Advertisement
১৭ মে ২০২৪

ক্ষমা চেয়েও সংসদে ছাড় পাচ্ছেন না মান

সংসদের কোন প্রবেশ পথ দিয়ে ভিতরে ঢুকতে হয়, কোথায় বিশেষ পাহারা থাকে, কোথায় তল্লাশি করা হয়, কী ভাবে প্রশ্নোত্তর পর্ব হয়— এ সবের ভিডিও তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন আপের কৌতুক শিল্পী-সাংসদ ভগবন্ত মান।

সংসদ থেকে বেরিয়ে আসছেন ‘ভিডিও-কৌতুক’ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়া আপ সাংসদ ভগবন্ত মান। ছবি: প্রেম সিংহ।

সংসদ থেকে বেরিয়ে আসছেন ‘ভিডিও-কৌতুক’ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়া আপ সাংসদ ভগবন্ত মান। ছবি: প্রেম সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৬ ০৩:৪০
Share: Save:

সংসদের কোন প্রবেশ পথ দিয়ে ভিতরে ঢুকতে হয়, কোথায় বিশেষ পাহারা থাকে, কোথায় তল্লাশি করা হয়, কী ভাবে প্রশ্নোত্তর পর্ব হয়— এ সবের ভিডিও তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন আপের কৌতুক শিল্পী-সাংসদ ভগবন্ত মান। দাবি করেছিলেন, কী ভাবে সংসদে কাজকর্ম হয়, সাধারণ মানুষকে তা জানাতেই এই ‘মজা’ করেছিলেন তিনি। কিন্তু নিরাপত্তা এজেন্সি থেকে সরকার— কোনও পক্ষই বিষয়টিকে আদৌও কৌতুক হিসেবে নিচ্ছে না। অনেক রাজনৈতিক দলই বিষয়টি নিয়ে সরব হওয়ায় দিল্লি পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আজ মানের বিরুদ্ধে সংসদ মার্গ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক-দু’দিনের মধ্যেই মানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের ভিডিও পোস্ট করার পিছনে অন্তর্নিহিত কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ। পঞ্জাবের ওই সাংসদের সঙ্গে অতীতে কোনও চরমপন্থী সংগঠনের যোগাযোগ ছিল কিনা, তা-ও দেখা হচ্ছে।

গত কাল পর্যন্ত বিষয়টি এমন কিছু গুরুতর নয় বলে দাবি করেছিলেন মান। কিন্তু আজ সংসদের উভয় কক্ষে বিষয়টি নিয়ে অন্য দলের সাংসদেরা সরব হওয়ায় চাপে পড়ে যান তিনি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে স্পিকারের কাছে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে চান তিনি। কিন্তু স্পিকার সুমিত্রা মহাজন জানিয়ে দেন, ‘‘বিষয়টি সংবেদনশীল। তাই ক্ষমা চেয়েই পার পাবেন না মান।’’ আর গুজরাতে গিয়ে দলিত রাজনীতিতে ব্যস্ত অরবিন্দ কেজরীবালকে মানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি ‘‘পরে উত্তর দেব’’ বলেই কাশতে শুরু করেন। তাঁর কাশির দমকে দ্বিতীয় প্রশ্ন করার সুযোগ পায়নি সংবাদ মাধ্যম। তবে পঞ্জাব ভোটের আগে কেজরীবালের দলকে অস্বস্তিতে জন্য ফেলার সুযোগ ছাড়তে চাইছে না বিজেপি শিবির। রাজ্যসভায় সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নকভি বলেন, ‘‘সংসদে ইতিমধ্যেই একবার হামলা হয়ে গিয়েছে। তার পরে কী ভাবে একজন সাংসদ এই কাজ করতে পারেন? গোটা সংসদের এক যোগে এর প্রতিবাদ করা উচিত।’’ কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা বা সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরিরাও মনে করছেন, সংসদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও সাংসদেরই এ ভাবে খেলা করার অধিকার নেই।

ভিডিও বিতর্কে জেরবার মানকে আজ নতুন করে অস্বস্তিতে ফেলেছেন তাঁরই দলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ হরিন্দ্র খালসা। তাঁর অভিযোগ, প্রায়শই মদ্যপান করে সংসদে আসেন ভগবন্ত মান। আর মানের পাশেই তাঁর আসন হওয়ায় সারাক্ষণ মদের গন্ধ নাকে আসে। খালসার কথায়, ‘‘পুজো-পাঠ করে সংসদে এসে মদের গন্ধে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় আমার।’’ ভিডিও-র ঘোলা জলে তাই আজ স্পিকারের কাছে মানের মদ্যপান নিয়ে অভিযোগ করার পাশাপাশি নিজের আসন মানের পাশ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যও আবেদন জানিয়েছেন খালসা। মান আজ অবশ্য মদ খেয়ে সংসদে আসার অভিযোগটি একেবারেই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajya Sabha Bhagwant Mann apology
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE