E-Paper

Varicose Veins: সার্জারি ছাড়াও ভেরিকোজ ভেইনের চিকিৎসা সম্ভব, জানাচ্ছেন চিকিৎসক মানস সাহা

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতের ৭ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। যদিও এই রোগ সম্পর্কে এখনও অনেকগুলি বিষয় বহু মানুষের কাছে সম্পূর্ণ অজানা।

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২২ ০৮:২১
ভেরিকোজ ভেইনস

ভেরিকোজ ভেইনস

বলা হয়, শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল পা। আমাদের দাঁড়িয়ে থাকা, হাঁটা-চলা,দৌড়ানো, — এই সব কিছুতেই সামাল দেয় আমাদের পা। প্রতিদিনের জীবনে, যাঁদের পায়ে অত্যন্ত চাপ পড়ে, তাঁদের পায়ের শিরায় এক ধরনের সমস্যা দেখা যায়। কিছু ক্ষেত্রে পায়ের শিরা ফুলে গিয়ে গাঢ় নীলচে রঙের রেখা চামড়ার উপরে ফুটে ওঠে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই রোগকে বলা হয় ভেরিকোজ ভেইন।

আলোচনায় চিকিৎসক মানস সাহা

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতের ৭ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। যদিও এই রোগ সম্পর্কে এখনও অনেকগুলি বিষয় বহু মানুষের কাছে সম্পূর্ণ অজানা। কী ভাবে সুত্রপাত হয় ভেরিকোজ ভেইনের? এই রোগের উপসর্গগুলি কী? এই রোগের চিকিৎসাপদ্ধতিই বা কী? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হাজির অ্যাপলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালের চিকিৎসক মানস সাহা।

ভেরিকোজ ভেইন আসলে কী? প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে চিকিৎসক জানালেন, মানবদেহের পায়ের শিরাগুলি দু’টি সারিতে বিভক্ত থাকে। এই দু’টি সারির সংযোগকারী অংশে থাকে আন্তঃশিরা। এই শিরাগুলির মধ্যে একমুখী ভাল্ব রয়েছে। অর্থাৎ এই শিরাগুলির মধ্যে রক্ত একদিকেই প্রবাহিত হতে পারে। রক্ত প্রবাহের সময়ে, কোনও কারণে যদি শিরার মধ্যে থাকা ভাল্ব ঠিক মতো কাজ না করে বা দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন রক্ত বিপরীত দিকে প্রবাহিত হতে শুরু করে। এবং শিরাগুলি ধীরে ধীরে প্রসারিত হতে থাকে। ফলস্বরূপ, রক্তনালীগুলি ফুলে উঠে চামড়া ঠেলে বেরিয়ে আসতে চায়। এই রোগকে বলা হয় ভেরিকোজ ভেইন।

চিকিৎসকদের মতে, সাধারণত ট্রাফিক পুলিশ, রাঁধুনী, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কর্মীরা এই ধরনের রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। কারণ এই ধরনের জীবিকায় পায়ের উপরে অত্যন্ত চাপ পড়ে। ফলত, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে শিরাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলি কী? উত্তরে মানস সাহা জানালেন এই রোগের বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ রয়েছে — পা ফুলে যাওয়া, পায়ে ব্যথা, ক্রমাগত অস্বস্তি, পা ভারী হয়ে যাওয়া, গোড়ালি ফুলে যাওয়া, ত্বকে বাদামি দাগ হওয়া ইত্যাদি। শিরাগুলি ফুলে ওঠার পরে ত্বকের উপরে গাঢ় বেগুনি বা নীল রঙের শিরার আঁকাবাঁকা রেখা দেখা যায়। পরবর্তীকালে পায়ের মাংসপেশিতে টান অনুভব হতে থাকে। এমনকি পায়ের পাতায় শক্ত পিন্ড এবং ইনফেকশন দেখা দেয়। ফলে স্বল্প সময়ের হাঁটা-চলাতেও সমস্যা হয়। চিকিৎসকে উপদেশ, উপরের এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনও একটি দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ভেরিকোজ ভেইন-এর চিকিৎসা কী? উত্তরে চিকিৎসক মানস সাহা জানালেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই রোগের তেমন কোনও উপসর্গ থাকে না। এবং বাহ্যিক উপসর্গ না থাকলে চিকিৎসারও প্রয়োজন নেই। কিন্তু উপসর্গ পরিলক্ষিত হলে অবশ্যই চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। এক সময়ে সার্জারি বা থার্মো অ্যাবলেশন পদ্ধতিতে ভেরিকোজ ভেইনের চিকিৎসা করা হতো। এই দুই চিকিৎসা পদ্ধতিই অত্যন্ত যন্ত্রনাদায়ক। তীব্র অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ করে এই সার্জারিগুলি করতে হয়। তবে দেখা গিয়েছে, সার্জারি পরবর্তী সময়ে ফের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন বহু রোগী। অনেক ক্ষেত্রে রোগটি আবার ফিরে এসেছে। পাশাপাশি, সার্জারির খরচও অনেক। অথচ এই সমস্যাগুলি থাকা সত্ত্বেও কিছু বছর আগে পর্যন্ত এই পদ্ধতিকেই বেছে নিতেন চিকিৎসক ও রোগীরা। বলা ভাল, উপায়ও ছিল না।

তবে উন্নত হয়েছে চিকিৎসাবিজ্ঞান। চিকিৎসক মানস সাহা জানাচ্ছেন, “বর্তমানে ভেরিকোজ ভেইনের চিকিৎসায় আমরা সার্জারি করি না বললেই চলে। কোনও অ্যানেস্থেসিয়া নয়, কোনও কাটা-ছেঁড়া নেই, রক্তপাত নেই। একজন রোগীর ভেরিকোজের ভেইনের পর্যালোচনা করে একটি বিশেষ আঠা আক্রান্ত শিরাগুলির মধ্যে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়। কিছুদিনের মধ্যেই সেই শিরাগুলির কারণে তৈরি হওয়া গাঢ় চিহ্ন ত্বকের উপর থেকে ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায়।”

অল্প সময়েই এই অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিটি জনপ্রিয় হয়েছে। কারণ এই পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ যন্ত্রণাহীন। এবং দেখা গিয়েছে, এই পদ্ধতিটি প্রয়োগের পরে রোগটির পুনরায় ফিরে আসার সম্ভাবনাও অত্যন্ত কম। অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালে এই ধরনের অত্যাধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতি রয়েছে। যার ফলে গত কয়েক বছরে ভেরিকোজ ভেইনে আক্রান্ত বহু রোগী জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পেরেছেন।

এই প্রতিবেদনটি অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।

Health Apollo Hospital

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy