E-Paper

বাম না বিজেপি, লোকসভা নির্বাচনে কার বিরুদ্ধে লড়বেন ঠিক করুন রাহুল, মন্তব্য কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর

এলডিএফের শরিক হিসেবে ওয়েনাড় লোকসভা আসনটি লড়ে সিপিআই। গত বার সিপিআইয়ের প্রার্থীকেই চার লক্ষের বেশি ভোটে হারিয়েছিলেন রাহুল।

 সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:১২
vijayan

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ছবি: পিটিআই।

প্রশ্ন উঠেছিল পাঁচ বছর আগেই। এ বার তিন রাজ্যের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের বিপর্যয়ের পরে রাহুল গান্ধীর লোকসভা আসনকে ঘিরে চাপ বাড়াচ্ছে সিপিএম। লোকসভা নির্বাচনে বাম না বিজেপি, কার বিরুদ্ধে লড়াই করা জরুরি, তা কংগ্রেসকেই ঠিক করতে হবে বলে মন্তব্য করলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তাঁর মন্তব্যের ইঙ্গিত স্পষ্টতই রাহুলের দিকে।

কেরলের ওয়েনাড় কেন্দ্র থেকে এখন লোকসভায় সাংসদ রাহুল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে একটি মন্তব্যকে ঘিরে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁর সাংসদ-পদ খারিজ হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টে স্থগিতাদেশ পাওয়ায় আবার তিনি সাংসদ-পদে বহাল হয়েছেন। তেলঙ্গানায় বিধানসভা ভোটের প্রচার শেষ করেই রাহুল কয়েক দিন আগে গিয়েছিলেন ওয়েনাড়ে। গোটা কেরলেই কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের মুখোমুখি লড়াই। এই প্রেক্ষিতেই সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন বলেছেন, ‘‘কেরলে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের সমঝোতা হবে না, সেটা জানা কথাই। কিন্তু এই লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি না বাম, কার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বেশি জরুরি, সেটা কংগ্রেসকেই ঠিক করতে হবে।’’ রাহুলের প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘যদি উনি আবার ওয়েনাড়েই দাঁড়ান, তা হলে আমাদের অবশ্যই প্রার্থী থাকবে তাঁর বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে সেটা খুব ভাল হবে কি না, কংগ্রেসকে ভেবে দেখতে হবে।’’

এলডিএফের শরিক হিসেবে ওয়েনাড় লোকসভা আসনটি লড়ে সিপিআই। গত বার সিপিআইয়ের প্রার্থীকেই চার লক্ষের বেশি ভোটে হারিয়েছিলেন রাহুল। আগামী ২০২৪ সালে রাহুল যাতে ফের ওয়েনাড়ে না প্রার্থী হন, তার জন্য এআইসিসি নেতৃত্বকে অনুরোধ করার বিষয়ে কথা হয়েছিল গত সেপ্টেম্বরে সিপিআইয়ের জাতীয় পরিষদের বৈঠকে। ঠিক হয়েছিল, সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজাই এই ব্যাপারে কংগ্রেসের শীর্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন। রাহুলের আসন নিয়ে এ বার সিপিআইয়ের পাশাপাশি চাপ বাড়াচ্ছে সিপিএমও। তবে বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কথা বলবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

বিজেপির মোকাবিলায় কংগ্রেসের নীতি ও কৌশল নিয়ে সিপিএমের যে অংশের মধ্যে বরাবরই সংশয় ছিল, তিন রাজ্যে ভোটের ফলের পরে সেই স্বর আরও জোরালো হতে শুরু করেছে। ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, লোকসভা ভোটে ওই রাজ্যে তাঁরা একাই লড়তে চান। বিরোধী জোটের মধ্যে কংগ্রেসের ‘দাদাগিরি’র মনোভাবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীও। তেমনই কেরলের বিজয়ন বলেছেন, ‘‘মধ্যপ্রদেশে কমল নাথ ভোটের আগে যে সব কথা বলেছেন, তাতে মনে হয়েছে কংগ্রেস গেরুয়া শিবিরের ‘বি টিম’ হয়ে নেমেছে!’’ আসন ভাগের প্রশ্নেও কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব প্রকাশ্যে কড়া কথা বলেছিলেন আসন সমঝোতা না হওয়ায়। তার পরেও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করেননি। এক একটা রাজ্যের পরিস্থিতি অবশ্যই আলাদা। সব রাজ্যে অভিন্ন জোট হবে না, ঠিক কথা। কিন্তু এই রকম মনোভাব নিয়ে চললে বিরোধী জোট দানা বাঁধবে কী করে!’’

এমতাবস্থায় আগামী ৯-১০ ডিসেম্বর দিল্লিতে পলিটব্যুরোর বৈঠকেই গোটা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে চাইছেন সিপিএম নেতৃত্ব।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pinarayi Vijayan CPM Rahul Gandhi Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy