। একে বলে ফিউশন ট্রেনিং
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy