প্রতীকী ছবি।
কাশ্মীরের তরুণ সেনা লেফটেন্যান্ট উমর ফায়াজের মৃত্যু যেন আরও তাতিয়ে দিল কাশ্মীরি যুবক-যুবতীদের। জঙ্গিদের বন্দুকের নলকে যেন পাল্টা চোখ রাঙিয়ে প্রায় ২০০০ যুবক-যুবতী পুলিশে যোগ দেওয়ার জন্য শেষ পরীক্ষায় নামলেন কাশ্মীরের বখ্শী স্টেডিয়ামে। শনিবার।
প্রশাসন সূত্রে খবর, উপত্যকায় পুলিশের চাকরির জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। ৬৯৮টি সাব-ইন্সপেক্টর পদের জন্য ৬৭,২১৭টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ৩৫,৭২২ জন আবেদন করেছেন কাশ্মীর থেকে এবং ৩১,৪৯৬ জন জম্মু থেকে। এর মধ্যে থেকেই ফিজিক্যাল ফিটনেসের চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ হয়েছেন ২০০০ জন। বখ্শী স্টেডিয়ামে শনিবার সেই পরীক্ষাই হয়ে গেল।
কাশ্মীরি যুবকরা যাতে সেনা ও পুলিশে ভর্তি না হন, প্রতিনিয়তই জঙ্গিরা শাসিয়ে যাচ্ছে। নানা রকম ভিডিও প্রচার করে যুবকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সন্ত্রাসবাদকে কড়া চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এ বার ময়দানে নেমে এসেছেন কাশ্মীরি যুবকরা। এক প্রশাসনিক আধিকারিকের কথায়, যে বিষয়টি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, তা হল সামাজিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে মেয়েরা যে ভাবে পুলিশ ও সেনায় ভর্তি হওয়ার জন্য এগিয়ে আসছেন, তা নজিরবিহীন।
আরও পড়ুন: উত্তাপ বাড়ল দু’দেশের, পাক গোলায় নিহত দুই
শনিবারের দৃশ্য কাশ্মীরের দুটো মুখ মনে করিয়ে দিচ্ছে। এক দিকে দেখা যায়, অশান্ত কাশ্মীরে নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে পাথর ছুড়ছেন এক দল কাশ্মীরি যুবক। সম্প্রতি সেই তালিকায় আসতে শুরু করেছেন মহিলারাও। কিন্তু সেই কাশ্মীরেই যুবক-যুবতীরা আবার সেনা ও পুলিশে ভর্তি হওয়ার জন্য লাইন দিচ্ছেন!
শ্রীনগর থেকে পুলিশে যোগ দিতে আসা যেমন এক মহিলা প্রার্থী নুসরত জান জানিয়েছেন, তিনি সেই ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছেন কী ভাবে সন্ত্রাসবাদীরা কাশ্মীরকে অশান্ত করে রেখেছে। বিশেষ করে মহিলাদের উপর অত্যাচারের কথা বলেন তিনি। তাই তাঁর ইচ্ছা পুলিশে যোগ দিয়ে মহিলাদের সেই অত্যাচারের হাত থেকে মুক্ত করা। আরও এক গ্র্যাজুয়েট প্রার্থী মহম্মদ রফিক ভাট জানান, জঙ্গিদের চোখ রাঙানি থেকে উপত্যকাকে মুক্ত করতে চান। তাঁর মতে, জঙ্গিদের মুখোমুখি হতে ভয় পাই না। তাদের সঙ্গে লড়তে এবং সমাজ থেকে এই রোগকে নিশ্চিহ্ন করতে পুলিশে যোগ দিতে চাই।
কয়েক দিন আগেই বিয়েবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে তরুণ সেনা অফিসার উমর ফায়াজকে নৃশংস ভাবে খুন করে ফেলে দিয়ে যায় জঙ্গিরা। সেই সঙ্গে হুমকি দিয়ে যায়, এ বার থেকে যে সব কাশ্মীরি যুবক-যুবতীরা সেনা বা পুলিশে যোগ দেওয়ার কথা ভাববেন, তাঁদেরও এই হাল হবে। উমরের মৃত্যুর ঠিক দু’দিন পরেই যে ভাবে জঙ্গিদের শাসানিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পুলিশে ভর্তি হওয়ার জন্য এত আবেদনপত্র জনা পড়ল তা সত্যিই নজিরবিহীন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy