—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ঠাকুমা লেখাপড়া জানেন না, টাকার হিসাবও বোঝেন না। কৌশলে তাই তাঁর কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়ে নিত খুদে নাতি-নাতনিরা। বৃদ্ধা পরে বুঝতে পারতেন, সেই সঙ্গে আরও তীব্র হয়ে উঠত তাঁর মনের বাসনা। লেখা আর পড়া শিখতে চাইতেন তিনি। ৯২ বছর বয়সে এসে সেই বাসনা পূর্ণ হল। খুদে খুদে ছেলেমেয়েদের সঙ্গেই স্কুলে গেলেন তিনি। শিখলেন টাকার হিসাবও।
উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলশহরের বাসিন্দা সালিমা খান। ১৯৩১ সালে জন্মেছিলেন তিনি। মাত্র ১৪ বছর বয়সে ভারত স্বাধীন হওয়ারও দু’বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। সালিমা যে গ্রামে থাকতেন, সেখানে তাঁর ছোটবেলায় কোনও স্কুল ছিল না। লেখাপড়া শেখার সুযোগ পাননি তিনি। কী ভাবে লিখতে হয়, কী ভাবে পড়তে হয়, তা জানাই ছিল সালিমার আজীবনের স্বপ্ন।
মাস ছয়েক আগে নাতির স্ত্রীর সঙ্গে স্কুলে যান বৃদ্ধা। সেখানে তাঁর সহপাঠী ছিল তাঁর চেয়ে ৮০ বছরের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা। সালিমাকে দেখে অন্য বয়স্ক মহিলারাও অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তাঁরাও অনেকে স্কুলমুখী হয়েছেন। বৃদ্ধা ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত গুনছেন— এমন একটি ভিডিয়ো সম্প্রতি ভাইরাল হয় সমাজমাধ্যমে। তার পরেই তিনি খবরের শিরোনামে উঠে আসেন। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘আমার নাতি-নাতনিরা চালাকি করে আমার কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়ে নিত। আমি টাকার হিসাব বুঝতাম না। সে সব দিন চলে গিয়েছে।’’
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, ভারতের স্বাক্ষরতার হার ৭৩ শতাংশ। অর্থাৎ, ২৭ শতাংশ নাগরিক নাম লিখতেই জানেন না। সালিমা ইচ্ছাশক্তিকে কুর্নিশ জানিয়েছেন তাঁর স্কুলের শিক্ষিকারা। প্রধান শিক্ষিকা জানান, বৃদ্ধাকে বকাঝকা করতে ইতস্তত করতেন শিক্ষিকারা। তবে তাঁর লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ সকলের মন জয় করে নিয়েছে। বৃদ্ধার দেখাদেখি তাঁর গ্রামের আরও ২৫ জন বয়স্ক মহিলা স্কুলে ভর্তি হয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy