বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও তাঁর আইনমন্ত্রী সোমনাথ ভারতী কত টাকা খরচ করেছেন, তা জানাতে ওঁদের নোটিস দিল দিল্লি হাইকোর্ট।
কেজরিওয়াল সরকারের আজ এক মাস পূর্ণ হয়েছে। এই এক মাসে দিল্লি সরকার কেমন কাজ করেছে, তা যাচাই করতে গত কাল একটি সমীক্ষা চালায় এবিপি-নিয়েলসেন। ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৫৫% দিল্লিবাসী মেনে নিয়েছেন, আম আদমি পার্টির (আপ) কাজকর্ম সন্তোষজনক। যদিও প্রায় সমসংখ্যক মানুষ মনে করছেন, আইনমন্ত্রী সোমনাথের কারণে দলের ভাবমূর্তি ভাল রকম ধাক্কা খেয়েছে। আবার ৪০% দিল্লিবাসীর মতে, সোমনাথ ঠিকই করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে ধর্নায় বসায় কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে সমালোচনায় মুখর হয়েছে বিভিন্ন শিবির। নাম না-করে আপ নেতৃত্বের ওই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সমীক্ষাও বলছে, অর্ধেক দিল্লিবাসী মুখ্যমন্ত্রীর ধর্না-যাত্রা মানতে পারছেন না। এর প্রভাব পড়েছে সমর্থনের প্রশ্নেও। সমীক্ষা অনুযায়ী, এ মুহূর্তে দিল্লিতে লোকসভা ভোট হলে ৫১% লোক আপকে ভোট দেবে, যা বিধানসভায় দলের প্রাপ্ত ভোটের হারের চেয়ে প্রায় ১৩% কম। তবে আপ নেতা গোপাল রাইয়ের দাবি, “এর আগেও সমীক্ষার ফলাফল আপের পক্ষে আসেনি। কিন্তু জনতা সব ভুল প্রমাণিত করেছে। এ বারও তাই হবে।”
সমীক্ষায় যখন কিছুটা হলেও জনসমর্থনে ধস নামার প্রবণতা, তখন ফের নতুন বিতর্কে জড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সতীর্থ। বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে তাঁরা যথাক্রমে চার ও পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন বলে নির্বাচন কমিশনে হলফনামা দিয়েছিলেন কেজরিওয়াল ও সোমনাথ। কমিশনের নিয়মানুযায়ী, দিল্লির একটি বিধানসভা কেন্দ্রপিছু সর্ব্বোচ্চ ১৪ লক্ষ টাকা খরচ করতে পারেন এক জন প্রার্থী। কিন্তু বিজেপি নেতা বিজেন্দ্র গুপ্ত ও আরতি মেহেরা দিল্লি হাইকোর্টে অভিযোগ করেছেন, আপের ওই দুই নেতার দেওয়া তথ্য ঠিক নয়। অভিযোগকারীদের কৌঁসুলি সত্যপাল জৈন আজ আদালতকে জানান, যন্তরমন্তরে গত ২৩ নভেম্বর দলীয় একটি সভা আয়োজনে ৩৯ লক্ষ টাকা খরচ করেছিল আপ। সভায় কেজরিওয়াল, সোমনাথ ও আর এক দলীয় প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন। সত্যপালের কথায়, “অর্থাৎ মাথাপিছু ১৩ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এই হিসেব ওঁরা দেখাননি। মানে, কমিশনের আইন ভেঙেছেন।”
এবং এই যুক্তিতে আগামী ছ’বছরের জন্য তাঁদের প্রার্থীপদে নিষেধাজ্ঞা জারির আর্জি জানানো হয়েছে। যার ভিত্তিতে কেজরিওয়াল-সোমনাথের বক্তব্য জানতে চেয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।
অন্য দিকে পনেরো দিনের সময়সীমা ধার্য করলেও এক মাসের মাথাতেও জন লোকপাল বিলের খসড়া চূড়ান্ত করতে পারল না আপ সরকার। আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে জানানো হয়েছে, বিলটির খসড়া আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে পেশ হবে। তবে মহিলা সুরক্ষার ব্যাপারে বিশেষ কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মহিলা সুরক্ষা নিশ্চিত করাটা কেজরিওয়ালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যেই ছিল। এ জন্য প্রয়োজনে কম্যান্ডো বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। দিল্লি সরকারের সমস্ত অস্থায়ী কর্মীকে স্থায়ীকরণের প্রতিশ্রুতি পূরণের দাবিও ইতিমধ্যে উঠে পড়েছে। কী ভাবে তা সম্ভব, সেটা খতিয়ে দেখতে গড়া হচ্ছে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy