E-Paper

বিলকিস কাণ্ডে ৯ অভিযুক্ত গ্রামছাড়া

বছর দু’য়েক আগে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ওই ১১ জনকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাত সরকার। যার বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন বিলকিস।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩৬
bilkis bano.

—প্রতীকী চিত্র।

বন্ধ দরজার বাইরে তালা ঝুলছে। বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে এক জন পুলিশকর্মী।

গুজরাতের দাহোদ জেলায় পাশাপাশি দুই গ্রাম। রাধিকাপুর আর সিংহভাড়। বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় ১১ জন অভিযুক্তের বাড়ি এই দুই গ্রামেই। তবে তাদের মধ্যে বেশির ভাগই এখন গ্রামে নেই। তারা কোথায়, মুখ খুলছেন না কেউই। কারও বাড়িতে ঝুলছে তালা, কারও আবার বাড়িতে রয়েছেন শুধু বাবা-মা। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে গ্রাম ছেড়েছে কেউ কেউ।

বছর দু’য়েক আগে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ওই ১১ জনকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাত সরকার। যার বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন বিলকিস। গত সোমবার সুপ্রিম কোর্ট গুজরাত সরকারের ওই নির্দেশ বাতিল বলে ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে ওই ১১ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ধর্ষককে আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যেই জেলে ফেরার নির্দেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সোমবার রায় ঘোষণার পর পরই একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা রাধিকাপুর এবং সিংহভাড় গ্রামে ঢুঁ মেরেছিলেন। তবে সেখানে গিয়ে তাঁরা খোঁজ পাননি কারও। ওই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, মোট ১১ জন অভিযুক্তের মধ্যে অন্তত ৯ জন আপাতত ‘নিখোঁজ’।

তবে অভিযুক্তেরা না থাকলেও তাদের পরিবারের লোক জন রয়েছেন। রাধিকাপুরের দীর্ঘ দিনের বাসিন্দা আখম্বাভাই চতুরভাই রাভাল যেমন। ৮৭ বছরের রাভাল এই গণধর্ষণ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত গোবিন্দ নাইয়ের (৫৫) বাবা। রাভালদের কাঁচা বাড়ির পাশেই গোবিন্দের পাকা বাড়ি। তাতে তালা ঝুলছে। ছেলে কোনও দোষ করতে পারে না বলে
দাবি রাভালের।

তাঁর বক্তব্য, কংগ্রেস তাঁর ছেলেকে ফাঁসিয়েছে। গোবিন্দ নির্দোষ। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা হিন্দু ধর্মাবলম্বী পরিবার। এ সব অপরাধ আমরা করতেই পারি না।’’ গোবিন্দ এক সপ্তাহ আগে বাড়ি ছেড়েছে বলে দাবি তাঁর বাবার। তবে গ্রামবাসীদের একাংশ বলছেন, সোমবার রায় ঘোষণার আগে পর্যন্ত এই অভিযুক্তদের প্রায় সকলে গ্রামেই ছিল। গোবিন্দও। রাভালের এক ভাই, যশবন্ত নাই-ও এই গণধর্ষণ-কাণ্ডে আর এক অভিযুক্ত। সে-ও নির্দোষ বলে দাবি করেছেন রাভাল।

গোবিন্দ একা নয়। তার মতোই রাধেশ্যাম শাহ, প্রদীপ মোধিয়া, রাজুভাই সোনি, সৈলেশ ভট্টা, মিতেশ ভট্ট, কেশরভাই ভোহানিয়ারও খোঁজ মেলেনি গ্রামে। রমেশ চন্দনা নামে আর এক অভিযুক্ত এখন বেশির ভাগ সময় গোধরায় থাকে বলে জানালেন গ্রামবাসীদের একাংশ। ফোন ধরেনি সে।

তার জামাইয়ের বক্তব্য, রমেশ এখন কথা বলার অবস্থায় নেই। আর এক অভিযুক্ত বিপিনচন্দ্র জোশী পরিবারের সঙ্গে বরোদায় থাকে। রাধিকাপুর বা সিংহভাড়ে এখনও যারা থাকে, তাদের পরিজনেরা মুখে বলছেন দীর্ঘ দিন ধরেই এরা কেউই গ্রামে থাকে না। তবে স্থানীয় দোকানদারদের বক্তব্য অবশ্য পুরোপুরি আলাদা। অভিযুক্তদের পরিবারের লোকেরা ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার ভয়েই গা ঢাকা দিয়েছে অনেকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bilkis Bano Supreme Court Gujarat High Court

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy