ছত্তীসগঢ়ের রেশন দুর্নীতিতে এ বার নাম জড়াল রাজ্যের দুই শীর্ষ পুলিশ কর্তার। রাজ্য পুলিশের বর্তমান ডিজি মুকেশ গুপ্ত এবং নারায়ণপুরের পুলিশ সুপার রজনেশ সিংহের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে আর্থিক অপরাধ দমন শাখা (ইওডব্লিউ)। আর্থিক অপরাধ দমন শাখার সুপার ইন্দিরা কল্যাণ সাংবাদিকদের জানান, ওই দুই পুলিশ কর্তা এই পিডিএস কেলেঙ্কারির (রেশন দুর্নীতি) তদন্ত করতে গিয়ে অবৈধ ভাবে অনেকের ফোনে আড়ি পেতেছেন। বহু ক্ষেত্রে জাল বা পুরনো নথিও দেখিয়েছেন। এমনকি আড়িপাতার তারিখও সরকারি খাতায় পিছিয়ে দেখানো হয়েছে।
ওই দুই পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধেই ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে সরকারি কর্মচারী হিসেবে আইন অমান্য করা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ভুয়ো নথি পেশ, আদালতের রেকর্ড জাল করা, জাল প্রমাণ দেখানো ইত্যাদি। রাজ্যের বর্তমান কংগ্রেস সরকারের অভিযোগ, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহকে বাঁচাতেই এই দুই পুলিশ কর্তা অবৈধ ভাবে ফোনে আড়ি পাতার কাজ করেছিলেন। অপরাধ দমন শাখার একটি সূত্র জানাচ্ছে, কম করে ১২ থেকে ১৫ জনের ফোন নম্বর তাঁদের কাছে রয়েছে, বিনা অনুমতিতে যাঁদের
ফোনে আড়ি পাতা হয়। যদিও ওই নম্বর কাদের, বা এই মামলার তদন্তের সঙ্গে তাঁরা কী ভাবে যুক্ত, তা নিয়ে তদন্তকারীরা মুখ খোলেননি।
২০১৫ সালে রাজ্যে বিজেপি সরকারের আমলে রেশন কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসে। তৎকালীন বিরোধী দল কংগ্রেস অভিযোগ করেছিল, রেশনের বরাদ্দ চাল নিয়ে দুর্নীতি করেছে তৎকালীন বিজেপি সরকার। সেই দুর্নীতির মাথা খোদ মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ। কেলেঙ্কারির তদন্তভার যায় আর্থিক অপরাধ দমন শাখার হাতে। যার তৎকালীন এডিজি ছিলেন বর্তমান রাজ্য পুলিশের ডিজি
মুকেশ গুপ্ত। ওই তদন্তের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রজনেশ সিংহও। তদন্তের সময় একটি ডায়েরি উদ্ধার নিয়ে হইচই হয়,
যাতে ‘ম্যাডাম সিএম’ নামে কারও কথা উল্লেখ ছিল। রমন সিংহকে দুর্নীতি মামলা থেকে আড়াল করতে রাজ্যের
আর্থিক অপরাধ দমন শাখার তৎকালীন দুই শীর্ষ কর্তা মুকেশ গুপ্ত এবং রজনেশ সিংহ অবৈধ ভাবে নানা চেষ্টা করছেন বলে তখন অভিযোগ তুলেছিল বিরোধী কংগ্রেস। কিন্তু বিষয়টি তখন ধামাচাপা পড়ে যায়।
ডিসেম্বরে বিধানসভা ভোটে জিতে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। নতুন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল ফের এই তদন্তে গতি আনতে রাজ্য পুলিশের সিট গঠন করেন জানুয়ারিতে। তার পরেই অবৈধ ভাবে ফোনে আড়ি পাতার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy