বাড়িতে থেকেও ডেঙ্গির রোগী সেরে উঠতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
এডিস ইজিপ্টাই মশার কামড়ে প্রতি বছর সারা বিশ্বে প্রায় ১০ কোটি মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। এঁদের মধ্যে কারও কারও ক্ষেত্রে এই জ্বর মারাত্মক আকার নেয়। চিকিৎসার পরিভাষায় একে বলা হয় ডেঙ্গি হেমারেজিক ফিভার। শিশু এবং বয়স্কদের মধ্যে এই ধরনের মারাত্মক অবস্থা বেশি দেখা গেলেও, ইদানীং কম বয়সের ছেলেমেয়েদের মধ্যেও জ্বরের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। প্রাণ হারাচ্ছে অল্পবয়সিরাও। ১১ সেপ্টেম্বর ডেঙ্গি জ্বর কেড়ে নিয়েছে ২৩ বছর বয়সি যাদবপুরের পড়ুয়া অহিদুর রহমানকে।
যাঁদের এক বার ডেঙ্গি হয়ে গিয়েছে, তাঁদের দ্বিতীয় বার বা তৃতীয় বার ডেঙ্গি হলে তা মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছে যেতে পারে। ‘হেমারেজিক’-এর অর্থ রক্তপাত। রোগীর শরীরের বিভিন্ন ধমনী এবং শিরা ফেটে গিয়ে হুহু করে রক্ত এবং প্লাজমা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। বাইরে থেকে রক্ত দিলেও অনবরত রক্তক্ষরণে রোগীর অবস্থা ক্রমশ জটিল হয়ে ওঠে। কখন কোন রোগীর ডেঙ্গি যে মারাত্মক রূপ নেবে, তা আগে থেকে বোঝা মুশকিল।
সাধারণত জ্বর, মাথাযন্ত্রণা, হাত-পায়ের সঙ্গে সারা শরীরে ব্যথা, বমি ভাব, অরুচি, মল থেকে রক্তপাত ডেঙ্গি রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। বাড়িতে থেকেও ডেঙ্গির রোগী সেরে উঠতে পারেন। তবে জ্বর সেরে গেলেই যে আপনি সুস্থ এমনটা ভাবার কারণ নেই। চিকিৎসকদের মতে, জ্বর কমলেও সঙ্কটজনক অবস্থার লক্ষণগুলি প্রথমেই বোঝেন না কেউ। ফলে হাসপাতালে ভর্তি করাতে দেরি হওয়ায় অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে পড়ে, তখন বিপদের ঝুঁকি বেশি।
ডেঙ্গি রোগীর কোন কোন লক্ষণ দেখলে বুঝতে হবে যে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে?
চিকিৎসকদের মতে, ডেঙ্গি ধরা পড়লেও রোগীকে বাড়িতে রেখে শুশ্রূষা করা যেতে পারে। তবে কিছু উপসর্গ দেখা দিলেই সময় নষ্ট না করে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। কী কী দেখলে সতর্ক হবেন?
১) পেটে ব্যথা।
২) মল বা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তপাত। ডেঙ্গির সংক্রমণ হলে রক্তে অনুচক্রিকা বা প্লেটলেট কাউন্ট কমে যেতে শুরু করে। আর এই কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশে হেমারেজ অর্থাৎ, রক্তক্ষরণ হয়। মাড়ি এবং নাক থেকেও হতে পারে রক্তপাত।
৩) সারা দিনে যে পরিমাণ প্রস্রাব হত, তার পরিমাণ কমে যাওয়া।
৪) শ্বাসকষ্ট।
৫) ত্বকে লাল লাল র্যাশ।
৫) ডেঙ্গি শক সিনড্রোম থেকে মানবদেহে জলশূন্যতা তৈরি হয়। সঙ্গে সঙ্গে পাল্স রেট অনেকটা বেড়ে যায় এবং রক্তচাপ খুব কমে যায়। শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। শ্বাসপ্রশ্বাস খুব দ্রুত চলে। রোগী অস্থির হয়ে ওঠেন। তখন সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে ভর্তি করানো উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy