মাওবাদী দমন অভিযানে বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় নিয়ে সুকমার সাম্প্রতিক ঘটনা ফের প্রশ্ন তুলে দিল। কালকের হামলার পরে প্রচুর আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র লুঠ করেছে মাওবাদীরা। তা নিয়েও চিন্তায় পড়েছে সিআরপি।
ছত্তীসগঢ়ের দক্ষিণ বস্তার জেলায় গত কালের হামলায় নিহত হন দুই অফিসার-সহ ১৪ জন সিআরপি জওয়ান। আহত হন ১২ জন। আজ বায়ুসেনার কপ্টারে হতাহতদের প্রথমে বস্তার জেলার সদর শহর জগদলপুরে আনা হয়। পরে নিহতদের দেহ ও কয়েক জন গুরুতর জখম জওয়ানকে রায়পুরে নিয়ে আসা হয়। নিহত প্রতি জওয়ানের পরিবারকে ৩৮ লক্ষ ও আহত জওয়ানদের ৬৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আজ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ছত্তীসগঢ়ে যান রাজনাথ। তিনি জানান, আহতদের অবস্থা স্থিতিশীল। তাঁদের মনোবলও অটুট।
ঘটনার তদন্তে নেমে বিভিন্ন বাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবকেই সুকমার ঘটনার জন্য দায়ী করছেন সিআরপি কর্তাদের একাংশ। সিআরপি সূত্রে খবর, সুকমার ওই এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময়ে চালকহীন ড্রোন বিমান ব্যবহার করা হয়েছিল। ড্রোনের সাহায্যে পুরো এলাকার ছবি দেখতে পায় বাহিনী। কোথাও বড় ধরনের নড়াচড়া হলেই বাহিনীর সংশ্লিষ্ট অংশকে সতর্ক করা হয়। কিন্তু এই অভিযানের মাঝপথেই ড্রোন বিমান ফিরে গিয়েছিল। আবার অভিযানে বায়ুসেনার কপ্টারের সাহায্যও ঠিক মতো পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন তাঁরা। কেন এই পদক্ষেপ করা হয়েছিল তা নিয়ে অবশ্য এখনও কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন সিআরপি কর্তারা। বাহিনী সূত্রে খবর, গত কাল বাহিনীর যে অংশ আক্রান্ত হয় তাদের রেডিও অপারেটরও প্রাণ হারান। ফলে, রেডিও-র মাধ্যমে বাহিনীর অন্য অংশগুলিকে দ্রুত সতর্কও করা যায়নি।
গত কালের হামলার পরে বেশ কিছু আধুনিক অস্ত্র লুঠ করেছে মাওবাদীরা। তার মধ্যে রয়েছে প্রায় ৫০টি অ্যাসল্ট কালাশনিকভ রাইফেল, এসএলআর, ইনস্যাস এবং প্রচুর গোলাবারুদ। লুঠ হয়েছে বেশ কিছু গ্রেনেড ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটও। এই অস্ত্রশস্ত্র মাওবাদীদের হাতে পড়ায় সিআরপি নেতৃত্বের চিন্তা বেড়েছে।
গোয়েন্দাদের দাবি, সুকমার ওই এলাকায় কিছু দিন ধরেই বস্তারের স্থানীয় নেতাদের গতিবিধির খবর আসছিল। অনেক মাওবাদীর আত্মসমর্পণ ও গ্রেফতারির ফলে ওই নেতারা আতঙ্কিত ছিলেন। সে জন্যই বড় হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। হামলার পিছনে মাওবাদীদের দণ্ডকারণ্য বিশেষ এলাকা কমিটির সম্পাদক রামান্নার হাত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy