গত বছরের জুন মাসে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে জ্বরে ভুগে মৃত্যু হয়েছিল ৩২ জন শিশুর। ‘লিচু ভাইরাসে’ আক্রান্ত হয়ে শিশুদের মৃত্যু ঘটেছিল বলে সেই সময়ে গুজব রটে যায় মালদহ জেলা জুড়ে। ফলে লিচু চাষিদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল। সেই গুজব যাতে এবারও না ছড়ায়, তার জন্য আগাম সর্তকতা নিতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
শনিবার দিল্লি থেকে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের তিন জনের প্রতিনিধি দল জেলায় আসেন। এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ মেডিক্যাল কলেজের সভাকক্ষে রোগী কল্যাণ সমিতি, কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষদের নিয়ে ঘণ্টা খানেক ধরে বৈঠক করেন তাঁরা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায়, সুপার তথা সহ অধ্যক্ষ মহম্মদ আব্দুর রশিদ-সহ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। বৈঠক শেষে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বিভিন্ন ওর্য়াড পরিদর্শন করেন তাঁরা।
রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “গত বছরের গুজব থেকে ছড়ানো সমস্যা যাতে এবার না হয়, তার জন্য রাজ্য সরকার তৎপর। দিল্লি থেকে তিন জনের একটি দল এসেছেন। তাঁরা তিন মাস ধরে জেলায় থাকবেন। ঘুরে দেখবেন ওই এলাকাগুলিও। একই সঙ্গে তাঁরা মানুষকে সচেতনও করবেন।”
মালদহ জেলার কালিয়াচক ১ ও ৩ ব্লকে সব থেকে বেশি পরিমাণ লিচু চাষ হয়। গত বছর লিচুর মরসুমে অথাৎ জুন মাসের শেষ সপ্তাহের দিকে কালিয়াচক ১ ব্লক থেকে অজানা জ্বর নিয়ে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হয় ৭৫ জন শিশু। অসুস্থ শিশুদের জন্য শিশু বিভাগেই একটি পৃথক ওর্য়াড খুলে চিকিৎসা চলছিল। এই ঘটনায় ৩২ জন শিশুর মৃত্যু হলে জেলায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে ‘লিচু ভাইরাস’-এর জন্য দায়ী। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দলও মালদহে আসেন। রোগের কারণ জানতে আক্রান্ত শিশুদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পুনেতে পাঠানো হয়। যদিও এখনও সেই রোগের কারণ জানা যায়নি।
তবে লিচু নিয়ে গুজব ছড়িয়ে যাওয়ায় গত বছর লিচু চাষিদের প্রায় কোটি টাকার উপর আর্থিক ক্ষতি হয়। সেই গুজব যাতে এ বারও ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য দিল্লির ডিজিস্ট কন্ট্রোল সেন্টারের তিন প্রতিনিধি রাজেশ যাদব, অমল পাটিল ও গণেশ লাখডিয়া এখন এই জেলায় থাকবেন। কালিয়াচকের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে শিশুদের খাবার, জল প্রভৃতি বিষয় খতিয়ে দেখবেন তাঁরা।
একই সঙ্গে ওই প্রতিনিধি দল সপ্তাহ খানেক পর থেকে গ্রামবাসীর মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে বিশেষ শিবিরও করবেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy