সাধারণত উৎসবের মরসুমের পরে, লক্ষ করা যায়, ডায়াবিটিস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে। ছবি: শাটারস্টক।
শীতকাল মানেই খাওয়াদাওয়ার মরসুম। পিকনিক, বিয়েবাড়ি তো লেগেই আছে সঙ্গে রয়েছে ক্রিস্টমাস। শীতকাল শুরু হলেই কেক, পিঠেপুলি না খেলেই নয়। নলেন গুড়ের স্বাদ চেখে না দেখলে কি হয়? সব মিলিয়ে যাঁদের ডায়াবিটিস আছে তাঁদের কাছে কিন্তু ব্যপারটা মোটেই ভাল নয়। শীতের বাহারি খাবারদাবারের প্রলোভনে পা দিলেই বেড়ে যায় রক্তের শর্করার মাত্রা। ডায়াবিটিসের রোগীরা শীতের মরসুমে কী ভাবে নিজেদের সুস্থ রাখবেন?
চিকিৎসক রূপম চৌধুরী বললেন, “সাধারণত উৎসবের মরসুমের পরে, আমরা লক্ষ্য করি ডায়াবিটিস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যায়। মানুষ শীতের মরসুমে খাওয়াদাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা অত্যধিক বেড়ে যায়। দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা এড়াতে শীতে শরীরের উপর বাড়তি নজর না দিলেই নয়। ডায়াবেটিকদের বাড়িতে রক্তের শর্করা মাপার যন্ত্রটি কিনে রাখাই শ্রেয়। শীতের মরসুমে নিয়মিত শর্করার মাত্রাটি পরিমাপ করলে ভাল।’’
শীতের মরসুমে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবেন কোন উপায়?
স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া: কোনও অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে, আপনি কী খাবেন তার জন্য একটি পরিকল্পনা করুন। খাবারে ফ্যাট, শর্করা এবং নুনের পরিমাণ সীমিত করুন এবং অবশ্যই কার্বোহাইড্রেট-যুক্ত খাবারের বিষয়ে সতর্ক থাকুন। সারা দিনে অল্প মাত্রায় বারে বারে খান। ভারী খাবার খাবেন ভেবে বাকি সময়টা খালি পেটে থাকবেন না। এই অভ্যাস কিন্তু মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে শরীরে। প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের কাছ থেকে একটা ডায়েট চার্ট বানিয়ে নিন।
রক্তের শর্করা মাত্রার নিয়মিত পরিমাপ: এই মরসুমে নিয়মিত রক্তের শর্করার মাত্রা পরিমাপ করতেই হবে। বাড়িতেই রক্তের শর্করা মাপার কিট কিনে রাখুন। সকালে খালি পেটে ও রাতে খাওয়ার আগে শর্করার মাত্রা পরিমাপ করুন। আর অবশ্যই একটি খাতায় তালিকার আকারে লিখে রাখুন পরিমাপগুলি।
ঘুমের চক্র সম্পূর্ণ করুন:
এই মরসুমে রোজ রোজ পার্টির কারণে ঘুমের বারোটা বাজছে। রাতে দেরি করে ঘুমোনো আর অফিসের তাড়ায় সকালে তাড়াতাড়ি থেকে ওঠার কারণে ঘুম ঠিকঠাক হয় না। এর প্রভাব পড়ে শরীরের উপর। ঘুম কম হলে এর প্রভাব পড়ে ইনসুলিনের কার্যকারিতার উপর।
শরীরচর্চায় নজর: ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকরা শরীরচর্চা করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাতে কিছুটা হলেও শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিয়ম করে যদি মিষ্টি খেয়ে থাকেন, তা হলে নিয়ম করে শরীরচর্চাও করতে হবে। না হলে সমস্যা হতে পারে। বিয়েবাড়িতে গিয়ে একটার বদলে তিনটে রসগোল্লা খেয়ে নিয়েছেন ভাল কথা। কিন্তু পরের দিন অন্তত ৩০ মিনিট সময় বার করুন শরীরচর্চার জন্য। ভারী শরীরচর্চাই করতে হবে এমনটা নয়, হাঁটাহাটি, যোগাসন, খেলাধুলোতেও উপকার পেতে পারেন।
মানসিক উদ্বেগ কমান:
ডায়াবিটিসের নিয়ন্ত্রণে রাখতে মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন। মিষ্টি খাচ্ছেন মানেই ডায়াবিটিস রক্তে জাঁকিয়ে বসবে তার কোনও মানে নেই। তবে সাবধান থাকতে তো দোষ নেই। মানসিক চাপে থাকলে কর্টিসল হরমোন উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে যায়। একে হরদম মিষ্টি খাচ্ছেন, তার উপর কর্টিসল হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া— সব মিলিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা প্রভাবিত হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy