ডায়াবিটিস ঘটিত নিউরোপ্যাথির প্রভাবে যৌনাঙ্গে ব্যথা ও অসাড়তার মতো সমস্যা দেখা দেয়। ছবি: প্রতীকী
ডায়াবিটিস হানা দেয় গুপ্তঘাতকের মতো। ‘বিপদ কখনও একা আসে না’ বলে একটি প্রবাদ রয়েছে। ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে এই কথা বিশেষ ভাবে প্রযোজ্য। ধমনী ও হৃদ্যন্ত্র থেকে বৃক্ক, এই রোগের আক্রমণে সমস্যার হাত থেকে রেহাই পায় না কোনও অঙ্গই। এই সব সমস্যা ছাড়াও ডায়াবিটিসে ক্ষতি হতে পারে যৌনজীবনেরও। পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে সকলের যৌনজীবনেই গুরুতর সমস্যা তৈরি করতে পারে ডায়াবিটিস।
আমেরিকার ডায়াবিটিস সোসাইটি বলছে, এই রোগের ফলে কমে যায় যৌনমিলনের ইচ্ছা। হ্রাস পায় শারীরিক সক্ষমতাও। ডায়াবিটিসে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয় অনেক সময়। শারীরিক ও মানসিক— দু’দিক থেকেই ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে এই সমস্যা।
ডায়াবিটিসের আক্রমণে দেখা দিতে পারে ডায়াবিটিস ঘটিত নিউরোপ্যাথি। ডায়াবিটিসের প্রভাবে স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হলে এই ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। এই রোগের প্রভাবে যৌনাঙ্গে ব্যথা ও অসাড়তার মতো সমস্যা দেখা দেয়। কিছু ক্ষেত্রে রোগীরা যৌনাঙ্গের অনুভূতি হারিয়ে ফেলেন। পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে লিঙ্গ শিথিলতা।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ ডায়াবিটিস রোগী কোনও না কোনও সময়ে লিঙ্গ শিথিলতায় আক্রান্ত হন। স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা ছাড়াও ডায়াবিটিস ঘটিত সংবহনতন্ত্রের সমস্যাও এর অন্যতম কারণ। ডায়াবিটিসের জন্য অনেক সময় প্রচুর ওষুধ খেতে হয়। সে সবের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে কিছু ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন ক্ষরণ বিঘ্নিত হতে পারে, যা কারণ হতে পারে লিঙ্গ শিথিলতার।
পশ্চাদমুখী বীর্যপাতও ডায়াবিটিস রোগীদের আর একটি বড় সমস্যা। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন’। এই রোগে লিঙ্গের বদলে মূত্রাশয়ে বীর্য প্রবেশ করে। যৌনাঙ্গের ‘স্ফিঙ্কটর’ পেশির কার্যক্ষমতা হ্রাসই এই সমস্যার কারণ। রক্তে শর্করার পরিমাণের তারতম্যের ফলে এই পেশি নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলেই এ রূপ সমস্যা সৃষ্টি হয়।
শুধু পুরুষরাই নন, ডায়াবিটিসে আক্রান্ত মহিলারাও একই ভাবে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। মধুমেহর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটি নারীদেহে দেখা যায়, তা হল যোনিদেশের শুষ্কতা। হরমোনের তারতম্য ও রক্ত সঞ্চালনের সমস্যাই এর মূল কারণ। ডায়াবিটিসের আক্রমণে মহিলাদের যোনির প্রদাহ ও সংক্রমণের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। বৃদ্ধি পায় মূত্রনালীর সংক্রমণ বা ইউটিআই-এর আশঙ্কাও। কাজেই এই ধরনের কোনও সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy